somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার দুর্গম চরাঞ্চলের গত ৪ দিন ধরে দস্যু বাহিনীর হত্যা, অপহরণ, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বনদস্যুদের তান্ডবের ঘটনা অতিরঞ্জিত ও কিছু কিছু মিডিয়ার বাড়াবাড়ি বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার

১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার দুর্গম চরাঞ্চলের গত ৪ দিন ধরে দস্যু বাহিনীর হত্যা, অপহরণ, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বনদস্যুদের তান্ডবের ঘটনা অতিরঞ্জিত ও কিছু কিছু মিডিয়ার বাড়াবাড়ি বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসন। আজ (রোববার) রাতে পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ হাযারী ও জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তারা উভয়েই গত কয়েক দিনে হতাহতের বিষয়ে মিডিয়া পরিবেশিত তথ্যের এখনো কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন।

হাতিয়ার আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর উচ্ছাভিলাষীতার কারণে এই চরগুলো এখন অগ্নিগর্ভ। গত ক’দিনে এই চরগুলোতে দখল পাল্টা দখলের খেলায় এই চরগুলো এখন নিয়ন্ত্রন করছে র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত বনদস্যু বাশার মাঝির স্থলাভিষিক্ত নাসির বাহিনীর হাতে।
মোহাম্মদ আলীর তত্বাবধানে ‘মিডিয়া ড্রামা’ পরিবেশনার ফলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ১০/১৫ জন থেকে ৩৫জন পর্যন্ত মৃত্য এবং দুই শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া ও ধর্ষণের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গতকাল রোববার সরেজমিনে গিয়ে এর কোন অস্তিত পাওয়াা যায়নি। এদিকে শনিবার হাতিয়া থানায় ৮জন অপহরণ করে হত্যা এবং গুম করার বিষয়ে মামলা দায়ের করা হলেও ভূমিহীনরা তা অস্বীকার করে। হাতিয়া থানা পুলিশ ও চরে অবস্থানরত জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারও নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। চরাঞ্চচলের ভূমিহীনরা জানায়, হাতিয়ার মূল ভুখন্ড থেকে বি্িচ্ছন্ন চর নঙ্গলিয়া, নলের চর, কেরিং চর ও চর বাশার, জাহাজিয়ারচরসহ আশপাশের চরাঞ্চল এককভাবে নিয়ন্ত্রন করতো বনদস্যু বাশার মাঝির বাহিনী। গত ৬ জুন ভোরে র‌্যাবের সাথে ক্রসফায়ারে বাশার মাঝি নিহত হবার পর তার বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সম্মিলিতভাবেব নাসির কমান্ডার {বাশার মাঝির কেরানী}কে বাহিনীর দলনেতার দায়িত্ব দেয়। কিছুদিন না যেতেই বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট প্রধান মিয়া শিকদার, কাসেম, বাগরাজ, বাবর কসাই, বাহার কেরানী, ইসমাইল, মালেক ফরাজী, এমরান ও নিজামসহ কয়েকজন নাসির কেরানীর সাথে বিদ্রোহ করে। চরাঞ্চলে আমন ধান পাকতে শুরু করায় চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ন্ত্রনে রাখতে প্রকাশ্যে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে এই বাহিনী।
হাতিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ত্রাস মুন্সিয়া চোরা, জলদস্যু গিয়াস উদ্দিন ওরপে গেইস্যা ডাকাত দলবল নিয়ে তাদের সাথে যোগ দেয়। এসকল দস্যু বাহিনী ভূমিহীন বাজার ও কেরিংচর দিয়েও চরে একই সাথে আক্রমন করে। একই সময়ে হাতিয়ার সাবেক সাংসদ আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা হাতিয়া ও বয়ারচর থেকে এসে মিয়া সিককদার বাহিনীর সাথে চরে নামে।

সরেজমিনে চরের বির্স্তীণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাইলের পর মাইল পাকা ধানক্ষেত। কোথাও গুম করার চিত্র চোখে পড়েনি।

জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে পরিস্থিতি অবহৃত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো কিন্তু এমন কোনো ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

চারটি টিমে শতাধিক পুলিশ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রশিদ, সহকারি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আ.ফ.ম নিজাম উদ্দিন, হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম চর এলাকায় অবস্থান করছেন।

সরেজমিনে চর বাশার, চর নঙ্গলিয়া, চর জাহাজিয়া, নলেরচর ও কেরিংচরে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জনকে পিটিয়ে ও জবাই করে হত্যা, অর্ধশত লোককে অপহরণ এবং তিন শতাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ভূমিহীন অধিবাসীরা কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।

চর বাশারের ভূমিহীন মজিবুল হক জানান, মুলত এখন চরে ধান পাকা শুরু হয়েছে, ধান ও চরের জমি নিয়ন্ত্রণে নেবার জন্য সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী দস্যু মিয়া শিকদার, মুন্সিয়া চোরা, নিজাম ও গিয়াস ডাকাতের মাধ্যমে কয়েক শ জলদস্যু ও বনদস্যুদের পাঠিয়ে চর দখল নেয়ার চেষ্টা করে। পরে ভূমিহীনদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়। আমরা কোনো লোককে মরতে দেখিনি আর কোনো মৃত্যুর সংবাদও পাইনি।

এ সকল চরে আজ সারাদিন মোহাম্মদ আলীর বিচারের দাবিতে দফায় দফায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় ভূমিহীনরা।

এদিকে টেলিফোনে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী বলেন, ভূমিহীনদের জিম্মি করে এসব বলানো হচ্ছে। আমি এসব বাহিনীকে চিনি না, এরা বশার মাঝি বাহিনীর সদস্য নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় এখন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে আগুন দেয়া ও তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।
http://www.youtube.com/watch?v=nT1SE2Ui98I
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×