somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এশিয়ান না ইন্ডিয়ান হাইওয়ে?

২৬ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নোমান বিন আরমান : হাসিনার সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকেই কথা বলার ইস্যু তৈরি হচ্ছে স্রোতের মতো। কেউ যদি বলে জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত বা আন্দোলনী ইস্যু তৈরিই ৯ মাস বয়েসী সরকারের মোটা দাগের সাফর‌্য; তাহলে খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। টিফা, ট্রানজিট, করিডোর, টিপাইমুখ প্রকল্প, দ্রব্যমূল্য, তেল-গ্যাস, সরকার গঠন, পার্বত্য এলাকা ইত্যাদি বিষয়ে একটির সাথে একটি বিতর্কের বিষয় সৃষ্টি করা হয়েছে। ইস্যু তৈরি হয়েছে। http://www.numanbinarmansyl.blogspot.com

তবে, ভালো খবর ছিলো এ সবের কোনোটির সাথে প্রধানমন্ত্রীসূলভ আচরণের দ্বন্দ্ব ঘটেনি হাসিনার। যে যাই বলুন হাসিনা এইসব ক্ষেত্রে নিজেকে অন্তত প্রধানমন্ত্রী রাখতে পেরেছেন। কোনো বিতর্কে কথা বলেননি। পর্যবেক্ষণ করেছেন। মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্য-যুক্তি নীরবে শুনেছেন। নিজের কোনো সিদ্ধান্তের কথা এসব বিষয়ে জুড়ে দিয়ে বিতর্ককে উস্কে দেননি। দেননি কারণ প্রধানমন্ত্রী ভালোই জানতেন, আগুণে ফুঁ দিয়ে লাভ নেই। আগুন বাড়বে শুধু।
কিন্তু সেদিন কী হলো কে জানে, প্রধানমন্ত্রী আর প্রধানমন্ত্রী থাকলেন না। দলীয় নেতাই হয়ে গেলেন তিনি। দলমত নির্বিশেষে দেশের কল্যাণও স্বার্থ রক্ষা যার প্রতিশ্র“ত দায়িত্ব, সাংবিধানিক কর্তব্য, সংসদে দাঁড়িয়ে, সেই তিনি বললেন, আমরা জুজুর ভয়ে দরোজা বন্ধ করে বসে থাকবো না। এশিয়ান হাইওয়েতে বাংলাদেশ যুক্ত হবেই!
প্রধানমন্ত্রী এমন প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য দিলেন যখন এশিয়া হাইওয়েতে যুক্ত হওয়া না হওয়া নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছে, মহলবিশেষ ও চিহ্নিত বুদ্ধিব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এর ফযিলত বয়ান করা হচ্ছে। তখন প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নাগরিকমাত্র সকলকেই আহত করেছে। দেশের মানুষকে অপমান করেছে।
হাসিনার এমন তড়িৎ সিদ্ধান্তে স্বভাবতইে মনে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কী এমন অসুবিধা ছিলো, বিষয়টি সম্পর্কে সংসদে এতো দ্রুত তার বক্তব্য দিতে হলো। হাসিনা এখন দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ক্ষমতায় বসেছিলেন ৯৬ এ। ছিলেন পাঁচ বছর। তারপরে ক্ষমতায় বসেন খালেদা।
তখন প্রায়ই তারমুখে মুখে শোনা যেতো ‘চাপ আছে’। ভিন্ন রাষ্ট্রের চাপে থাকতে হতো তাকে। চাপেই অনেক সিদ্ধান্ত নিতেন। আবার চাপেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতেন।
বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোর প্রধানদের এমন চাপ দেয়ার লোকের, দুঃখিত, রাষ্ট্রের অভাব নেই। মহাজোট সরকারও কি তবে কারো চাপে আছেন। বলছেন না কেনো।
দেশের নিজেরই হাজারটা সমস্যা রয়েছে। জঙ্গি তো এই সরকারের প্রধান শত্র“। ক্ষমতায় বসার পর থেকেই জঙ্গি খুঁজে হয়রান সরকারের লোকেরা। তাদের তৎপরায় মনে হচ্ছে জঙ্গি ছাড়া এদেশে মানুষ খুব কমই আছে। তো এই জঙ্গিদের যখন কিছু করা যাচ্ছে না এখনো তখন মরকার কীভাবে অন্য চিন্তায় মন দেয়।
সরকার এশিয়ান হাইওয়ে নামে আমাদের য গিলাতে চাচ্ছে, তা তো ইন্ডিয়া বা ভারতই। তবে কি এশিয়া বলতে কেবল ইন্ডিয়াকেই বুঝায়। দিন বদলের সবক বুঝি ভূগোগও শিখে ফেলেছে। না হয়, বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াকে যাবার রাস্তাকে ইশিয়ান হাইওয়ে বলা হচ্ছে কেনো।
এশিযান হাইওয়ের এই বিষয়টি তো অনেক আগেই প্রত্যাখ্যান হয়েছে, যা এসেছিলো, ট্রানজিট ও করিডোর নামে। জনগণ ভারত > বাংলাদেশ > ভারত কোনো কিছুইÑ হোক তা এশিয়ান হাইওয়ে, কানেক্টিভিটি বা ট্রানজিট নামে; সমর্থন করে না। ভারতের সাথে সবরকমের করিডোরের বিপক্ষে বাংলাদেশের আজন্ম অবস্থান। এটি সরকারকে বুঝতে হবে।
কিন্তু তা না করে বারবার নাম বদল করে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা হচ্ছে। নাম বদল হয়েছে ট্রানজিটের। এখন বলা হচ্ছে এশিয়ান হাইওয়ে। তবে নাম বদল হলেও একটি জায়গায় কিন্তু এরা দারুণ মিল রাখছেন। সেটিকে কখনো পরিবর্তন করছেন না। হোক ট্রানজিট বা কানেক্টিভিটি; ফযিলত হিসাবে বয়ান করা হচ্ছে, বড় রাষ্ট্রের সাথে ‘বন্ধুত্ব’ সোয়াব হিসাবে দেখানো হচ্ছে বেহিসাব অর্থপ্রাপ্তি, অবকাঠামোর উন্নতি, সমৃদ্ধি ....।
কিন্তু এটি বলছেন না এতো ফযিলতের অধিকারী ভারত কেনো আমাদের করতে চাচ্ছে, বলছেন না; সোয়াব হিসাবে বেহিসাব অর্থ দিয়ে কী পরিমাণে পূণ্য তারা চাইবে। আর এই হাইওয়ে দিয়ে যদি ইন্ডিয়ান জঙ্গিগুলো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে কিংবা বাংলাদেশকে নিশানা করে সরকার কীভাবে তার মোকাবেলা করবে।
এশিয়ান হাইওয়ের সাথে বাংলাদেশও যুক্ত হোক, সহজ সুলভে বাংলাদেশের মানুষ সড়ক পথে এশিয়ান রোড়ে বিশ্বসড়কে যাতায়াত করুক তা সব নাগরিকেরই কাম্য। কিন্তু এই আকাঙ্খাকে কারো ইচ্ছের কাছে দলিত হতে দেয়ার অধিকার কারো নেই। এতে যদি জুজুই হয় বা ভারত হয়, তবু তাকে ভয় কতে হবে।

প্রথম প্রকাশ : কালকণ্ঠ ২০০৯।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×