somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইস্টার দ্বীপের মূর্তি

১০ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিস্তারিত অনন্য তথ্য
ইস্টার দ্বীপের মূর্তিগুলোকে বলা হয় নেভল অব দ্য ওয়ার্ল্ড। এই দ্বীপের বাসিন্দারা সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। এর পরও এই জনবিরল দ্বীপে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য পাথরের তৈরি ভাস্কর্য। বিরাট আকারের মূর্তিগুলোই তৈরি করেছে রহস্য। কারা তৈরি করল এগুলো?
ইস্টার দ্বীপ এখন একটা দারুণ পর্যটনকেন্দ্র। স্থানটিকে বিশ্বের অন্যতম ‘হেরিটেজ সাইট’ হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
নির্জন এ দ্বীপে আজকে জনসংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় চার হাজার। দ্বীপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো সাতটি বৃহদাকার ভাস্কর্য। যাদের আসলে ‘নেভল অব দ্য ওয়ার্ল্ভ্র’ বলা হয়। স্থানীয় ব্যক্তিদের বিশ্বাস, এই ভাস্কর্যের শরীর স্পর্শ করলেই অনুভব করা যাবে সারা পৃথিবীর শক্তিকে।
পুরো দ্বীপে সব মিলিয়ে হাজারখানেক ভাস্কর্য আছে। প্রতিটিই ১২ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট। আর একেকটির ওজন ২০ টনেরও বেশি। দ্বীপের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যটি ৩২ ফুট উঁচু। এটির ওজন প্রায় ৯০ টন।
দ্বীপটি প্রশান্ত মহাসাগরের বিচ্ছিন্ন একটি অঞ্চলে অবস্থিত। রানু কাও, মনগা তেরেভাকা ও কাটিকি নামের তিনটি আগ্নেয়গিরি দ্বারা বেষ্টিত এই দ্বীপ।
কারা, কবে, কীভাবে দ্বীপটিতে মূর্তিগুলো বানিয়ে রেখেছে, এর কোনো উত্তর নেই। স্থানীয় ভাষায়, এ ভাস্কর্যগুলোকে বলা হয় মোয়াই। ১৯১৪-১৫ সালে এক ইংরেজ ভদ্রমহিলা দ্বীপটিতে পৌঁছে বলেছিলেন, ‘দ্বীপটিতে অতীত এসে বর্তমানকে দখল করে বসেছে।’
বলা হয় ১৭৭২ সালে কোনো এক ইস্টার সানডে উত্সবে অ্যাডমিরাল জ্যাকব রগেউইন দ্বীপটি আবিষ্কার করেন। ডাচ্ এই অভিযাত্রীই দ্বীপটির নাম দেন ‘ইস্টার আইল্যান্ড’।
ইংরেজ অভিযাত্রী ক্যাপ্টেন কুকও নাকি দ্বীপটি ঘুরে গিয়েছিলেন। সে সময় এক পলিনেশীয় দোভাষীর মাধ্যমে তিনি স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলেও বলা হয়। এরপর ধীরে ধীরে ইংরেজ, পর্তুগিজ ও স্প্যানিশ অভিযাত্রীদের কাছে দ্বীপটি ছিল এক রকম বন্দর। তারা দ্বীপের অধিবাসীদের ধরে নিয়ে বিভিন্ন দেশে বিক্রি শুরু করে। বিদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া এবং দ্বীপের প্রতিকূল পরিবেশ মিলিয়ে কমতে শুরু করে লোকসংখ্যা।
কিন্তু এই ইতিহাস ঠিক পরিষ্কার করতে পারে না যে, ইস্টার দ্বীপের মূর্তিগুলো কারা তৈরি করেছে। অনেকে মনে করেন, দ্বীপটিতে বাইরের জগত্ থেকে অভিবাসীরা বাস করে গেছে। ভিনগ্রহের সেই প্রাণীরাই তৈরি করেছে এই মূর্তিগুলো। অনেকে বলেন, দ্বীপের বাসিন্দারা ছিল প্রাচীন মিসরীয়। অনেকে আবার মোয়াইগুলোর সঙ্গে প্রাচীন পলিনেশীয় জাতির ধর্মীয় দেবতা ও পূর্বপুরুষদের অবয়বের মিল খুঁজে পেয়েছেন।
আবার কেউ কেউ ধারণা করেন, দ্বীপে বসবাসরত সেই বাসিন্দাদের প্রতিটি পরিবারের সমাধিস্তম্ভ হিসেবে বানানো হতো একেকটি মোয়াই।
স্থানীয়দের অবশ্য আলাদা একটা গল্প আছে—হুটু মাটু নামের এক ধর্মীয় নেতা কোনো এক যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নির্জন এই দ্বীপে আশ্রয় নেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বংশধরদের নিয়ে দুটি দল তৈরি এবং তাদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। সেখান থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের মাধ্যমে শুরু হয় এই দ্বীপের সভ্যতা। এবং তারাই নাকি এই মূর্তিগুলোর স্রষ্টা।
আধুনিক সময়ে অনেকেই ধরে নেন, পলিনেশীয় মানুষই নির্মাণ করে গেছে মোয়াইগুলো।
দ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষিত স্থান সাতটি মোয়াইসংবলিত ‘নেভল অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। অবশ্য রহস্য শুধু মোয়াই নিয়েই নয়। এ ছাড়া ইস্টার দ্বীপে আছে ‘আহু’ বলে পরিচিত পাথরের বিশাল বিশাল প্লাটফর্ম। আছে পাথরের তৈরি বিস্ময়কর দেয়াল, পাথরের ঘর ও গুহাচিত্র। পরস্পর সংগতিহীন এসব সৃষ্টিই বিস্ময়কে আরও বাড়িয়ে দেয়।
এ শতকের মানুষ এখনো হাজারো প্রশ্ন নিয়ে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে মোয়াইগুলোর দিকে। আর ইস্টার দ্বীপের হাজারো সৃষ্টি দাঁড়িয়ে থাকে রহস্য বুকে নিয়েই।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×