somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা, শুধু তোমায় ভালবাসি বলব না...

১২ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ মা দিবস।
আসেন ভাইয়া-আপুরা, সুন্দর সুন্দর মনমোহিত স্ট্যাটাস-লেখা দিয়ে মায়ের প্রতি ভালবাসা জাহির করি।
যেই মহিলাকে আমরা দিনে চব্বিশটা ঘন্টা জ্বালাই, তাঁকে উপলক্ষ বানিয়ে ফেসবুকের- ব্লগের হোমপেজ ভর্তি করে ফেলি।
তারপরই চলেন, গিয়ে আরও একটু জ্বালাইয়া আসি উনাকে। অমান্য করি উনার কথা।
করলেই কি! দায়িত্ব তো স্ট্যাটাস দিয়েই শেষ করে দিসি...

মাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিব, অবশ্যই খুবই ভালো- সন্দেহ নাই।
কিন্তু সারাদিন উনার কথা অমান্য করে, কথার পিঠে কথা বলে, কষ্ট দিয়ে তারপর সন্ধ্যায় ফেসবুকে বসে ‘মা’কে ফেসবুকের একদিনের হুজুগ বানাব-এটা কী খুব ভাল?
মাকে নিয়ে দুটা লাইন লিখলেই কি উনার প্রতি আমার কর্তব্য শেষ হয়ে যাবে?
আপনিই ভেবে দেখুন, কাল কয়টা কথা শুনেছেন উনার?
কয়জনই বা মাকে জড়িয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘মা, কেমন আছ তুমি?’
কিংবা, ‘মা, তুমি কিছু খাইস?’

শুকনা কথায় চিড়া ভেজে না।
তেমনি কোন কাজ ছাড়া শুকনা স্ট্যাটাসেও মায়ের মন ভিজবে না।

আজকের কতটা স্ট্যাটাস কতজনের মা দেখবেন, জানিনা।
আর দেখলেও কতজন খুশি হবেন, তাও জানিনা।
আমার মা তো এই স্ট্যাটাস-লেখা দেখে উল্টা লেখাপড়া বাদ দিয়ে এই ফেসবুকের- ব্লগের সংসারে বসে থাকার জন্য ঝেড়ে বকা দিবেন। (এটা সিউর!)
তারপর হয়ত আমাদের কথা শোনার অনীহা দেখে চুপচাপ চলে যাবেন তিনি তাঁর সংসার সামলাতে।
ওটা ফেসবুক সংসার না।
সেই সংসারে- যাতে আমার অতীত লেখা ছিল।
বর্তমান লেখা আছে।
এমনকি ভবিষ্যতও...

এবার কিছু ক্ষুদ্র নমুনা দেখুন আমি কিভাবে আমার মাকে অলটাইম জ্বালাতে থাকি...

-আবীর, সারাদিন বাইরের ফার্স্ট ফুড খেওনা। এমনেই মোটা হয়ে যাইতেছ। সেমাই বানিয়েছি আজকে। খেয়ে যাও।
-আম্মা, সময় নাই। (মনে মনেঃ আসলে ইচ্ছে নাই। কই হীরাঝিলের গ্রিল, কই আম্মার সেমাই)
-আবীর, ভাত খেয়ে পানি খাও নাই। এটা ঠিক না। পানি খেয়ে আস।
-ধুর, আম্মা যাও তো। খাব না।
-তুমি সারাদিন কী নিয়ে ল্যাপটপে গুতাগুতি কর। রেখে একটু আমাদের সাথে বস।
-আম্মা, কাজ করতেছি। জরুরি কাজ। (কোন জরুরি কাজ বুঝে নেন...)
-বাবা, সারাদিনে একটু তো পড়তে বসো...
-আম্মা, মেডিকেলে এত পড়তে হয় না। তুমি মেডিকেলের বোঝটা কী বলতো?
-আবীর, এত রাত না জাগলে হয় না? তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়। ভোরে উঠবা।
-সিরিয়াসলি, আম্মা, জ্বালাইয়না তো। তুমি এত বেশি বুঝ কেন?
-এখন তুমি বড় হইস। যাও, মসজিদে যাইয়া নামায পড়।
-আম্মা, টাইম নাইতো। বাসায় পড়ে ফেলি।

আমি অস্বীকার করছি না। হুম। এরকম প্রায়ই করি। আমিও তো আপনাদের মতই। তাই, এটাও জানি, এই ঘটনা শুধু আমার একার না। আর এটাও জানি, এরকম করা ঠিক হচ্ছে না।
তাই ভাবছি, আস্তে আস্তে শুধরাবো।
অলরেডি মায়ের বয়স ৫০ পেরিয়েছে। আর কতদিন মায়ের সাথে থাকতে পারব আল্লাহ জানে।

তাই আসেন, আজকে থেকে মায়ের জন্য একটা ভাল কাজ করি। মনে মনে ঠিক করি, দিনে অন্তত মায়ের পাঁচটা কথা অবশ্যই শুনতে চেষ্টা করব।
শুধু ঠিক করলেই হবেনা। আসেন, সত্যি সত্যি ট্রাই করি।

যদি শুনে থাকেন, তবে আসুন,
এখন স্ট্যাটাস দেই। ব্লগে লেখালেখি করি।

এটাই হবে, আজকের মা দিবসে মায়ের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। ১০০% গ্যারান্টি।
বিশ্বাস না করলে, জিজ্ঞাসা করে দেখেন আপনার মাকে।

মা, মা গো,
শুধু তোমায় ভালবাসি বলব না।
বলব, তোমার সব কথা শোনার চেষ্টা করব।
আজ, কাল, পরশু...
আজীবন।

আমার ডিসশন আমি নিলাম।
আমার কথা আমি বললাম।
শুনতে ইচ্ছে না করলে এড়াইয়া যান।

আমি কাঙ্গাল।
কাঙ্গালের কথা শুনতে হয়না...
কাঙ্গালের কথা বাসি হলে ফলে।

মা দিবস, ২০১৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×