somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভ্রান্ত..................

০৭ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


.................,
সত্যিই মাঝে মাঝে নিজেকে বিভ্রান্ত মনে হয়।জানিনা আমি যেরকম ধারণা পোষণ করি মানুষ গুলো আসলেই সেরকম কিনা?
তথাপি তাদের কার্যকলাপ দেখে আমার ধারণা শুধু বদ্ধমূলই হয়।

অযোগ্যের আস্ফালনে দেশের বাতাস দূষিত হয়ে গেছে।প্রতিদিন পথচলাতে আমার মনে হয় অধিকাংশ না হলেও যারা সামান্যতম সুযোগের অপব্যবহার করে বা যারা অপসুযোগের জন্য মুখিয়ে থাকে বা যারা অন্যের অধিকার নষ্ট করে নিজের স্বার্থ হাসিল করে তাদের সংখ্যা আমাদের সমাজে নিতান্ত কম নয়।জানিনা আমার ধারণা ঠিক কিনা?

তবে একটা বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আমরা সবাই পরিবর্তন চাই, কিন্তু কেউই নিজের জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে রাজি নই।আমরা সবাই পরিবর্তন চাই,কিন্তু কেউই নিজের অভ্যাসগুলো বদলাতে রাজি নই।তুমি-আমি সারাজীবন পরিবর্তন-পরিবর্তন করে চিৎকার করে মরে গেলেও কিছু হবেনা।

আমাদের জাতিগত কিছু বিষয়ে আমার অশ্রদ্ধা এসে গেছে।জাতি হিসেবে আমরা নিজেদের অনেক পরিশ্রমী মনে করি,কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে একপ্রকারের অনীহা।প্রায় কেউই নিজের দায়িত্বপালনে পঞ্চাশভাগও প্রচেষ্ট নই। আমার মনে হয় স্কুল-কলেজে যদি পরীক্ষা না দিয়েই পাশ করে যেত , অথবা যদি সারা মাস কাজ না করেওবেতন পাওয়া যেত তবে আমাদের চেয়ে সুখী আর কেউ হতনা। কাজের মাধ্যমে জীবনকে উপভোগ করতে আমরা প্রায় কেউই শিখিনি। জ্ঞান চর্চায় আমাদের তুমুল আপত্তি। আমরা আসলে চূড়ান্ত রকমের অলস,যদিও স্বীকার করিনা। পরিশ্রমকেই আমাদের যত ভয়।পরচর্চা করার অভ্যাসটা মারাত্বক রকমের প্রবল।অন্যের ভাল আমরা একদমই দেখতে পারিনা। নিজের ক্ষতি মেনে নিতে রাজি আছি,কিন্তু অন্যকেউ যাতে লাভবান হতে না পারে সেদিকে আমাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি।

আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজ আর পথ দেখাতে পারছে না ।আমারা তরুণ সমাজের একটা অংশ অন্তঃসারশুণ্য হয়ে গড়ে উঠছি। আমরা আমদের নিজেদের পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করি, নিজ সংস্কৃতির চর্চাকে smartness এর অভাব মনে করি,নিজ ভাষায় সুন্দর করে কথা বললে backdated মানে করি।কেউ পাশ্চত্য ,কেউ মধ্যপ্রাচ্য বা পাকিস্তানি আবার কেউ ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চাকে ধ্যান জ্ঞান করে নিয়েছি। আমার দেশের জারি-সারি-ভাটিয়ালি-ভাওয়াইয়া-মুর্শিদি- লালন-হাছন-নজরুল-রবীন্দ্রনাথ-অতুলপ্রসাদ আমাদের কাছে অপাংক্তেও।পরসংস্কৃতির চর্চা করে ভাবছি আমরা তাদের মত উন্নত হয়ে উঠব। কিন্তু কেউই ভেবে দেখি না যে নিজ সংস্কৃতিকে বাদ দেওয়া আর নিজ জন্ম পরিচয়কে অস্বীকার করা সমতুল্য। আর আত্মপরিচয়হীন পরগাছা হয়ে সার্বিক উন্নতি যে সম্ভব নয় তা আজও আমাদের বোধগম্য হয়ে উঠেনি । উপরন্তু চিরকালীন সত্যের মত অন্যের ব্যাধিই আমাদের মাঝে সংক্রমিত হয়,তাদের স্বাস্থ্য নয়। নিজেদের ভাল অংশটুকু বাদ দিয়ে আমরা অন্যের ভালোটুকুও গ্রহন করতে পারি না। ফলাফল যা হবার তাই হচ্ছে। অন্যের অন্ধ অনুকরণের ফলে আমাদের সৃজণশীলতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বেশ অনেকদিন আগেই । এখন আমরা নিজেরা কিছু সৃষ্টি করতে না পেরে আমাদের পুর্বসূরীদের সৃষ্টিগুলো বিকৃত করছি। সাময়িক খ্যাতির মোহে আমরা জীবনের চিরকালীন আবেদন কে ভুলে গিয়েছি। আমরা এখন মেকি আবেগ দ্বারা তাড়িত। আমাদের হৃদয়ের সুকুমারবৃত্তিগুলো হয় নষ্ট হয়ে গেছে অথবা কারও কারও বিকশিতই হতে পারেনি। সমাজের সকল ক্ষেত্রে ভাঙ্গন আমাদের সেই অবস্থারই প্রতিফলন। যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে সমাজে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য আমাদের সমাজের ভাঙ্গন কে তড়ান্বিত করছে।

আধুনিকতার দোহাই দিয়ে আমরা অনেক কিছুরই চর্চা করছি। এগুলো কতটা ভাল বা কতটা মন্দ সে ব্যপারে কেউই নিশ্চিত নই।মুক্তবাজার অর্থনীতির কবলে পড়ে দেশের মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠছে। ব্যাক্তি পর্যায়ে একটি দেশের অধিকাংশ মানুষ যাদের দুর্ণীতি করার সুযোগ আছে তারা যদি করে তবে সমাজের অবস্থা কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।মূল সমস্যা মনে হয় আমাদের ভোগবাদী হয়ে উঠাতে ।আমরা কিছু উৎপাদন করতে না পারলেও ভোগবাদী হতে কেউই দ্বিধান্বিত হই না । একটা চাকা বানানোর ক্ষমতা না থাকলেও আমাদের BMW, PAJERO বা নিদেনপক্ষে Toyota না হলে চলে না।জ্যাম এ সারা শহর অচল হয়ে যাক, আমাকে আমার status রাখতেই হবে।

সবাই সরকার অথবা প্রশাসনকে গালাগালি করতে পারি,অথচ ভাবিনা যে আমার নিজের দায়িত্ব কতটুকু পালন করছি।আমাদের দেশের একটা বিরাট অংশলোক অনুৎপাদনশীল, এই অর্থে যে আমরা ভাবি আমার বাবার যোগ্যতা দিয়ে আমিও চলে যেতে পারব।আমি নিজে কিছু করব -এই বোধসম্পন্ন লোকের বড় অভাব আমাদের দেশে।সত্যি আমি আমাদের কোন ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি না।

আমার কথাগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।কিন্তু কি করব বলো?আমি সত্যিই বিভ্রান্ত।
তুমি কি পারবে আমার বিভ্রান্তির অবসান ঘটাতে?
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×