somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবুধাবী শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ

০৫ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢেলে সাজানো হয়েছিল বেশ কদিন আগেই। এবারের ঈদ হবে সম্পূর্ন ব্যতিক্রমধর্মী একটি ঈদ। আমরা কজন পূর্ব পরিকল্পীত ভাবে ঈদুল ফিতরের অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছিলাম। ঈদের নামাজ পড়ে বের হবো ঘুরবো সারাদিন। ঈদের দিনের অনুষ্ঠানসূচিতে ছিল দুবাই থেকে আবুধাবী যাত্রা এবং আবুধাবী শেখ জায়েদ মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করা। সারাদিনের খাবার, পানীয় ইত্যাদি ওঠিয়ে নিয়েছি আমাদের গাড়িতে। সুতরাং ভ্রমণের কোনো ক্লান্তি ছিলনা কারোরই।

সুতরাং চলুন দেখি বিশ্বের বুকে অষ্টম স্থান দখলকৃত সৌন্দর্য্যময় ও কারুকাজ খচিত ব্যয়বহুল একটি স্থাপত্ব কীর্তি আবুধাবীর শেখ জায়েদ মসজিদ।

বলা যায় বিশ্বের বুকে এক অনন্য স্থাপত্ব আবুধাবীর শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ । ২০০৭ সালের পবিত্র রমজান মাসে উদ্ভোধন করা হয় এই ব্যয়বহুল মসজিদটি।

শেখ জায়েদ মসজিদের সংক্ষিপ্ত তথ্য
নির্মান ব্যয়: ২ বিলিয়ন দিরহাম বা ৫৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
উন্মুক্ত করা হয়: ২০০৭ সালের রমজান মাসে
মোট গম্বুজ সংখ্যা : ৮২ টি
এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন ৪০ হাজার মুসল্লি



মসজিদের প্রশ্চাদ পানে রয়েছি খোলা ময়দান। এরই ডানে বামে এবং পেছনে রয়েছি চতুভুজাকৃতি মসজিদের সাথে সংযোগ পথ যার বাম পাশের সংযোগ পথটি নিচের ছদিতে দেখা যাচ্ছে।


ওযুখানা থেকে বেরুবার পথে এভাবে দেখা যায় মসজিদের সোনালী রঙের কারুকাজ মন্ডিত খুঁটি।


খোলা ময়দানের পেছনের দরজা দিয়ে দেখলে দেখা যাবে মসজিদের উপর সাদা গম্বুজগুলির অপূর্ব সৌন্দর্য্য


মসদিজের ভেতরে গম্বুজের নিম্ন ভাগে সাদা পাথরের উপর নকশাকৃত কারুকাজ


চারটি প্রধান মিনার রয়েছে শেখ জায়েদ মসজিদে। এটি সম্মুখভাগের ডান পাশের মিনার।


মসজিদের বাহিরে এমনি লেজার লাইটের স্তম্ভ রয়েছে, যেখান থেকে সন্ধ্যার পর রঙ বেরঙের আলোক বর্তিকা মসজিদের সাদা গম্বুজ এবং সুউচ্চ মিনারের গায়ে অত্যন্ত সৌন্দর্য্যময় দৃশ্যের সৃষ্টি করে।


মসজিদের প্রধান অংশ



ত্রিকোণ বেষ্টনীর সাদা পাথরের উপর লতাপাতার নকশাকৃত খুঁটিগুলি দেখতে খুব মসৃন এবং দৃষ্টি কাড়া সুন্দর।


খোলা ময়দানের এক কোণ থেকে দেখলে এভাবে দেখাবে গম্বুজগুলি।


মসজিদের ভেতরে প্রধান গম্বুজের নিচে ঝুলানো আছে জার্মানীর তৈরি একটি বিশালাকৃতির ঝালরবাতি যেটি মসজিদের অভ্যন্তরীন সৌন্দর্য্য বর্ধনে প্রধান ভূমিকায় পালন করেছে।


জুম্মার নামাজের খুতবা দিচ্ছেন ঈমাম সাহেব।



সৌন্দর্য্য বর্ধনকারী মসজিদের অভ্যন্তরীন স্তম্ভ



দুটি স্তম্ভের মাঝখানে গম্বুজের নিচে দেখা যাবে এরকম কয়েকটি ঝালরবাতি, এগুলো আয়তনে একটু ছোট।



মসজিদের ভেতরে ঘুরে দেখছেন বিভিন্ন দেশ এবং জাতির পর্যটকবৃন্দ



আরো একটি অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন ঝালরবাতি



মসজিদের প্রবেশদ্বারে পাথরের উপর কারুকাজ খচিত লতাপাতা এবং বিভিন্ন প্রকার নকশা।


সোনালী রঙের নকশাগুলি দেখতে অত্যন্ত সৌন্দর্য্যময়



এটি মসজিদের মেহরাব যেখানে ঈমাম সাহেব দাড়িয়ে মুসল্লিদের সাথে নামাজ আদায় করেন। মেহরাবের দেয়ালটা সম্পূর্ন ভাবে ঢেকে দেয়া হয়েছে আসমাউল হুসনা অথাৎ আল্লাহ তায়ালার পুতপবিত্র সুন্দর সুন্দর ৯৯টি নাম দিয়ে।




এটি নামাজ আদায়ের বিশাল আকারের একটি দেয়াল ঘড়ি



এরকম কয়েকটি সৌন্দর্য্যময় ফুলের নকশা দেখা যায় মসজিদের ভেতরে বড় বড় স্তম্ভের মাঝখানের মেঝেতে যার উপর থেকে এবং মেঝের নিচ থেকে আলোক রশ্মির দ্বারা আরো বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ এবং প্রানবন্তর করে তুলেছে।



মসজিদের বর্ধিত অংশের উপর গম্বুজগুলি দেখতে আরো সুন্দর।


সম্মুখ থেকে মসজিদের প্রধান অংশ



পরিশেষে একটি অভিব্যক্তি______________________

আবুধাবী গ্র্যান্ড মসজিদটি দেখতে এসে দুই ভাবে বিস্মিত হলাম।

এক. এর কারুকাজ আর ব্যয়বহুল স্থাপত্ব গাঁথুনী দেখে।

দুই. হতাশ হলাম যে, মুসলমানদের সম্মানীত ও পবিত্র ধর্মীয় একটি ঘর (মসজিদ) কে আমিরাতের শেখগণ অবমুক্ত করে রেখেছেন সকল প্রকার টুরিস্টদের জন্য। যে কোনো ধর্মের নারী পুরুষ ঢুকতে বাধা নেই মসজিদের ভেরতে। এমনকি ক্যামেরা নিয়ে বিভিন্ন ভাবে ছবি তুলতেও কোনো প্রকার নিষেধ নেই। দেখতে পেলাম পর্যটকদের ভিড়ে নামাজরত মুসল্লিদের একাগ্র চিত্তে নামাজ আদায় করা হচ্ছেনা বেষ- ভোষনে ঢাকা চাকচিক্কময় মসজিদের ভেতর। এখানে এসে মনে হলো এটি মুসল্লিদের নামাজের স্থান নয় বরং বিলাশ বহুল মানুষদের দর্শনীয় একটি বিনোদনের স্থান মাত্র !
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:০৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×