আজকের দিনটা এত সুন্দর কেন !!
ইদানিং হরতালের দিনে পুলিশ রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকান বসতে দেয় না। এজন্য গুল্লুকে অনেকটা দূর হেঁটে যেতে হয়। পনের মিনিট হাঁটার পর গুল্লু একটা চায়ের দোকান পায়। কিন্তু সে আরাম করে চা খেতে পারেনি। চায়ের দোকানের সামনে এক লোক একটা রিকশাওয়ালাকে খুব মারছে। বাংলা সিনেমার গুন্ডাদের মতন খুব মারছে। দূরে গিয়ে দৌড়ে এসে বারবার রিকশাওয়ালার বুকে লাথথি মারছে। রিকশাওয়ালার ঠোট কেটে রক্ত পড়ছে। কেউ রিকশাওয়ালাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে না বরং সবাই দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে। আজকে একটি সুন্দর দিন- তাই গুল্লু গিয়ে লোকটিকে বলল- ভাই আসুন চা খান। আর মারার দরকার নেই। রিকশাওয়ালার শিক্ষ হয়ে গেছে। গুল্লু লোকটিকে হাত ধরে টেনে চায়ের দোকানে নিয়ে আসে। তারপর গুল্লু রিকশাওয়ালাকে ম্যানিব্যাগ বের করে একটা পাঁচ শো টাকার একটা নোট দিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। তারপর ওই লোককে বলল- আজকের দিনটা অনেক সুন্দর, তাই আপনাকে কিছু বললাম না। তা-না হলে আজ আপনার খবর ছিল! লোকটি হা করে তাকিয়ে থাকল গুল্লুর দিকে। লোকটি গুল্লুর চোখ দেখে হয়তো ভয় পেয়েছে।
দুপুর বারোটায় গুল্লু পল্টন মোড়ে এসে দাঁড়ায়। হরতালের দিন এই এলাকায় খুব গেঞ্জাম হয়। গুল্লু রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ভাবছে- হরতাল দিলে কি লাভ হয় বিরোধী দলের ? দরিদ্র দেশে হরতাল হলো অভিশাপ। ঠিক এই সময় গুল্লুর পায়ের কাছে দুই টা কোকটেল বিস্ফোরন হয়। চারিদিক ধোয়ায় ভরে যায়। মানুষজন এলোমেলো ছুটছে। গুল্লু ভেবে পাচ্ছে না সে এখন কি করবে ? কোন দিকে ছুটবে ! গুল্লু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই পুলিশ এসে গুল্লুকে ধরে ফেলে। তারপর টেনে হেচড়ে গাড়িতে তোলে। গুল্লু মনে মনে ভাবে টেনে হেঁচড়ে নেওয়ার কি দরকার- আমাকে বললেই তো আমি খুব সুন্দর করে গাড়িতে গিয়ে বসে পড়ি। গুল্লুকে টেনে হেচড়ে নেওয়ার দৃশ্য টা দু'টা টিভি চ্যানেল ভিডিও করে নিল- হয়তো লাইভ দেখিয়ে থাকতে পারে । গুল্লুকে নিয়ে যাওয়া হল পল্টন থানায়। আগে এখানে ছিল মতিঝিল থানা। এই থানায় আগে গুল্লু একবার এসেছিল।
সেকেন্ড অফিসার গুল্লুকে বললেন- কোনো ধানাই-পানাই করবি না। যা জিজ্ঞেস করবো- ঠিক ঠিক জবাব দিবি। বল- কোকটেল কবে থেকে তৈরি করিস ? গুল্লু চুপ । অফিসার আবার বললেন- আজ কয়টা কোকটেল ডেলিভারী করলি ? তুই কি দলের লোক না বাইরের ? গুল্লুকে চুপ থাকতে দেখে পুলিশ অফিসার বললেন- রুলের ডলা খাওয়ার আগে সব স্বীকার কর। নইলে আজ তুই প্যান্ট নষ্ট করে ফেলবি। গুল্লু শান্ত গলায় বলল- আমাকে এক গ্লাস পানি দেন, পানি খাবো। অফিসার গুল্লুর দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে আছে। গুল্লু পুলিশের কঠিন চোখকে অগ্রাহ্য করল। এই পুলিশ অফিসার গুল্লুর বাবাকে খুব ভালো করে চিনে। কিন্তু গুল্লুকে চিনে না। গুল্লু যদি একবার তার বাবার নাম বলে তাহলে পুলিশ অফিসার গুল্লুকে চা আর কেক খাইয়ে আদর করে বাসায় নামিয়ে দিতে আসবে। কিন্তু গুল্লু তার বাবার নাম বলতে চাচ্ছে না। গুল্লুর বারবার মনে হচ্ছে- আজকের দিনটা এত সুন্দর কেন ? ইদানিং গুল্লুর সময় ভালো যাচ্ছে না। রাস্তায় বের হলেই পুলিশ ধরে।
সন্ধ্যা সাত টায় গুল্লু পল্টন থানা থেকে ছাড়া পায়। তার অনেক ক্ষুধা পায়।সারাদিনে কিছুই খাওয়া হয়নি। সে ঠিক করলো- উত্তরা যাবে হিমির বাসায় । অনেকদিন হিমির সাথে দেখা হয় না। সারা দুনিয়াতে শুধু হিমিই গুল্লুকে অনেক ভালোবাসে। একদম খাটি স্বচ্ছ ভালোবাসা। গুল্লুকে দেখে হিমি অনেক খুশি হয়। হিমি বলে- আমি জানতাম আজ তুমি আসবে। এজন্য আজ আমি নিজের হাতে রান্না করেছি। ইলিশ মাছের ডিম দিয়ে করলা ভাজি, ডাল চচ্চরি, মুরগী ভূনা আর কলমি শাক ভাজি। গুল্লু খুব আরাম করে খায় । হঠাত লোডশেডিং হয়- তখন হিমি গুল্লু কে হাত পাখা দিয়ে বাতাস দিয়ে দেয়। খাওয়া শেষ করে গুল্লু- দুই হাত তুলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল- " হে আল্লাহ, এই অভাগাকে যে এত আদর যত্ন করে খাওয়ালো, তাকে খুশি করো, তার মনের তিনটা ইচ্ছা পূরণ করে দাও। তারপর হিমি দুই মগ চা বানিয়ে, গুল্লুকে নিয়ে ব্যালকনিতে বসে।
রাত এগারোটায় গুল্লু হিমির বাসা থেকে বের হয়। হিমি ছাদে দাঁড়িয়ে গুল্লুর চলে যাওয়া দেখে। হিমির চোখ থেকে দু'ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। গুল্লু একবার হিমিকে বলেছিল- তুমি সব সময় চোখে কাজল দিবে, কপালে টিপ পড়বে আর দুই হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ী পড়বে। এরপর সারা ঢাকা শহরের মেয়ে গুলো- এই কথা কিভাবে যেন জেনে যায়- তারা শুরু করল- কপালে টিপ দেওয়া, চোখে কাজল দেওয়া এবং কাঁচের চুড়ী পরা। কিন্তু বোকা মেয়ে গুলো চোখে হিমির মত কাজল দিতে পারে না । তারা দু'চোখে সমান করে কাজল দিতে পারে না। এক চোখের টা চিকন হয় আরেক চোখের টা মোটা হয়। গুল্লু বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে- এই সময় হঠাত করে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়। গুল্লু বাসের জন্য আর অপেক্ষা না করে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হাঁটতে শুরু করলো। গুন গুন করে গান গাইছে- "জানি আমি তোমায় পাব নিরন্তর/ লোকলোকান্তরে যুগযুগান্তর/ তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই/ কোনো বাধা নাই ভুবনে...
সে রাতে গুল্লু আর বাসায় ফিরতে পারেনি। একটা ট্রাক গুল্লুকে ধাক্কা মেরে ফেলে চলে যায়। ঝুম বৃষ্টির পানিতে সব রক্ত ধুয়ে মুছে যায়। রাস্তার মধ্যে পরে থাকে গুল্লুর লাশ। ঠিক এই সময় হিমি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ভাবে- আজকের দিনটা এত সুন্দর কেন ? ঝুম বৃষ্টির পানি আর হিমির চোখের পানি মিশে একাকার ।
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা
আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো
চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন
One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes
শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন
চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?
চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন