somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহর কুতুব সিরিজের প্রলাপ ও চালাকিঃ জ্ঞান

১০ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শহর কুতুব সিরিজের প্রলাপ ও চালাকিঃ জ্ঞান
কিছু কবিতাঃ মহব্বত ও দ্বীনিয়াত

১।
আনু মিঞার হাওয়ার গাড়ি।ট্রাংক রোডে প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন। আমলকি বনে মাতাল হাওয়ার ঘুরাঘুরি। নিশিকালের আউলা শরীরে আপনার অধিবাস। আপনি আমার জানের জান বাতাস। আমার জানু।
ভ্রমর নিরজন ক্ষণে দিব্যভাব আসে। কাছিমের খোলে তৈরি আরামকেদারায় বসি। সে আমাকে সমুদ্রে নিয়া যায়। আমি আনু মিঞার হাওয়ার গাড়ি চড়ে, সামনের আসনখানায় রাজস্বভাবে বসি। আমাকে সে খন্ডল নিয়া যায়। ইঞ্জিনের সাথে আমার চিনপরিচয়।অজস্র অমাবস্যায় আমি একা একা হেঁটেছি, ভয় পাই নাই।আপনি যখন আসেন, তখন ডর লাগে। শরীরের ইঞ্জিন স্ট্রার্ট লয়।
কেবল কাঁপি।
২।
শিংগাল আসে। মাদিও আসে। শিং-শিং মৃদু আদর। হৃষ্টপুষ্ট আমলকি। এদিকে আমলকির ছেঁড়াচিরল পাতার ফাঁকে জ্যোৎস্নার বিস্তার।অর্ধ প্রস্ফুটিত এই চানপহরের শোভা আগে দেখি ন’। কী আচানক! এত ঢক-ঢকিলা, ঢংগের ঠেলা সয় না। চাঁদ, হরিণযুগল, দীপ্তির জ্যামিতি। আলো ভাঙা কাঁচের টুকরার মতো ছড়িয়ে আছে। আমি মাচায় বসে বন্দুক সই করেছি। ঠাহর করে দেখি মাদি গাভিন।
আমি শিকার ভুলে যাই।
৩।
ভাদর মাস। তিন পুরুষের কাঁথা গায়ে। আমাদের দেশে নারী সবসময় কর্তা। যে কাঁথা গায়ে তাও তার-ই। কিম্বা তিনার। ন’ যাই বন্ধুর বাড়ি, ন’ ছাড়ি। নিঃশব্ধ শ্বাস, ঘ্রাণ। সব মাঝরা [ই] তে। দেস্তাইনের সাথে দেখা। প্রতিটি সম্পর্কের পবিত্রকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিজের অন্তরের নীরিক্ষা। মা, ভাবি, বোন, দোস্তাইন- আরো অনেক কিছু লাঁকার চিহ্ন। আমার চলে যাওয়া, মায়ের চেয়ে থাকা। তাঁর দৃষ্টিপথ গন্তব্যের কম্পাস। আমি তার দৃষ্টির মধ্যেই থাকি। তাঁর কাছে যে দায়, দেশ, মানুষ আর মানবের কাছে সে-ই আমার আনুগত্য।
আমি মানুষ হয়ে উঠি।
৪।
মা নাই। ঢলে ডোবা চরাচর। তিলক্ষেত, সবজি, আবাদ, অনাবাদ, বাড়ি, ছাড়াবাড়ি সব। বৃক্ষে পুঞ্জিভূত মেঘকণা। ঝরঝর, যেন আকাশবৃষ্টি। ভাবের জগতে প্রবেশের অনেক পথ আছে।স্বভাবে সংগুপ্ত দোষ। ভাবুক হতে পারছি না। আমি বেড় শিকারের পাল্লায় পড়েছি। সবাই আমাকে ঘিরে ধরেছে। আমি ছুটছি সওয়ারিশূন্য ঘোড়ার মতো। কিন্তু জমজ দিগন্তে কোথাও কোন সীমান্ত নাই। আমি সীমানা চাই, সীমা নয়। নূরানি নক্ষত্র আমায় ডাকে। প্রতিক্ষার প্রতিশ্রুতি বারমাস। আমি ছুটছি অসীমে আদৃত চিহ্নের সন্ধানে। আমি পানের পর গজল। আমি নাই। অর্থ্যাৎ, কালিঞ্জাকালে সেজদারত বৃক্ষের কাছে। আমি যেতে চাই। অবিনাশি সঙ্গীতের কলি ভাজতে ভাজতে। আমি যেতে চাই কোন এক অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্ধ্যায়।

৫।
আমার আওলাদ। তারা কেমন আছে। তারা খোপে খোপে থাকে। তাদের অ-কইতর স্বভাব। একসাথে উড়ে যায় না। পাখিরা আক্রমণে সংঘজীবি। একসাথে ইঙ্গিতময় এই সতর্ক উড়ে যাওয়া। প্রাণ ও প্রকৃতির স্বভাব, প্রতিরক্ষার এই ধাঁচ আমি পড়ি। প্রকৃতির প্রাণেশ্বরীদের আমার ভাবের ঘরে থাকতে দেই। বস্তুজগত স্বরুপে হয় না আমার। বেহুদা কোন কামারের আগুন ফোঁসফোঁস করে না। সদা যারা থাকেন রুপান্তরে, তাদের সাথে আমি লীলাময় সম্পর্কে বাধা পড়ি। দহনস্নিগ্ধ খইয়ের মতো আমি বিকাশের উল্লাসে ছড়িয়ে যাই। আমার না থাকে নিজ, না থাকে অপর। আমি আমার আওলাদের জন্য তবুও রোদন মাতোয়ারা।
৬।
মানুষের ছিদ্দত দেখে কাঁদি। ঠাকুরের জীবনদেবতা নিয়ে মেলা তর্ক করেছি। মর্মে মরা। অতি বেশি বস্তুময় কোনকিছু ভালো লাগে না। সে কারণে জীবনদেবতা ভালো লাগতো। এখন লাগে না। কারণ পরমের স্বভাব চিনে গেছি। ধরম ধারণাবাচক ও বৈশিষ্ট্যসূচক। আমার, আমাদের প্রতিটি বস্তুর ধর্ম আছে। গুণ বস্তু থেকে উৎসারিত, কিন্তু বস্তুময় নয়। নাই তা’ যা অনাদি থেকে নেই। আছে যা বস্তুময়তার প্রকাশ্যতার আগ থেকেই আছে। সময়। আদম-হাওয়া মানবের জিনগত ও ভাবগত একতার প্রতিক। মানুষের বিকাশের কেন্দ্রে যে শ্রম, যে বিশেষ প্রোটিন, যে কথা- শ্রমই মানুষকে মানুষ করেছে- মাছ মানুষের অতি প্রিয়। এই লান্নতের দুনিলান্নতের দুনিয়ায় নাজাতের একমাত্র উপায় প্রাণ ও প্রকৃতিকে প্রাণাধিক পেয়ার।
সকল মানুষ আমার বড়ো পেয়ারের।

৭।
জিব্রাইল বড়ো সমস্যা। কারণ তিনি ডাকহরকরা এমন জ্ঞান নিয়া আসেন, যা ফিকাহ ও ফেকরার ফেরেবে না পড়েও সহি জ্ঞান হয়। ইউরোপীয় আধুনিকতাবাদের সারকথা হ’ল মানবজ্ঞানের উৎস সংক্রান্ত বিষয়ে। অন্য কোন জায়গায় নলেজ নাই। আমরা বাঙালি। নলেজ নিয়ে কয় কথা, সাকিন মোকাম নিয়া নয়। খোদ্গুণে খোদা চিনি, স্বরুপে সত্য। অভাগির কপালে সদা জন্মে দুঃখ। তার আসার সময় এমন যে, ইউরোপীয়নরা অই সময় তন্দ্রাটুইটুম্বুর। আমরা ঘুম ভাঙালাম। এই কী আমাদের অপরাধ?

৮।
ছোটবেলায় দ্বীনিয়াত দিয়েই অক্ষরের সাথে চিন পরিচয়। কিন্তু দ্বীনিয়াতের মানে তখনও বুঝি নাই। দ্বীন ও ধর্মের সম্পর্ক কী এই প্রশ্ন তখনও অন্তরে উদয় হয় নাই। দ্বীনিয়াতের মানে আমার কাছে আরবি ভাষার প্রথম পাঠ। পরে বুঝেছি এর মানে আরো ব্যাপক, গভীর। দ্বীনিয়াতের যে তর্জমা আমার কাছে খুবই মনমত হয়েছিল, সেটি হল দ্বীন-দয়ালের সন্ধান করার জ্ঞান। কিন্তু দ্বীন কি এই নিয়ে পরে আরো ভেবেছি। শরিয়তের মধ্যে দ্বীন কী রূপে থাকে? তার আগে একটা কথা বলা দরকার। পশ্চিমা সমাজে যে আইন চালু আছে, যাকে আমরা সিভিল ল’ বলি, তা’ইঞ্জিল কিতাবের রাজনৈতিক সংস্করণ। আমাদের আইন সম্পূর্ণভাবে শরিয়ত সম্মত। আমরা ইসলামকে আরবদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটা ফাটাফাটি তর্কে লিপ্ত। তা-ই শরিয়ত ও দ্বীন নিয়ে কথা বলতে সাহস করি। আমাদের নবী দ্বীনের, গরীবের, মজলুমের- শরিয়ত কেবল এই সব মানুষদের কাছে “শিরক ও বেদাত” মুক্ত জীবন-যাপনের ব্যাপার না,
আমাদের দেশের সাধারণ গরিব-গুর্মা মানুষ নবীজিকে মহব্বত করে, পরমবন্ধু জ্ঞানে “দ্বীনের নবী মোস্তফা” বলেন। নজরুলের গানে দ্বীনের নবীর প্রতি পুরাপুরি ভাবতন্ময়তা আমাদেরকে নিয়ে যায় এমন এক জাগতিক উপলব্ধির কাছাকাছি, যে জগতে আমাদের আপন বলতে কেউ নাই। আসলে দ্বীন-ধারনার মধ্য দিয়ে আমরা মজলুমের মনের ভাব প্রকাশ করি।
৯।
এই লিখা শুরু করতে চাই হযরত মৌলানা মুহাম্মদ ইবনে আবদ আল ওয়াহাবি সাহেবের দর্শন নিয়া। প্রথমে তার দর্শনের সারকথা পেশ করি। ইসলামের সাথে আর কোন সংস্কৃতি মিশ্রিত হবে না।ইসলাম সংস্কৃতি নিরপেক্ষ। মাজার কিংবা কোন বস্তুর উপর মানত করা শিরক বা বেদাত। ইসলাম বলপূর্বক ধর্মশিক্ষার পক্ষে না। সে ছিল। যারা তার কথা মানে না, সকল অবিশ্বাসীদের মেরে ফেলার হুকুম দেয় সে। কী ভয়ংকর। শক্তি দিয়ে ধর্মবিস্তার করলেও টিকে না। খোদা!হুজুরের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও। তার বক্তব্য হজরতের বিদায় হজ্জ্বের ভাষণের একেবারে বিপরীত। ধারণা করা হ্য় ১৭৯১ সালে তিনি মারা গেছেন। তিনি সবাইকে বলতেন, তিনি নাকি স্বর্গের দ্বাররক্ষিদের কাছে চিঠি দিয়েছেন, তার জেহাদি সৈনিকেরা ওপাড়ে গেলে বেহেস্তে নিশ্চিতভাবে প্রবেশাধিকার পাবে। একেবারে খোশ আমদেদ দিয়ে নিয়ে যাবে। কী ভয়ংকর কথা!
জেনে রাখুন, জামাত বেদাত। ওরা হাশর-নশর মানে না। ওরা খোদাকে ভয় পায় না। যার খোদার ভয় আছে, সে কী করে নারী ধর্ষণ করে! রাজনীতি আর দালালি, বদমাইশি এক জিনিস নয়। মওদুদি মক্কায় গেছে, এতে আমাদের অপমান হয়েছে।
১০।
বাংলার ভাবজগতে ভাণ নাই। ভান যা কিছু আছে শুধু লীলার দরকারে।লীলা লিল্লাহ মজুমদার আপনার সাথে লীলা করে। সে লীলাবতির সাথে ইশক করে। সে প্রাণের সাথে মৌজ করে। আমি প্রাণের মোজেজা ও মৌজ বুঝি।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×