৩। পাইলট
ইতোমধ্যে মাহবুবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে এবং ওর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা পাওয়া গেছে আশা করি।আমাদের ক্লাস টিচার শফি স্যারের কথাও বলেছি।স্যারের একটা অভ্যাস ছিল,উনি নিয়মিত ক্লাসে বই দেখে দেখে পড়তে বলতেন।যাদের ওই সময়ে মোটামুটি অক্ষরজ্ঞান হয়ে গেছে,তাদের জন্য এটা একটা আকর্ষণীয় ব্যাপার ছিল।কারন ঠিক মত পড়তে পারলে স্যার অন্য ছাত্রদের কাছে বলতেন,এই ছেলে বড় হয়ে পাইলট হবে।পাইলট হতে কার না ভাল লাগে বলেন।আজ অব্দি কত ছেলেকে যে স্যার পাইলট হিসেবে রিক্রুট দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই।তবে স্যারের কোন ছাত্র সত্যি সত্যি পাইলট হতে পেরেছিল কিনা আমি ঘোরতর সন্ধিহান।
যাহোক,স্যার একদিন মাহবুবকে পাইলট বানাতে চাইলেন।বললেন,"মাহাবুব,পড় তো দেখি।"মাহবুব পড়ল মহাবিপাকে।ও কিছুই বলতে পারছিল না।স্যার ওকে বলতে লাগলেন,"পড় পড়,পারবি পারবি।"মাহবুব তাও চুপ।অবশেষে স্যার বললেন,"ঠিক আছে,আমার সাথে বল..ইঁদুর অ্যাম্নে ছানা অ্যাম্নে দুটি অ্যাম্নে,কাঁটে অ্যাম্নে কুটি অ্যাম্নে কুটি অ্যাম্নে।"এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল,স্যারের একটা ভয়ঙ্কর মুদ্রাদোষ ছিল।স্যার প্রচণ্ড আমতা আমতা করে পড়া বলতেন এবং কোনকিছু দেখে পড়তে গেলেই অ্যাম্নে অ্যাম্নে আরম্ভ করতেন।
এরপর মাহবুব যেকাজটা করল সেটা আমি এ জনমে ভুলব না।মাহবুব স্যারকে নকল করে বলা শুরু করল,"ইঁদুর অ্যাম্নে ছানা অ্যাম্নে দুটি অ্যাম্নে,কাঁটে অ্যাম্নে কুটি অ্যাম্নে কুটি অ্যাম্নে।"
স্যার কিছুক্ষন মূর্তির মত স্তম্ভিত হয়ে রইলেন।তারপর স্কুলের দপ্তরীকে বললেন,"হেড স্যারকে ডাক।আর শোন,জোড়া বেত দিয়া যাইস।"
আমৃত্যু শৈশব চাই ১
আমৃত্যু শৈশব চাই ২