somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চে- নিয়া পুরাতন কথা!!!!

১২ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসসালামু আলাইকুম,
১.আমাদের মতোন দেশে এবং পশ্চিমা দেশগুলিতেও ''চে গুয়েভেরা'' নামখানি নানাভাবে আকাশে-বাতাসে আজিকাল ভাসিয়া বেড়ায়।উহা যে খারাপ বিষয় তাহা বলিবার উদ্দেশ্য আমার নাই।
মার্কিন-মুলুকের হাটে-বাজের চে-র টুপি, গেন্জী, টি-শার্ট----এইগুলিতে ভরিয়া রহিয়াছে। আমাদের দেশেও হয়তো কিছুদিন বাদে চে-মার্কা লুঙ্গিও দেখিতে পাইবো। উহার মানে কী?
উহার মানে একটাই। তাহা হইতেছে চে এখন আর কোনো বিপদের নাম নহে। চে এখন আর কোনো বিপ্লবীর নাম নহে। চে এখন একটি ফ্যাশানের নাম।
২.আমি চে-র অবদানকে অস্বীকার করিতেছি না। করিবার উপায়ও নাই। কিন্তু নিজেদের জীবনাদর্শে কতোখানি চে-গুয়েভেরাকে রাখিয়াছি? এইটা ভাবিবার বিষয়। তাহার কারণ হইতেছে যে : চে ছিলেন বিপ্লবী। তিনি দেশে-দেশে বিপ্লব ছড়াইয়া দিতে চাহিয়াছিলেন। কিন্তু বিপ্লব তো গাছের পাকা ফল নহে যে ঝাকি দিলেই টুপ করিয়া পড়িয়া যাইবে।

৩.চে-কে নিয়া বন্দনা-গীতি লিখিবার লোকের অভাব হয় নাই। কিন্তু বিপ্লবী মানুষের সংখ্যা সংখ্যা দিন-দিন কমিয়া যাইতেছে। আমরা চে-কে নিয়া কবিতা আওড়াই। কিন্তু িতিনি যে বলিয়া গিয়াছেন :
“the revolution is not an applethat falls when it is ripe. you have to make it fall.” এইসব কথার দিকে আমাদের নজর নাই।নজর দিবার সময়ও নাই। শুধু পঞ্জিকা দেখিয়া চে-র জন্ম-মৃত্যুর দিন তাহাকে নিয়া নানারকম শ্রদ্ধা জানাইতে থাকি। উহা কি আসলেই শ্রদ্ধা নাকি শ্রদ্ধা দেখাইবার একটি ভান মাত্র?
৪.চে-গুয়েভেরা যে-মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তাহার নাম মার্কসবাদ। সেই মতবাদের কতখানি চর্চা হইতেছে তাহা নিয়াও প্রশ্ন করিবার অনেক অবকাশ রহিয়া যায়।মার্কস সাহেব বলিয়াছিলেন : ইতিহাসের অতিগুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যেন দুই-দুইবার করিয়া হাজির হইয়া থাকে।প্রথমবার হাজির হয় বিয়োগান্তক নাটক হিসাবে আর পরেরবার প্রহসন হিসাবে।মার্কসের বয়ান এইরকম :
''History repeats itself, first as tragedy, second as farce.''(মার্কস রচনাবলী : চতুর্থ খণ্ড)। চে-র বন্দনা দেখিয়া সেই কথাই আবার মনে পড়িয়া যাইতেছে। যদিও আমি মার্কসবাদী নহি। কিন্তু এই দুনিয়ার একজন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী হিসাবে মার্কস সাহাবের গুরুত্ব একেবারেই অস্বীকার করিতে পারি না।
৫.আবার মজার বিষয় এই যে আমরা চে-কে বিপ্লবী বলিয়া সালাম জানাই আর লাদেনকে সন্ত্রাসী বলিতে দ্বিধা করি না। হামাস আর হিজবুল্লাহ-র নেতাগণকেও অবলীলায় সন্ত্রাসী বলিয়া নিন্দা জানাই।অথচ ভুলিয়া যায় যে একসময় চে-গুয়েভরাকেও সন্ত্রাসী বলিয়া অভিহিত করা হইতো।অর্থাৎআমাদের বিপ্লবীদের মনোজগতেও মার্কিন সংস্কৃতির আগ্রাসন কতোভাবেই না দেখিতে পাইতেছি!!!!
শত্রু-মিত্র চিনিবার ক্ষমতাও যেন আমাদের লোপ পাইতেছে। অথচ এইটা চিনিবার দিকে চে-গুয়েভরা কতোভাবেই-না তাহার কমরেডদের প্রতি অনুরোধ জানাইয়াছিলেন!!!সেই কথা আমরা ভুলিয়া যাইতেছি।
আরেক জার্মান দার্শনিক হেগেল সাহাব বলিয়া গিয়াছিলেন যে ইতিহাসের শিক্ষা এই যে আমরা ইতিহাস হইতে কিছুই শিক্ষা লইতে চাহি না। হেগেলের বক্তব্যটি হইতেছে :We learn from history that we do not learn from history" ।
চে-কে নিয়া এই মতাদর্শহীন মাতামাতি হেগেলের কথাকেই আবার স্মরণ করাইয়া দেয়। যদি আমাদের কান থাকিতো তবে উহা নিশ্চিয়ই শুনিতে পারিতাম।
পরম করুণাময় আমাদিগকে সহজ সরল পথে চলিবার তাওফিক দিন।
সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৩৭
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×