somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টঃ আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে স্টিভেন কেয়ি

১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রিটিশ আইনজ্ঞ, যুগোশ্লাভিয়া ও রুয়ান্ডা যুদ্ধাপরাধ বিচারের আইনজীবী স্টিভেন কেয়ি কিউসি’র বক্তব্যকে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্টিভেন। যুদ্ধাপরাধ বিচারের লক্ষ্যে প্রণীত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) অ্যাক্ট ২০০৯-এর সমালোচনা করে স্টিভেন কেয়ি সম্প্রতি ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন। স্টিভেনের সে বক্তব্য সম্পর্কে গত শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন পত্রিকায় আইনমন্ত্রীর মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। আইনমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাবে স্টিভেন কেয়ি লিখিতভাবে আইনমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন আইনটি নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য।
প্রতিবাদে স্টিভেন কেয়ি বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে আমি যে বক্তব্য রেখেছি তার কোথাও আমি বলিনি যে, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ নেই। আমি এ কথাও বলিনি যে, অভিযুক্ত পক্ষ সাক্ষীকে জেরা করতে পারবে না। আমার বক্তব্য সম্পর্কে আইনমন্ত্রীকে হয় ভুল বোঝানো হয়েছে অথবা তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছেন বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে।
স্টিভেন কেয়ি সুপ্রিম কোর্ট বারের অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যের উল্লেখ করে বলেন, আমি সেখানে বলেছিলাম ‘১৯৭৩ সালে সংবিধান সংশোধন করে ৪৭(৩) ও ৪৭(এ)(২) ধারা সংযোজনের কারণে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে অসাংবিধানিক হিসেবে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। কারণ ৪৭(৩) ধারায় বলা হয়েছে, এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোনো সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক ফৌজদারিতে সোপর্দ কিংবা দণ্ডদান করিবার বিধান সংবলিত কোনো আইন বা আইনের বিধান সংবিধানের কোনো বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য বা পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনি বলিয়া গণ্য হইবে না কিংবা কখনো বাতিল বা বেআইনি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এর মাধ্যমে সংবিধানে যেসব নাগরিক অধিকারের অঙ্গীকার করা হয়েছে যেমন ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সকলের আইনের সমান আশ্রয় লাভের সুযোগ থাকবে। ৩৫ অনুচ্ছেদের বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ এবং ৪৪ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ সম্পর্কে যে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে তা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে রহিত করা হয়েছে।’
মি. স্টিভেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যান নিয়োগ, বিচারক নিয়োগের বিষয়ে আসামি পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি তোলা যাবে না। ট্রাইব্যুনালের সেকশন ১০ (এইচ) অনুসারে বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনালের বিচারের বিষয়ে আপত্তি উথাপনের সুযোগ নেই। ফলে বিচারক যদি কোনো সাক্ষীকে জেরা করেন তার কোনো প্রতিবাদ করতে পারবেন না আসামি পক্ষের আইনজীবী।’
তিনি বলেন, এ আইনের অন্য অনেক ধারার বৈধতা নিয়ে আমি প্রশ্ন উথাপন করেছি যেটা ‘বাংলাদেশ তার বিচারব্যবস্খায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আমদানি করেছে কিন্তু সংবিধানে মৌলিক নাগরিক অধিকার রক্ষার যে অঙ্গীকার করেছে তা রফতানি করেছে’ এই শিরোনামে লেখা আমার মূল বক্তব্য থেকে জেনে নেয়া সম্ভব।
মি. স্টিভেন বলেন, এ আইন নিয়ে আইনমন্ত্রী যদি প্রকাশ্যে বিতর্কে অবতীর্ণ হতে চান তবে আমি তাকে স্বাগত জানাব­ অবশ্য আইনমন্ত্রী যদি সত্যিই চান তিনি এই আইনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদ অনুসারে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।/:)
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন নিরপেক্ষ নয় যে বিষয়ে আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশন তাকে আগেই পরামর্শ দিয়েছিল।
সূত্রঃ দৈনিক নয়া দিগন্ত। ১৭/১০/২০১০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×