somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আঁধারালাপন:নিজের সাথে,তোমার সাথে,আঁধারের সাথে

২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







আঁধারালাপনঃ নিজের সাথে

দূর আকাশে যখন নক্ষত্রের ধংসযজ্ঞ চলছিলো তখন আমার আঁধার ঘরে মোমের প্রদীপও নিভু নিভু প্রায়। দখিন জানালার এলোমেলো বাতাসে মোমের আলো এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছিলো, সেদিকে লক্ষ্য করে দেয়ালে ঘটে যাওয়া আমার ছায়ার ক্রমাগত পরিবর্তনগুলো উপভোগ করছিলাম। কিন্তু হঠাৎই.......যা ভাবছিলাম! দমকা এক বাতাসে আলো নিভে যাওয়া মাত্রই আমার ছায়াগুলোর অপমৃত্যু ঘটল আর আমিও আকন্ঠ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যাই ক্রমাগত।

আমি ভেবেছিলাম বেঁচে থেকে লাভ নেই কিন্তু আমার দ্বিতীয় আমি প্রতিবাদ করে বলে ওঠে বেঁচে থেকে অনেকেরই ঢের লাভ আছে তাই তুমিও বাঁচবে তবে ধীরে ঠিক যেমন মোমের প্রদীপ বড় ধীরে জ্বলে কিংবা দূর নক্ষত্রের মতো যে কিনা নিজে ধংস হয়েও আলোর জন্ম দিয়ে যায় আপন প্রতিভায় নিসর্গের মতো।

আমি দূর থেকে সময়ের প্রপেলার ধ্বনি শুনতে পাই যেন আমাকে তাড়া দিচ্ছে শিঘ্রই রৌদ্রময় ওই এলুমিনিয়াম আকাশে মিশে যেতে।আমি প্রস্তুত হই কিন্তু সহসাই শীতার্ত জনতাগভীর নগরীকে দেখে অল্পক্ষন থমকে দাঁড়াই.....দেরি হচ্ছে, তাই সকল দুরুহ বস্তু সময়ের অধীনতা মেনে নেয়।

এই নীরব শীতের অন্ধকার রাতে নক্ষত্রদের স্থির সমাসীন পরিষদ থেকে কোন আদেশ আসে না কিংবা কোন উপদেশ...কঠিন এই রুক্ষ সময়ের যাঁতাকলে আমি অস্থিরপ্রায় তবু কোথায় যেন উত্তেজনা খুঁজে পাই,মনে হয় এই আঁধার গ্লসিয়ারের যুগের মতনই নীরব।ভালোবেসে হাত বাড়ালাম এই অন্ধকারের হাতকে ধরতে যেন চেনা কোন এক নারী অনেক দিনের অদর্শনা আজ ধরা দিতে চাচ্ছে ইন্দ্রলোকের নিগূঢ় গোলকধাঁধায়।

হঠাৎ চৈতন্য ভেঙ্গে গেলে বুঝি আলেয়াশিখা আজো আমাকে নিয়মিত জ্বালাচ্ছে পুরনো সেই আলোর আঁধারে।



আঁধারালাপন:তোমার সাথে

যদিও জানি তোমার রাত্রি দিন একসময় শেষ হয়ে যাবে কালের আবর্তনে কিন্তু তা আমার আগে নয়।হ্যা আমি তোমার অনেক আগেই চলে যাবো,তারপর সমুদ্র গান গাইবে বহুদিন ঠিক যেমন এখন গাইছে সৃষ্টির আদিকাল থেকেই,আকাশের নক্ষত্ররাও বারংবার পুনর্জন্ম নেবে ঠিক যেমন এখন নিচ্ছে।শুধু তোমার পিপাসা ফুরবেনা,তোমার রাত্রি দিন পৃথিবীর মানুষের ভিড়ে মিশে যাবে যেমন ধুলো বালি মিশে যায়।

মানুষের ভিড় তোমাকে কোনদিকে নিয়ে গেছে খুঁজে পাইনি সে পথ,সমুদ্রের জলে দেহ ধুয়ে খুঁজে ফিরেছি সে পথ।কত দেহ ছুঁয়ে গেলো এ হাতে,কত অপেক্ষাতে মলিন এই চক্ষু ছিঁড়ে গেছে,নক্ষত্রের তলে পার করেছি রাত্রি দিন,তবু অধরা সেই তৃণ পাইনি।

জানিনা তোমার রক্তের ভালোবাসা দিয়েছ কারে,শুধু বুঝেছি আমারে চাইবে না তুমি কোনদিন কোন জন্মে! মাঝরাতে ওই দূর নক্ষত্রের কাছে তাই কোন প্রশ্ন রাখি না,এলোমেলো বাতাসে বিশৃঙ্খল এইসব দিন রাত্রি কেটে যায়।

জানি তুমি আসো না তবু আমার এই নক্ষত্রের মাঝে বারেবার শুধু তোমার পায়ের শব্দ কানে ভেসে আসে।শব্দেরা মিলিয়ে যায় রাত্রির ঢেউয়ের মতো ঢেউয়ের উপরে।আলো অন্ধকারে এই দূর সমুদ্রের জলে আমি হেঁটে যাই পায়ে পায়ে তবু শেষ হয় না পথ চলার পিপাসা,নক্ষত্র সরে যায় রাত্রির অন্ধকারে,আমিও হারিয়ে যাই পাহাড় নদীর পাড়ে পৃথিবীর গহবরে।



আঁধারালাপন:আঁধারের সাথে


প্রেম! কবেই ছিঁড়ে ফেঁড়ে গেছে,যদিও কখনও বা বীণার মতো বেজে ওঠে হৃদয়ের বন তখনই উত্তরের বাতাস এসে বিদীর্ণ শাখার শব্দে অসুস্থ ডানার কোলাহলে ঘটে মৃত্যু।আলেয়ার মতো আলো নিয়ে আসে প্রেম,আমারে ভেঙ্গে দিতে চায় বারংবার কিন্তু আমি ডুবে গিয়েও আবার বীর যোদ্ধার মতো ভেসে উঠি পশ্চিম সাগরে।

সাম্রাজ্য,রাজ্য,সিংহাসন এইসব রোমাঞ্চ অতিক্রম হলে আমি পাণ্ডুর পাতার মতো ক্লান্ত হয়ে শিশিরে শিশিরে রক্তের অশ্রু ঢেলে দিয়ে মৃত্যুর মতন শান্তির ঘুমে ডুবে যাই।জানি আবার জেগে উঠতে হবে তাই রাতের গুহার বুকে ধোঁয়ার চামর তুলে হৃদয়ে আগুন শক্তি সঞ্চয় করি।

চোখের তারার পরে সময়ের আলো চুমো দিয়ে যায় নক্ষত্রের আকাশে।সমস্ত স্মৃতির হাড়ের মাঠে খুঁজে যাই আজো যারে দেখি নাই তারে ছায়ার মতন দেয়ালে ধরে রাখার বাসনায়।মৃতেরা আবার জাগছে সেই ভুলের ব্যাথা মুছে দেবার অভিপ্রায়ে,আমি তাই স্বাগত জানাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পরি।

বিকেলের শেষ আলো ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে আসে,একা একা অনেক দূর হেঁটে ক্লান্ত প্রায় আমি বুঝতে পারি এভাবেই আমি হাজার হাজার পথ ব্যস্ত পায়ে ভ্রমণ করছি ক্রমাগত।


সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১২ রাত ১২:০৫
১৪০টি মন্তব্য ১৪০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×