…তোমার সাথে কাটানো জীবনটাকে আমি দুই অংশে ভাগ করেছি – “মা-কাল” এবং “অপরিচিতা-কাল”। প্রতিদিনই আমি তোমার এই দুই রূপই দেখতে পাই। মা-কাল চলা সময়ে তুমি আমার সব ব্যাপারে খেয়াল রাখ, আমার খোঁজ নাও, আমি সারাদিনে কিছু খেয়েছি কিনা সে খবর রাখ।…
অপরিচিতা-কাল আমার জন্য বেশ কষ্টের। কিন্তু এটা আমি চাইলেও এড়াতে পারি না। তুমি অচেনা হয়ে যাও। খুব অচেনা। তুমি তখন এক সন্তানের জননী। তোমার ছেলে তখন তোমার পুরোটা পৃথিবী জুড়ে। যখন তোমার ওই ছেলেটা আমাকে অপমান করে বসে, তুমি কিছু বল না। কারন আমি তো তোমার অচেনা তখন।
ওই সময়টুকু তোমাদের একটা চক্র তৈরী হয়ে যায়- তুমি, তোমার ছেলে আর বাবা।এই চমৎকার চক্রের বাইরের যে কেউ তখন অস্পৃশ্য। ভীষন অস্পৃশ্য।
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি, তোমাদের ছেলে দরকার ছিল। বড় বোনের জন্মের পর তাই এক বছরের পর পরই নতুন জীবনের আগমন। আবারও মেয়ে!সেই মেয়েটাই আমি! কিন্তু এখানে আমার ঠিক কতটুকু দোষ বলতে পার? ঠিক কি দোষ করে সারাটা জ়ীবন তোমাদের গলগ্রহ হয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে?
জীবনের শেষ মুহূর্তে হলেও জানিও একবার…আমি কোন দন্ডে দন্ডপ্রাপ্ত।