somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্লিজ আমার মাকে কান্না করতে নিষেধ করো। আবা্র রোড এ্যাকসিডেন্ট; আবার পুত্রহারা মায়ের কান্না।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যালো আরিফ ভাই আমি নাজমুল।কেমন আছেন? আমি ভালো আছি তোমার খবর কি? সুইডেন হহতে কবে দেশে আসছো? কতদিন থাকবা? টেলিটকে বেড়াতে আসিও। তবে শুনো ১৭ তারিখের পরে আসিও কিন্তু, কারণ আমরা সবাই ছুটিতে গ্রামের বাড়ি চলে আসছি। এইপর্যন্তই কথা হলো নাজরমুলের সাথে। তার পর সেই চির চেনা জ্যামের শহর ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে বের হলাম। শিকড়েরর টানে গ্রামে ফেরার সেই অধ্যায়কে পিছনে ফেলে পিচডালা কালো রাস্তায় ভো-ভো করে ছুটে চলতে লাগলো আমাদের প্রাইভেট কারটা। ছোট বেলায় যে বালুর মাঠটাতে আমরা গোল্লাছোট গেলতাম সেটাকে পাড়ি দিয়ে গাড়ি ক্রস করতে লাগলো আমাদের ফুটবল খেলার সেও মাঠটাও। আজকেউ কিছু ছেলেকে দেখালাম বিকালের মিষ্টি আলোতে ফুটবল নিয়ে খেলা করতে। আমার ছোট্রবেলার বন্দু জোবায়েরের বাতিজা আসিফকে দেখলাম বলনিয়ে ছুটতে একেবারে গোলপোষ্টের সামনে শর্ট মারতে কিন্তু অল্পের জ্ন্য মিস করলো গোলপোষ্টটা।দেখে আমারই খুব রাগ হচ্ছিল ছেলেটার উপর এই ভেবে যে,কেনো যে এতো সহজ সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারলো না । আজকালের ছেলেরা ফুটবল খেলাটাকেই মনে হয় ভুলে গেছে।শুধু ক্রিকেট নিয়েই ওরা খুব ব্যাস্ত থাকে।আমাদের সময়ের সেই ফুটবল!দক্ষিন পাড়া-উত্তর পাড়া, বিয়েয়ালা-বিয়েছাড়া,ছাত্র-শ্রমিক আরো কতো কি নামে এক একটা ফুটবল দলের নাম হতো! বিষ্টিতে বিজে কাদা পানিতে ভিজে ভিজে ফুটবল খেলার মজাটা কি আজকের জ্যনারেশন কল্পনা করতে পারবে? সে যাই হোক আমাদের গাড়িটা দিরে দিরে আমার চির চেনা গ্রামটাকে পাড়ি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ ঢাকার দিকে। রাস্তার পাশে সরকারি সাইনবোর্ডগুলোতে মাঝে মাঝে চোখে পড়তেছে ঢাকা ১৫০ কিলোমিটার। ঢাকা ৯৯ কিলোমিটার। ডিজিটালের বাংলাদেশে সরকার কেনো যে এখনো সিমেন্টের খাম্বাতে এই নাম্বারগুলো লিখে রাখে তা আমার বুঝে আসলো না। আমাদের দেশের বাস-ট্রাক ড্রাইভার এমন কেনো? গাড়ি চালানোর সময় মনে হয় তাদের কোন হুশ-ঞ্জান কাজ করে না। যেমন ইচ্ছা তেমন করেই গাড়ি চালায়। নিজে যাইতে পারলেই যেনো বাচে তাতে অন্য কারো জীবন গেলেও যেনো তাদের কিচ্ছু আসে যায় না। কোন সিগনাল-টিগনালের বালাই নাই। সর্বোচ্চ ৭০কিলো/১০০কিলো লিখে যে সমস্ত বার্তা মহান ড্রাইভারদের উদ্দেশ্য লিখে দেওয়া হয়েছে তাতে যেনো তাদের কিচ্ছু আসে যায় না। রাস্তা মোড় কিম্বা সরু ব্রিজ কোন কিছুই যেনো তাদের ওভারট্রেকিংয়ের জন্য বাধা হয়ে দাড়ায় না। এই রকমই হাজারো চিন্তা করতে করতেই আমাদের প্রাইভেট কারটা চলে এসে পেৌছেছে মুন্সিগঞ্ছের ছোট্র একটা ব্রিজের উপর।বড় একটা হাইওয়ে বাস আমাদের গাড়িকে ক্রশ করতে করতেই অন্য একটি দানব বাস সামনের বাসকে ওভারট্রেক করতে গিয়ে আমাদের ছোট্র প্রাইভেট কারটাকে আস্তে করে চাপা দিয়ে আমাকে পাঠিয়ে দিলো সাভার গন-স্বাস্থ হাসপাতালে।ডাক্তারদের হাজারো চেষ্টা-তদবিরকে ফাকি দিয়ে সম্মানিত ফেরেস্তা আজরাঈল (আঃ) আমাকে নিয়ে চললো আমার রব আল্লাহ-তায়ালার কাছে। আমার মাথার ভিতের বয়ে যাওয়া রক্তের বন্যায় ভাসতে ভাসতে আমি চরে এলাম অজানা-অচেনা এক দেশে। যেখানে টেলিটকের সেই চিরচেনা পরিবেশ,আড্ডামারার সেই প্রিয়মুখগুলোর দেখা পাচ্ছি না। চিরচেনা পরিবেশটাকে কেমন যেনো অপরিচিত লাগতেছে। সবার চেহারাতেই যেনো কেমন শুন্যতা অনুভব হচেছ। তবে কি বিশেষ কিছু হয়েছে নাকি? কেউ কিছু না বললেও সিস্টেম অপারেশনের সেই ছোট্র রোমটাতে ১টা শুন্য চেয়ার যেটাতে আজ কেউ কেন যানি বসতেছে না। তবে কি চেয়ারটাতে কোন সমস্যা? নাকি তার পা ভেঙ্গে গেছে? চেয়ারটাকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করলাম কিন্তু তার কোন অংশইতো ভাঙ্গা দেখলাম না্। তবে কি তার অন্তর আত্নাতাই উড়ে গেছে! যা আমাদের চর্মচক্ষুতে দেখা যাচ্ছে না। তবে কি অন্তর আত্নাকে উজার করে দিলেই কেবল মাত্র চেয়ারের শুন্যতাকে অনুভব করা যাবে? সে যাইহোক, বাসায় আমার মা কেনো কান্নাকাটি করতেছে? আমার জন্য? কিন্তু কেনো? আমি আর কখনো তার বুকে মাথা রেখো ঘুমাতে যাবো না তাই? নাকি সময়ে অসময়ে বাস্তব-অবাস্তর অনেক বায়না ধরি তোমাকে ভিরক্ত করি বলে? না মা আমি আর কোনদিন তোমার সাথে রাগ করে খানা-দানা বন্দ করবো না।তোমার সাথে রাগ করে গোসল না করে খালি মুখে অফিসেও আসবো না। লক্ষি মা আমার! তুমি শুধু আমাকে মাফ করে দাও তাহলেই হইতো খোদাও আমাকে মাফ করে দিবে। আমি না থাকলেওতো আমার ভাইয়া/আপুরাতো আছেই তাই না? শুধু আমিই একা হয়ে গেলাম এই আরকি!আর কোনোদিন ৯৯ রূপায়ন গোল্ডেন এইজ, গুলশান-২,ঢাকার ৩তলার টেলিটক অফিসের সেই ছোট্র রোমের এক কর্নারের সেই চেয়ারটাবতে আরিফ নামের আমি আর কোন দিন বসতে যাবো না। জোবায়ের ভাই,রানা ভাই,আসিফ নাসের ভাইদের সাথে নিচে বিপ্লবের দোকানে চা খাইতে যাইতে পারবো না। আমাদের অফিসের সিড়িতে সবার সাথে দাড়িয়ে দাড়িযে সিগারেট নামের বস্তুটার সাথে আর কোনদিন দেখা হবে না। কামরুল হুদাটা অনেক আগেই আমাদের কাছ থেকে কানাডায় চলে গেছে। উকেও অনেক মিস করতাম । এএম হওয়ার দিন হুদা খুশির চুটে রিয়াজ স্যারকে পা ধরে সালাম করার দূশ্যটা আমার এখনো মনে পড়লে হাসতে হাসতে অস্থির হইয়া যাই। বখতিয়ার-সহিদভাই আরো কতো পরিচিত মুখ আর কোনদিন দেখবো না ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। আমার ভালো লাগুক আর নাই লাগুক আমার তো অন্যকিছু করার ক্ষমতাই নাই, তাই তোমাদেরকেই বলিঃ সময়ের হাজারু ব্যাস্ততার মধ্যেই আমার জন্য শুধু একটু দোয়া করিও যাতে খোদ-তায়ালা আমার উপর রহম করেন আর আমাকে চিরদিনের জন্য ক্ষমা করে দেন। অন্তর অস্তিত্বের শেষ বিন্দুকণা দিয়ে বলিঃ ক্ষমা করে দিও আমাকে। আর আমার সাথে দেখা হওয়ার আগে ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে আসিও। কারণ এখানকার মালিকের সাথে বান্দার আত্নীয়তার কোন সম্পর্ক নাই আছে শুধু আবদিয়াতের তথা ইবাদতের সম্প্যর্ক। যার আমল যত সুন্দর হবে তার সাথে তত বেশি ভালো ব্যাবহার করা হবে।


২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×