somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই নাস্তিক জাফর ইকবাল, তোদের মৃত্যুর ঘন্টা বাজছে। হতে পারে আজ রাতই তোদের শেষ রাত

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"
"
"
"
"
"
"
লেখার শিরোণাম এ যা বলা হয়েছে
সেটা বাংলাদেশের ই কেউ বলেছেন
বাইরের কেউ নন

স্যার এর মূল লেখাটা শেয়ার করছি
যারা পড়েন নি তাদের জন্য ...

"গত কিছুদিনে আমি একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। একটা দেশের মানুষের যেরকম খাদ্য, বাসস্থান এবং শিক্ষার অধিকার থাকে, আমাদের দেশে তার সঙ্গে একটা নতুন বিষয় যোগ হতে যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে মিথ্যা কথা বলার অধিকার। এই দেশের মানুষ যেন চাইলেই মিথ্যা কথা বলতে পারে এবং সেই মিথ্যা কথা বলার জন্য দেশে অন্য কারো যত বড় সর্বনাশই হোক না কেন, যিনি মিথ্যা কথা বলছেন তিনি যেন নিরাপদে মিথ্যা বলতে পারেন সেজন্য এই দেশের পত্র-পত্রিকা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান, গুণী মানুষজন সবাই একত্র হয়ে গেছেন। কেউ যেন মনে না করেন আমি বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছি, সেজন্য আমি জলজ্যান্ত কয়েকটি উদাহরণ দেই।

ব্যাপারটা শুরু হয়েছে আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ঘটনা থেকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নিয়োগ নিয়ে এই দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকায় একদিন একটা খবর ছাপা হলো। সংবাদটি মিথ্যা -এটাকে মিথ্যা বলা হবে নাকি অসত্য বলা হবে নাকি অর্ধ-সত্য বলা হবে সেসব নিয়ে তর্ক করা যেতে পারে। আমি সেই তর্কে যাচ্ছি না। যেখানে সঠিক তথ্য রয়েছে সেখানে সেই তথ্যটাকে আড়ালে রেখে অন্য কিছু ইচ্ছে করে বলা হলে আমি সেটাকে মিথ্যে বলে বিবেচনা করি। যাই হোক, সেই মিথ্যা সংবাদটির কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু অধ্যাপকের চরিত্রে মিথ্যা গ্লানি স্পর্শ করল, তারা খুব আহত হলেন। ঘটনাক্রমে সেই সাংবাদিক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কোনো ছাত্র শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে শাস্তি দেওয়ার নিয়ম আছে, পরে পুরো ঘটনা তদন্ত করে অপরাধ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হয়। কাজেই সেই ছাত্রটির মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের প্রাথমিক তদন্ত করে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে একটা তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হলো এবং আমি সেই তদন্ত কমিটির আহবায়ক। আমি বিষয়টি জোর দিয়ে লিখতে পারছি কারণ তদন্ত কমিটির আহবায়ক হিসেবে আমি খুঁটিনাটি সবকিছু জানি। ছাত্রদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজস্ব কিছু অলিখিত নিয়ম আছে। কম বয়সী ছেলে মেয়েরা দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে সবসময়ই তাদের শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হয়। সবসময়ই চেষ্টা করা হয় তাদের পড়ালেখার যেন কোনো ক্ষতি না হয়। ( একেবারে খুন ধর্ষণ করে পলাতক হয়ে গেলে অন্য কথা, তখন অপরাধটি বিশ্ববিদ্যালয়ের না, দেশের আইনের)। আমি তদন্ত করতে গিয়ে অত্যন্ত বিচিত্র একটি বিষয় আবিষ্কার করলাম, ছাত্র সাংবাদিকটিকে সেই সংবাদপত্রটি পুরোপুরিভাবে নিরাপত্তা দিয়ে গেল। সেই কারণে তার ঔদ্ধত্য হলো সীমাহীন। শুধু তাই নয়, একদিন আবিষ্কার করলাম হাইকোর্টে রিট আবেদন করে তিন মাসের একটি স্থগিতাদেশ পর্যন্ত বের করে ফেলল! পুরো ঘটনার ফলাফল হলো ভয়ানক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র জানতে পারল কিছু মানুষের চরিত্র হননের জন্য সে ইচ্ছা করলেই একটা পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ ছাপাতে পারে এবং সেই পত্রিকা তাকে রক্ষা করবে। আমাদের দেশের একটা পত্রিকা অনেক সময় রাজনৈতিক দল, পুলিশ, র‌্যাব এমন কি সরকার থেকেও বেশি শক্তিশালী। এই ঘটনাটি আমার চোখ খুলে দিয়েছে। দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকায় (আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগের পরও) যদি এ রকম একটা ঘটনা ঘটাতে পারে, তাহলে নিশ্চয়ই অন্যান্য পত্রিকায় অসংখ্যবার এই ঘটনা ঘটেছে। আমার একটা বড় ক্ষতি হয়েছে, খবরের কাগজে কিছু লেখা হলে আমি আজকাল ভুরু কুঁচকে সেটার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজেকে জিজ্ঞেস করি, আসলেই কি এটা ঘটেছে? পত্রিকাটা কি সত্যি কথা বলছে?

যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায় নিয়ে কিছু ব্লগার, তরুণ শাহবাগে একত্র হয়ে এই দেশে একটা অভাবিত আন্দোলন জন্ম দিয়েছে। সেই তরুণদের হেয় করার জন্যে ঢালাওভাবে তাদের সবাইকে নাস্তিক ঘোষণা করে একটা প্রচারণা শুরু করা হলো। সেই প্রচারণাটি শুরু করল ‘আমার দেশ’ নামের পত্রিকা। আমি লিখে দিতে পারি- তারা নিজেরাও বিশ্বাস করে না, যারাই ব্লগার কিংবা যারাই যুদ্ধপরাধীর শাস্তি চেয়ে শাহবাগে গিয়েছে, তারা সবাই নাস্তিক। কিন্তু বিষয়টা সেভাবেই উপস্থাপন করা হলো- ব্লগার মানেই নাস্তিক, শাহবাগে যুদ্ধপরাধের বিচার চাওয়া তরুণ মানেই নাস্তিক। ‘আমার দেশ’ পত্রিকায় ব্লগারদের সাথে আমার ছবি ছাপা হলো, যেভাবে সেই ছবিটি উপস্থাপন করা হলো তাতে কি আমার নিজের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর পাঠকেরা মে মাসের পাঁচ তারিখ ভোরে আমার কাছে লেখা একটা এস.এম.এস. থেকে পেয়ে যাবেন:

এই নাস্তিক জাফর ইকবাল, তোদের মৃত্যুর ঘন্টা বাজছে। হতে পারে আজ রাতই তোদের শেষ রাত। কাল হয়তো তোরা আর পৃথিবীতে থাকতে পারবি না। কারণ এই জমানার শ্রেষ্ঠ শায়খুল হাদিস আল্লামা আহমদ শফির ডাকে সারা বাংলাদেশের তৌহিদি জনতা মাঠে নেমে এসেছে। সেই সব তৌহিদি জনতা প্রধানমন্ত্রীসহ তোদের সব ধরে ধরে জবাই করে ছাড়বে। আমার আল্লাহকে নিয়ে, বিশ্বনবীকে নিয়ে কট্যুক্তি করার ভয়ংকর পরিণাম কী, তা আগামী কালকেই হাড়ে হাড়ে টের পাবি তোরা।”

‘আমার দেশ’ স্বাধীন নিরপেক্ষ মত প্রকাশে একটা পত্রিকা না, এটা স্বাধীনতা বিরোধীদের একটা নির্দিষ্ট বিশ্বাসকে প্ররোচিত করার পত্রিকা। তাদের প্ররোচনার কারণে এই দেশে অনেক মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে। কাজেই এই পত্রিকাটির সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে তার দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। তাকে যদি ভয়ংকর মিথ্যা প্রচারনার জন্যে আইনের আওতায় আনা হয়, আমাদের মতো মানুষেরা তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আমি আমার নিজের চোখকে বিশ্বাসও করতে পারিনি যখন দেখেছি এই দেশের পনেরোটি পত্রিকার সম্পাদক তাকে রক্ষা করার জন্যে এগিয়ে গিয়েছেন। এর অর্থটি কী দাঁড়ালো? এই পত্রিকাটি যা খুশি লিখতে পারবে, দেশের মানুষের প্রাণ বিপন্ন করে এরকম মিথ্যা প্রচারনা করতে পারবে, কিন্তু কেউ তাকে স্পর্শ করতে পারবে না!

আমার মনে আছে সামরিক আর বেসামরিক মিলিয়ে ২০০৬ সালের হাইব্রিড তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। আমরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তখন অস্থির হয়ে নানাভাবে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করার চেষ্টা করেছিলাম। কোনো পত্র-পত্রিকা তখন সেসব লেখা ছাপানোর সাহস করেনি। রিমান্ডে নেওয়া সেই শিক্ষকেরা কোনোদিন জানতেও পারেননি এই দেশে কত মানুষ তাদের জন্যে আকুল হয়েছিলেন। অনেক কষ্টে আমার দুই একটা লেখা শুধু কোন পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল, সেজন্যে সেই শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদের আমার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ ছিল না। দুঃসময়ে টিকে থাকাটাই হচ্ছে বিজয়। টিকে থাকতে হলে মনে বল থাকতে হয়; আর সেই মনের বলটি যখন আসে, সবাই জানতে পারে তারা একা নয়। তাদের পাশে অনেকে আছে। আমাদের দুর্ভাগ্য সামরিক বেসামরিক হাইব্রিড সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই দেশের অনেক পত্র-পত্রিকা সেই সাহসটুকু দেখাতে পারেনি। তাই যখন দেখি সেসব পত্রিকার সম্পাদকদের অনেকেই এখন ‘আমার দেশ’ নামক একটি ধর্মান্ধতা প্রচারযন্ত্রের সম্পাদকের পাশে এসে দাঁড়িয়ে গেছেন, তখন আমি মনে কষ্ট পাই। শুভবুদ্ধির ওপর বিশ্বাস হারানোর আশঙ্কা হয়। সত্য এবং মিথ্যার মাঝখানে নিরপেক্ষ থাকা যায় না – অত্যন্ত এই সহজ কথাটি কি বোঝার জন্য খুব কঠিন?

বিগত বি.এন.পি.-জামায়াত আমলে যখন সারাদেশে একটা রুদ্ধশ্বাস অবস্থা তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। দলীয় শিক্ষকেরা নানাধরনের তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছেন। প্রায় ডিএনএ (DNA) টেস্ট করে দেখা হচ্ছে রক্তের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রয়েছে কি না? যদি বিন্দু মাত্র চেতনা খুঁজে পাওয়া যায়, তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা জুতা পর্যন্ত নাড়াতে পারি না। কিছু করতে দেওয়া হয় না, কোথাও যেতে দেওয়া হয় না। পাঁচ মহাদেশ থেকে পাঁচ শিক্ষাবিদকে জার্মানির একটা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছে। আমি তাদের একজন। আমাকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো না। আমি আবিষ্কার করলাম শিক্ষকেরা যখনই একত্র হচ্ছে তখনই কথাবার্তা আলোচনায় শুধু ক্ষোভ আর হতাশা, ক্রোধ আর যন্ত্রণা। একাত্তরে আমি একটা জিনিস শিখেছিলাম, সেটা হচ্ছে যুদ্ধের আসল অস্ত্র রাইফেল নয়, যুদ্ধের আসল অস্ত্র হচ্ছে মনোবল। তাই কখনো মনোবল হারাতে হয় না। সহকর্মীদের মনোবল ধরে রাখার জন্যে আমরা তখন অনেক কিছু করেছি।। তার মাঝে সবচেয়ে জানার বিষয় ছিলো- আমাদের সান্ধ্যকালীন আড্ডা। বেশ কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে আমরা শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, দর্শন এরকম বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। শ্বাসরুদ্ধকর একটা পরিস্থিতি যখন স্বাধীনতা বিরোধীদের এরকম রমরমা অবস্থা তখন আমাদের এই পুরোপুরি বুদ্ধিভিত্তিক আলোচনাগুলো ছিল খুব আনন্দের, মনোবল ধরে রাখার জন্যে অসাধারণ।

সন্ধ্যাবেলা বসে তরুণ শিক্ষকদের সঙ্গে বুদ্ধিভিত্তিক আলোচনার বিষয়টি আমি পরেও চালু রেখেছি। তাই নিয়মিতভাবে আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষ করে তরুণ শিক্ষকদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বাইরে যে বিশাল একটা জগৎ আছে তারা আমাকে অনেক সময়েই তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। কোনো একটা ছুটির পর শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলছি তখন হঠাৎ করে তাদের কাছ থেকে একটা বিচিত্র বিষয় জানতে পারলাম। তারা সবাই তাদের নিজেদের এলাকা থেকে ঘুরে এসেছে এবং সবাই বলেছে যে, তাদের এলাকার সাধারণ মানুষেরা জানে এবং বিশ্বাস করে মে মাসের ৫ তারিখ মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অনেক বড় একটা মিথ্যা কথাকে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টা এমনি এমনি ঘটেনি। এর জন্যে কাজ করতে হয়েছে, পরিশ্রম করতে হয়েছে, অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো- হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে সেই তথ্য প্রচার করা হলেও সেদিন যে অসংখ্য কোরআন শরীফ পোড়ানো হয়েছিল, সেই তথ্যটি কিন্তু প্রচার করা হয়নি। রাতের আকাশে ইউএফও (UFO) দেখা গেছে কিংবা একটা ছাগল মানুষের গলায় কথা বলে এরকম মিথ্যা প্রচারিত হলে ক্ষতি হয় না। কিন্তু রাতের অন্ধকারে গোপনে কয়েক হাজার মুসুল্লিকে হত্যা করা হয়েছে এরকম একটি ভয়ঙ্কর মিথ্যা প্রচার হলে সব দিক দিয়ে ক্ষতি হয়।

কয়েক হাজার মুসুল্লিকে হত্যা করা হয়েছে সেটি প্রচারিত হয়েছে গোপনে। প্রকাশ্যে সর্বশেষ যে প্রচারণাটি ছিল সেটা হচ্ছে- ৬১ জনের, ‘অধিকার’ নামে একটি সংগঠন সেটি দেশ-বিদেশে প্রচার করেছে। কয়েক হাজার থেকে সংখ্যাটি ৬১ তে নেমে এসেছে, তাই সরকারের খুশি হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সরকার খুশি হয়নি। তারা ৬১ জনের নাম জানতে চেয়েছে, আমিও জানতে চাইতাম। পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় অভিযোগ করলে তার প্রমাণ থাকতে হয়। অধিকার নামক সংগঠনটি নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কারণটি আমরা বুঝতে পারি। কারণ পুরো ঘটনাটি টেলিভিশনে দেখিয়েছে। সাংবাদিকেরা রিপোর্ট করেছে এবং কোথাও এত বড় একটি সংখ্যা কেউ দেখেনি। সরকার তখন মিথ্যা একটি তথ্য প্রচারের জন্যে অধিকার নামক সংগঠনের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে গ্রেপ্তার করেছে।

‘আমার দেশ’ এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পক্ষে যে রকম ১৫ জন সম্পাদক দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। আদিলুর রহমান খানের পক্ষে এখন আরো বেশি মানুষ দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। শুধু পত্র-পত্রিকা নয়, বড় বড় মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক দল, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান, এমন কি আমাদের দেশের জ্ঞানী-গুণী মানুষ দাঁড়িয়েছেন। অধিকার সংগঠনটি যদি বলতো অনেক মানুষ মারা গেছে এবং তখন তাকে যদি গ্রেপ্তার করা হত সেটা বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলা যেত। কিন্তু যখন সংখ্যাটি অত্যন্ত নিঁখুত ৬১, তখন তাদেরকে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিচার বিভাগীয় তদত্ত কমিটির কাছে দেওয়া হবে - সেটি মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। ২১ আগস্ট ঘটনার পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত মিটির রিপোর্টের কথা কেউ কি ভুলে গেছে?

এই দেশের যে সকল সুধীজন মে মাসের ৫ তারিখে মতিঝিলে ‘গণহত্যা’র একজন প্রবক্তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাদের কাছে আমার শুধু ছোট একটা প্রশ্ন- তথ্যটি যদি মিথ্যা হয় তাহলেও কী আপনি তার পাশে এসে দাঁড়াবেন? বাক স্বাধীনতা চমৎকার বিষয়, আমি কয়েকজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি তারপরও যদি এই লেখাটি সেই পত্রিকায় ছাপা হয় সেটি বাক স্বাধীনতা। কিন্তু একটা মিথ্যা তথ্য যদি একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয় তখন সেই তথ্য প্রচার করার অধিকার বাক স্বাধীনতা নয়। তখন সেই অধিকার হচ্ছে মিথ্যা কথা বলার অধিকার।

এই দেশে এমনিতেই অনেক মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। এখন কী আমাদের অনুষ্ঠানিকভাবে সেটাকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে দিতে হবে?"

- মুহম্মদ জাফর ইকবাল
অধ্যাপক, শাহজাহাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×