somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রী বা গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী এবার কাকে ভূমিদস্যু বলবেন...সাংসদ কামাল মজুমদারের দখলবাজি হাসপাতালের জায়গায় পোশাক কারখানা!

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাংসদ কামাল মজুমদারের দখলবাজি
হাসপাতালের জায়গায় পোশাক কারখানা!

রাজধানীর মিরপুরে দুস্থ ও গরিবদের চিকিৎসাকেন্দ্র আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার হাসপাতালের পাঁচ কাঠা জায়গা দখল করে নিয়েছেন সরকারদলীয় সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার। হাসপাতালের রেডিও থেরাপি বিভাগ চালুর জন্য বর্তমান সরকারই জায়গাটি বরাদ্দ দিয়েছে। ঢাকা-১৫ আসনের এই সাংসদ জায়গাটি দখল করে পোশাক কারখানার সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন।
মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনে প্রধান সড়কের পাশে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ দেওয়া এই জায়গায় নাভিলা ফ্যাশন লিমিটেডের সাইনবোর্ড লাগিয়ে সীমানা দেয়াল নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। জায়গা পাহারা দিচ্ছে তাঁর ক্যাডাররা।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, জনসেবামূলক কাজের জন্য সব নিয়মকানুন মেনে বাজারমূল্যের দ্বিগুণ টাকায় আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার হাসপাতালকে পাঁচ কাঠা জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এলাকার সাংসদ কোনোভাবেই এই জায়গা দখলে নিতে পারেন না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র নিয়ে জায়গাটি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ তা দখল করে নেওয়ায় তারা এখন অসহায়।
হাসপাতালসংলগ্ন একটি বাড়ির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালের জায়গা দখল করে সাংসদ নিজেকে সফল মনে করছেন। স্থানীয় একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর একজন সাংসদের এমন নগ্ন দখলবাজি আর দেখা যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে সাংসদ কামাল মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৌখিকভাবে জায়গাটি বরাদ্দ দেবে বলেছিল। তিনি বলেন, ‘আহ্ছানিয়া মিশন জায়গা পাবে, আর এলাকার এমপি পাবে না, তা হতে পারে না।’
তবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, সাংসদের পক্ষে এই জায়গা বরাদ্দ চেয়ে কোনো আবেদনই করা হয়নি।
যেভাবে শুরু: মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের এম-১ সি নম্বর প্লটে ২০০১ সালে ৪২ শয্যার আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার নিরাময় ও চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে ওঠে। ক্যানসার চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত জরুরি হলেও পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে হাসপাতালে রেডিও থেরাপি যন্ত্র (কোবাল্ট ৬০) স্থাপন করা যাচ্ছিল না। এই যন্ত্র থেকে বের হওয়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ মানুষ ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের যন্ত্র সাধারণত ভবনের বেজমেন্টে সিসার পুরু পাতের ভেতর বসাতে হয়।
প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকায় গত বছরের ২৩ মে হাসপাতালের সামনে পরিত্যক্তভাবে থাকা পাঁচ কাঠা আয়তনের জমিটি (এম-১/বি) প্লট হিসেবে বরাদ্দের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে আহ্ছানিয়া মিশন। ওই বছরের ৫ জুলাই গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ কমিটির ৩৯তম সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয় পূর্ণাঙ্গ প্লট হিসেবে ওই প্লটের জন্য আবার আবেদন করতে হবে। ১ সেপ্টেম্বর আবার আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের কাছেও আবেদন করা হয়। ৪ অক্টোবর গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৭১তম বোর্ডসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ৯ নভেম্বর কর্তৃপক্ষের পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাওয়া গেলে আহ্ছানিয়া মিশনকে জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। সে অনুযায়ী আবেদন করলে গত ৩ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্মতি জানিয়ে (স্মারক নং ৪৫.১৩৮.০২৯.০৫.০০.০২৮.৯৭) প্লট বরাদ্দের জন্য গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করে।
পরে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ আহ্ছানিয়া মিশনকে বাজারমূল্যের দ্বিগুণ হারে জায়গার দাম পরিশোধ করতে বলে। আহ্ছানিয়া মিশন বাজারমূল্য কাঠাপ্রতি সাত লাখ টাকার দ্বিগুণ ধরে মোট ৭০ লাখ টাকা ১৬ আগস্ট বেসিক ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করে।
জায়গা হস্তান্তরের আগেই দখল: নির্ধারিত দামের দ্বিগুণ টাকা পরিশোধ করার পর চলতি মাসের শুরুতে মিরপুর গৃহসংস্থান বিভাগ-২ কার্যালয়ের স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন জায়গাটি হস্তান্তরের উদ্যোগ নেন। কিন্তু তিনি এলাকায় গিয়ে দেখেন, সেখানে ‘নাভিলা ফ্যাশন লি.’ নামের সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা, ‘বিকল্প বরাদ্দ সূত্রে এই জমির মালিক নাভিলা ফ্যাশন লি.’। নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, ‘সব নিয়মকানুন রক্ষা করে আমরা আহ্ছানিয়া মিশনকে সেবামূলক কাজের জন্য জায়গাটি বরাদ্দ দিয়েছি। আমরা শুধু বলতে পারি, নাভিলা ফ্যাশনের নামে কোনো বরাদ্দই নেই।’
কামাল মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ২০০০ সালে তিনি মিরপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ কাঠা জায়গা বরাদ্দের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন। ওই সময় সরকারি মূল্য পরিশোধও করেন। এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র তাঁর কাছে আছে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু তাঁকে সেই জায়গা দেওয়া হয়নি। এর বিকল্প হিসেবে তিনি ১৪ নম্বর সেকশনের জায়গাটি দখলে নিয়েছেন।
একটি সেবামূলক হাসপাতালকে দেওয়া জায়গা এভাবে দখল করতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই সাংসদ বলেন, ‘আহ্ছানিয়া মিশন জায়গাটি হাসপাতালের কাজে লাগাবে না। “হীড বাংলাদেশ” নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেবে বলে শুনেছি।’ এ জন্য আপনি দখল করলেন? জবাবে সাংসদ বলেন, প্লটটি বরাদ্দ পেতে তিনি মৌখিক সম্মতি পেয়েছেন। লিখিতও পেয়ে যাবেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলম বলেন, ইতিমধ্যে হাসপাতালের জন্য রেডিও থেরাপি যন্ত্র আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জায়গাটি বিক্রির মতো অনৈতিক কোনো চিন্তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাথায় নেই। তিনি বলেন, অত্যন্ত প্রয়োজন হওয়ায় হাসপাতালের জন্য জায়গাটির বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এর দখল না পাওয়া দুঃখজনক এবং দুস্থ রোগীদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
কামাল মজুমদার প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘ইতিপূর্বে এর পাশে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের এক বিঘা জায়গা প্রমোদ মানকিন (সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী) হীড বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু আপনারা (প্রথম আলো) এ বিষয়ে কিছুই লেখেননি।’
প্রসঙ্গত, প্রথম আলো তখন এ বিষয়ে প্রতিবেদন ছেপেছিল। কামাল মজুমদারকে এ তথ্য জানানো হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বরং বলেন, ‘আমার এলাকায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ যাকে-তাকে জায়গা দেবে, এটা আমি হতে দিতে পারি না।’ তিনি বলেন, আহ্ছানিয়া মিশনকে পল্লবীসহ মিরপুরের অনেক স্থানে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তারা সেগুলোতে ব্যবসা করছে। এ বিষয়ে প্রথম আলোর লেখা উচিত।
ঘটনাস্থল এখন: গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ১৪ নম্বরে ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতে জড়ো করা হয়েছে সীমানা দেয়াল নির্মাণের ইট। সীমানা দেয়ালের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গেছে।
ওই জায়গায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির একজন নেতার সহায়তায় কয়েক মাস আগে ছয়টি টিনশেড স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, সপ্তাহ খানেক আগে কামাল মজুমদারের একান্ত সহকারী মোজাম্মেলসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী সেখানে গিয়ে ভাড়াটেদের উঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ভাড়াটেদের অনুরোধে এ মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
খবরটি প্রথম আলোর..
Click This Link
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×