somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বাকি বিল্লাহ
আমার মাথায় একটু প্রবলেম আছে| জাতে মাতাল তালে ঠিক টাইপের| আমার মধ্যে কোন গুনও নাই| মাকাল ফলও বলা যায় না-মাকালের চেহারা সুন্দর হয়! আমার মধ্যে ডুয়েল পার্সোনালিটি নাই-এক মুখে দুই কথা কই না| নিজে আতলামি করি কিন্তু আতেল পুলাগো দেখবার পারি না|

চেয়ারম্যান ও কাজের বুয়া

২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাইসব, আপনারা দয়া করে গ্যাঞ্জাম করবেন না। এখন আপনাদের সামনে আমাদের সেই গণ্যমান্য জঘন্য জনাব মদন ভাই ভাষণ দেবেন। সবাই বসে পড়ুন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মদন মিয়া তার নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন। ভাইসব, আমি যদি নির্বাচনে জিততে পারি, তাহলে আমি প্রথমেই আপনাদের জীবনের নিরাপত্তা দান করব। কীভাবে জানেন? এই এলাকার সব পাকা রাস্তাগুলো খুঁড়ে খুঁড়ে কাঁচা রাস্তা করে দেব। কারণ পাকা রাস্তায় প্রতিদিন বড় বড় গাড়ি চলে। আর এই গাড়ির নিচে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ জীবন হারায়। সুতরাং কাঁচা রাস্তায় চলবে গরুর গাড়ি আর মানুষের গাড়ি, যাতে কোন অ্যাকসিডেন্টই হবে না, আর আপনাদেরও জীবন দিতে হবে না। তারপরে আমি এলাকার সব পাকা ব্রিজ ভেঙে সেখানে কলাগাছের ব্রিজ করে দেব। কিসের জন্য জানেন? প্রতিবছর বন্যায় অনেক মানুষ আর গরু জীবন হারায়, কারণ মানুষ যখন বন্যায় আশ্রয় নেয়ার জন্য সেই পাকা ব্রিজগুলোতে উঠে তখন পানিতে ডুবেই সবাই মারা যায়, কিন্তু কলাগাছের যত পানি হবে— ব্রিজ তত উপরে উঠবে। এসব কথা এলাকাবাসীর কাছে ফালতু মনে হলো। ঠিক এমন সময় মদন মিয়া ঘোষণা দিলেন—‘নির্বাচনে জিতলে আমি আমার যা কিছু আছে সবই আপনাদের কল্যাণে ব্যয় করব এবং এলাকাকে ডিজিটাল এলাকায় পরিণত করব। আপনারা আমাকে ভোট দিন। এ কথায় এলাকাবাসীর মনে আশার সঞ্চার হলো। নির্বাচনে এলাকাবাসী ভোট দিয়ে তাকে চেয়ারম্যান বানাল। চেয়ারম্যানের স্ত্রী গত বছর মারা গেছেন। একটি কাজের বুয়া আর যুবতী কন্যা নিয়েই তার সংসার। পরদিন চেয়ারম্যান বুয়াকে বলল—নির্বাচনের আগে আমি এলাকাবাসীকে সবকিছু দিয়ে দেব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, কেউ কিছু চাইলে তুমি কিছুই দেবে না। এই বলে সে অফিসে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর এলাকার মজিদ এসে বলল—
‘চেয়ারম্যান সাব বাড়িতে আছেন নাকি? ও চেয়ারম্যান সাব : বুয়া বলল—চেয়ারম্যান বাড়িতে নেই, কী লাগবে কও। মফিজ বলল—বাজারে যেতে হবে তাই...। মফিজের কথা কেড়ে নিয়ে বুয়া বলল—তাতে চেয়ারম্যানের কাছে কি? মফিজ বলল—না, মানে চেয়ারম্যানের সাইকেলটা যদি একটু দিতেন। বুয়া বলল—এতসব ভঙ্গি করে লাভ নেই। চেয়ারম্যান সাইকেল দিতে মানা করেছেন। মফিজ রাগে গজগজ করে বলতে লাগল—‘কী, এত বড় কথা, নির্বাচন আসুক দেখব শালায় কেমনে চেয়ারম্যান হয়।’ চেয়ারম্যান সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে বুয়াকে জিজ্ঞেস করল—কেউ কি এসেছিল? বুয়া বলল—এলাকার মফিজ এসে আপনার সাইকেলটা চেয়েছিল, বাজারে যাবে বলে। আমি বলে দিয়েছি সাইকেল দেয়া যাবে না। আপনার মানা আছে। চেয়ারম্যান বলল—‘তুই করছিস কী, আমাকে তো ডুবাবি। বলবি— সাইকেল চলে না। ব্রেক ফেল, স্পোক ভাঙা, টিউব লিক, ইত্যাদি...। পরের দিন চেয়ারম্যান অফিসে যাওয়ার পর এলাকার মন্টু এসে বলল—চেয়ারম্যান বাড়িতে আছেন? বুয়া বলল—সে বাড়িতে নেই, কী লাগবে কও। মন্টু বলল— আমার একটি হালের গরুর পা ভেঙে গেছে, তাই আইছিলাম চেয়ারম্যানের গরুটার জন্য। বুয়া বলল—ওসব সুর লইয়েন না। গরু চলতে পারে না, গরুর স্পোক ভাঙা, গরুর ব্রেক ফেল, গরুতে পাম নাই...। মন্টু বলল—এসব কি কইলা?... চেয়ারম্যান গরু দিব না, তাই কও। নির্বাচন আসুক, হারামজাদায় জিতে কীভাবে তা দেখব। এই বলে সে বাড়ি ফিরে গেল। রাতে চেয়ারম্যান বাড়িতে এলে বুয়া সব খুলে বলে। চেয়ারম্যান কপালে হাত দিয়ে বলল—আরে শয়তান তুই তো আমার মান ইজ্জত খোয়াবি। তারপর বুয়াকে বোঝাতে লাগল—‘কেউ যদি গরু নিতে আসে তুই বলবি, গরুর পিঠে ফোঁড়া, পা খোঁড়া, নাকে ঘা, মুখে ব্যথা, অন্ধ, চলতে পারে না। পরদিন সে অফিসে চলে যায়। পাশের এলাকার মজনু ঘটক চেয়ারম্যানের হবু বেয়াইকে নিয়ে তার বাড়িতে আসে চেয়ারম্যানের মেয়েকে দেখার জন্য। উল্লেখ্য, বিয়ের কথা আগেই চেয়ারম্যানের সঙ্গে পাকাপোক্ত হয়ে গিয়েছিল। ঘটকের ডাকাডাকিতে বুয়া বলল—চেয়ারম্যান সাব বাড়িতে নেই, সে অফিসে চলে গেছে। কী লাগবে আমারে কন। কাজের বুয়ার কথা শুনে ঘটক আমতা আমতা করে বলল—
‘না মানে, চেয়ারম্যান সাবের মেয়ে.., অমনি ঘটকের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বুয়া বলল—‘চেয়ারম্যানের মেয়ে ভালো না, তার পিঠে ফোঁড়া, পা খোঁড়া, মুখে ব্যথা, নাকে ঘা, অন্ধ, চলতে পারে না। একথা শুনে তারা বিয়ে ভেঙে দিয়ে অন্যত্র চলে যান। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। রাতে চেয়ারম্যান বাড়িতে এলে বুয়া বলতে শুরু করে— চেয়ারম্যান সাব, এলাকার লোকজন একেবারে মাথায় উঠে গেছে, একদিন সাইকেল, একদিন গরু, আবার এখন আপনার মেয়েকে নিতে আসছিল। চেয়ারম্যান জিজ্ঞেস করল—কারা আমার মেয়েকে নিতে এসেছিল? বুয়া বলল— দু’জন লোক, তারা কিছু বলার আগেই আমি বলে দিয়েছি, ‘চেয়ারম্যানের মেয়ের পিঠে ফোঁড়া, পা খোঁড়া, মুখে ঘা, নাকে ব্যথা, অন্ধ, চলতে পারে না।’
চেয়ারম্যানের মনে পড়ল আজকে তার হবু বেয়াই আর মজনু ঘটকের আসার কথা ছিল, মেয়ে দেখার জন্য।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×