দীর্ঘ তিন বছর পর জেরুজালেমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে পুনরায় সরসরি শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে।
Published : 15 Aug 2013, 12:29 PM
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী এই বৈঠক বুধবার শেষ হয়েছে বলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়পক্ষই নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই বৈঠককে ‘দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে এ সম্পর্কিত কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।
পুনরায় শান্তি আলোচনা শুরুর চুক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনের ২৬ বন্দিকে ইসরায়েল মুক্তি দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই এই আলোচনা শুরু হয়।
শান্তি আলোচনার কিছু কিছু বিষয় সম্পর্কে জানা গেলেও স্থান, সময় এবং ঠিক কি কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে উভয়পক্ষই কঠোর গোপণীয়তা অবলম্বন করছে। কোনো অগ্রগতি ছাড়া তারা আলোচনা বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নয়।
একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের জেরিকো শহরে পর্যায়ক্রমে বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে।
তবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত থাকায় শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েই গেছে।
এই বসতি স্থাপনকে কেন্দ্র করেই ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে চলমান সরাসরি শান্তি আলোচনা ভেঙ্গে যায়।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরায়েল আরো ২ হাজার ইহুদি বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) কর্মকর্তা ইয়াসির আবিদ রাব্বো বলেন, বসতি স্থাপন শান্তি আলোচনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ভয়েস অব প্যালেস্টাইন রেডিওতে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের আচরণের কারণে শান্তি আলোচনা অবশ্যই যেকোনো সময় ভেঙ্গে যাবে।”
বুধবার সংবাদপত্র জেরুজালেম পোস্টে এই আলোচনার সাফল্য সম্পর্কে ‘খুব কম’ আশাবাদী বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
এরআগে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় ২৬ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।
বুধবার প্রথম প্রহরে ইসরায়েল এসব বন্দিকে মুক্তি দেয়।
আলোচনার শর্তানুযায়ী যে ১শ’ চারজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা তারই প্রথম ধাপে মুক্তি পেয়েছে এ ২৬ জন। এদের মধ্যে ১১ জন ফিলিস্তিন পশ্চিমতীরের এবং অপর ১৫ জন গাজার বাসিন্দা।
পশ্চিমতীরে মুক্তিপ্রাপ্তদের স্বাগত জানাতে তাদের আত্মীয়স্বজনরা ভোররাতে রাজধানী রামালার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ প্রাঙ্গণে জড়ো হয়। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে, আনন্দ মুখরিত ¯োগান আর অশ্রুতে মুক্তিপ্রাপ্তদের বরণ করে নেন তারা।
উচুঁ একটি মঞ্চে পশ্চিমতীরের ১১ ফিলিস্তিনের প্রত্যেককে দুই গালে চুমু খেয়ে নিজ ভূমে স্বাগত জানান আব্বাস। হাতে হাত ধরে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে জয়সূচক চিহ্ন প্রদর্শন করেন তিনি। এ সময় শত শত ক্যামেরার ফ্লাশ জ্বলে উঠে।
“আমাদের ভাইয়েরা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকে মুক্তির আলোতে ফিরে আসায় আমরা আমাদের নিজেদের এবং আমাদের পরিবারের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা তাদের এবং আপনাদের জানাচ্ছি বাকীরাও মুক্তির পথে আছে,” উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন আব্বাস।
অপরদিকে, মুক্তিপ্রাপ্ত অপর ১৫ ফিলিস্তিনি গাজায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আত্মীয়স্বজন গুলি ও পটকা ফুটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে।