somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান
চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

দাগ-১১ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের)

০২ রা অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিত্য দিনের মতো শুভ্র কাজ করছিল। একের পর কাজ যেন শেষ নেই। শুভ্র একটা কাজ শেষ করে চেয়ারটা উর্মীর দিকে ঘুরিয়ে নিল। এমন সময় শুভ্রর মোবাইলে একটা এস.এম.এস ঢুকল।
শুভ্র এস.এম.এসটা পড়ে মুচকি হাসল।
উর্মী জিজ্ঞেস করল, কে এস.এম.এস পাঠিয়েছে?
যন্ত্রণার কথা আর বলো না।
কেন? কিসের যন্ত্রণা?
কাল থেকে একটা মেয়ে আমার পিছু লেগেছে।
পিছু লেগেছে মানে?
মানে আমার সঙ্গে ফ্রেন্ডশীপ করবে।
বেশ তো, আনন্দের কথা, করে ফেলুন।
কি বল তুমি?
হ্যাঁ অবশ্যই করবে। তুমি দেখেছ মেয়েটাকে?
না।
মেয়েটা ঢাকায় থাকে?
হ্যাঁ।
দেখা কর, কথা বল।
যার সঙ্গে ফ্রেন্ডশীপই করব না, তার সঙ্গে কথা বলব কেন? দেখা করব কেন?
আরে বাবা অসুবিধা কি?
অসুবিধা আছে, এখন বলছে ফ্রেন্ডশীপ করবে, ক’দিন পর বলবে আমি তোমাকে ভালবাসি, তারপর বিয়ে করতে চাইবে।
হ্যাঁ সবই তো ঠিক। তুমিও তো মেয়ে দেখছ, সেরকম যদি হয়েই যায় তবে তো খুব ভাল।
তোমার মাথা খারাপ? আমি যাকে ভালবাসি সেই-ই আমার বন্ধু, সেই-ই আমার প্রেম, সে-ই আমার সব।
মেয়েটা কি লিখেছে? আমাকে দেখানো যাবে?
হ্যাঁ অবশ্যই।
না, তোমার মোবাইলের ইনবক্স আমি দেখব না, তুমি পড়ে শোনাও।
আগে গতকালকের এস.এম.এসটা শোন, বলে শুভ্র গত কালকের ম্যাসেজটা পড়ে শোনাল।
শুনে উর্মী বলল, ম্যাসেজটা খুব সুন্দর তো।
শুভ্র হেসে বলল, আমি কালকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ভালবাসা এবং বন্ধুত্বের মধ্যে ডিফারেন্স কি?
তাই আজ আবার ভালবাসা এবং বন্ধুত্বের ডিফারেন্স লিখে পাঠিয়েছে।
Love & friend are walking village.
love falls into a hole, why?
Because love is blind.
Friend also jumps inside, why?
because a friend will do anything for friendship.
Nokshi
মেয়েটা তো খুব সুন্দরভাবে ম্যাসেজ লিখতে পারে।
হ্যাঁ তাই তো দেখছি।
শুভ্রর মোবাইলের রিং বেজে উঠল।
সে রিসিভ করল, হ্যালো।
হ্যাঁ একটা এস.এম.এস পাঠিয়েছি, পেয়েছেন নিশ্চয়ই।
হ্যাঁ পেয়েছি।
রিপ্লাই দিবেন না।
দেখুন আমি এখন খুব ব্যস্ত, প্লিজ আমাকে বিরক্ত করবেন না।
এখন ব্যস্ত আছেন তাহলে রাতে রিং দিব।
না রিং করলে খুশি হব, বলে শুভ্র মোবাইল রেখে দিল।
উর্মী জিজ্ঞেস করল, কে?
ঐ ম্যাসেজওয়ালী।
রিসপন্স কর।
উর্মী আসলে আমি এ ব্যাপারে তোমার কাছ থেকে পরামর্শ চাচ্ছি না, বলে শুভ্র তার কাজে মনোযোগ দিল।
উর্মী বুঝতে পারল শুভ্র তার কথায় মাইন্ড করেছে সেও তার কাজে মনোযোগ দিল।
সারাদিন আর দু’জনে খুব একটা কথা হলো না। বিকেলবেলা দু’জনে অফিস থেকে বেরুবে এমন সময় উর্মীর মোবাইলের রিং বেজে উঠল।
উর্মী মোবাইলের মনিটরে আশার নাম দেখে তার বুক কেঁপে উঠল। সাধারণত কোন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া আশা মোবাইল করে না।
উর্মী কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়ল, কোন দুঃসংবাদ নাই তো?
সে শুভ্রকে বলল, শুভ্র তুমি একটু বস প্লিজ, আমি কথা সেরে নিই।
আচ্ছা।
উর্মী মোবাইল রিসিভ করল, হ্যালো আপা।
উর্মী তোমার কোন খবর নাই কেন? অনেকদিন থেকে মোবাইল কর না।
আপা আসলে অফিসের কাজে প্রায়ই ব্যস্ত থাকি তো, সরি আপা।
না সরি বলার প্রয়োজন নাই, ব্যস্ত থাকাই ভাল, না হলে তো আবার মন খারাপ হবে।
আপা আপনি কি মনে করে?
কিছু মনে করে না, আসলে সব সময় তোমার খবর নিতে চাই কিন্তু সময় করতে পারি না।
আমিও আপনাকে খুব মিস্ করি আপা, আসলে আপনি এগিয়ে না আসলে আমি কোথায় খড়-কুটার মতো ভেসে যেতাম।
শুভ্র উর্মীর কথায় মনোযোগ দিল। সে আপন মনে বলল, মানে?
উর্মী আবার বলতে শুরু করল, একবার আসুন না আপা আমার হোস্টেলে? আমি খুব খুশি হব, আপনি তো জানেন আপনি ছাড়া আমার খবর নেওয়ার মতো কেউ নাই।
হ্যাঁ তোমার সঙ্গে দেখা করার জন্যই তো আসব, তুমি কখন হোস্টেলে ফিরবে?
আধঘন্টার মধ্যে।
আচ্ছা আমি আসছি।
আপা কোন দুঃসংবাদ নাই তো?
না।
উর্মী চোখ মুছল।
শুভ্র যেন আবারও দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে গেল, উর্মীর আপা মানে? উর্মী যদি মায়া হয়ে থাকে তবে তো ওর কোন বড় বোন ছিল না, ওর বাবা-মা ছিল, ও প্রতিষ্ঠিত পরিবারের মেয়ে, ঢাকায় ওদের অনেকে আছে। উঃ অসহ্য শুভ্রর চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ।
উর্মী বলল, সরি শুভ্র তোমার দেরি করে ফেললাম।
তোমার আপা মোবাইল করেছিল?
হ্যাঁ।
তোমার হোস্টেলে আসবে?
হ্যাঁ।
তোমার আপা আছে সেটা তো কোনদিন বলনি?
উর্মী যেন কিছুটা বিব্রতবোধ করল, সেরকম প্রসঙ্গ কোনদিন আসেনি তো তাই বলিনি।
সরি উর্মী তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলে ফেললাম।
উর্মী হোস্টেলে পৌঁছার আগেই আশা পৌঁছে গেছে।
উর্মী গেট দিয়ে ঢুকতেই আশা রিসিপশন থেকে বেরিয়ে এলো।
আমার রুমে আসেন আপা।
আশা উর্মীর পিছনে পিছনে তার রুমে গেল।
আশা হেমার বিছানায় বসল, কেমন আছ উর্মী?
জি আপা ভাল।
বাড়ী থেকে তোমার বাবা মোবাইল করেছিল।
উর্মী কোন আগ্রহ দেখাল না।
বলল তুমি নাকি অনেকদিন থেকে লতাকেও মোবাইল কর না। লতা তোমার আগের নাম্বারেমোবাইল করে তোমাকে পায়না। তুমি সিম কার্ড পাল্টিয়েছ নাকি যদি সিম কার্ড পাল্টিয়ে থাক তবে তোমার নতুন মোবাইল নাম্বার চাচ্ছিল।
আপা আমি লতাকে মোবাইল নাম্বার দিয়েছি, ওর সঙ্গে প্রায় কথা হয় কিন্তু আমি ওকে আমার নাম্বার দিতে নিষেধ করেছি। আপনি কখনো আমার মোবাইল নাম্বার দিবেন না আপা।
না আমি তোমার মোবাইল নাম্বার দিইনি।
থ্যাংকস্ আপা।
আচ্ছা এখন তোমার খবর বল।
এমনি ভাল আছি আপা তবে..
তবে কি বল?
আপা আমরা একসঙ্গে চাকরি করি ছেলেটার নাম শুভ্র, বলে উর্মী একটু থামল।
থামলে কেন? বল?
উর্মী শুভ্রর সঙ্গে পরিচয় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সমস্ত ঘটনা বলল।
আশা সবকিছু শুনে বলল, ছোটবেলা তোমাকে ভালবাসতো, সেজন্য তোমার প্রতি তার উইকনেস্ আছে কিন্তু যখন তোমাকে দেখবে, সবকিছু শুনবে তখন তার মোহ কেটে যাবে।
উর্মী কিছু বলল না।
আশা আবার বলতে শুরু করল, আগে ভালভাবে ভেবে দেখ, জীবনটা একদিনের জন্য না।
আমিও তাই ভাবছি আপা।
আসলে তুমি এখন অনেক বড় হয়েছ। নিজের ডিসিশন নিজে নিতে পারবে তবে তাড়াহুড়া করবে না।
থ্যাংকস্ আপা।
দু’জনে আরো অনেক গল্প হলো। উর্মী আশাকে কফি বানিয়ে খাওয়াল। তারপর আশা বিদায় নিল।
চলবে...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×