somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার জন্য জ্রেবাক্রসিং ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফুটওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পারাপার বৃদ্ধ, মহিলা, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং মালামাল নিয়ে হেঁটে চলাচলকারীদের জন্য সহায়ক নয়। অথচ অনেকের পক্ষে অসম্ভব এই কাজটি না করলে ১ নভেম্বর থেকে ২৪ ঘন্টার জেল প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল সাপেক্ষে নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার জন্য জেব্রা ক্রসিং ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিন। তথ্যসুত্র

আজ সকাল ১১:০০ টায় শাহবাগ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজের পাদদেশে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “ফুটওভারব্রিজ পথচারীবান্ধব নয়, ২৪ ঘন্টার জেল অগণতান্ত্রিক-নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার জন্য জ্রেবা ক্রসিং চাই” শীর্ষক প্রতীকী কর্মসূচীতে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন, ঢাকার ৬০% চলাচল হয় পায়ে হেঁটে। পথচারীদের প্রাধান্য দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বললেও পথচারীদের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে চলাচলের জন্য কোন পদক্ষেপ নেই। ঢাকা পৃথিবীর একটি শহর যেখানে এত সংখ্যক পথচারী থাকা স্বত্বেও বর্তমানে কোন জ্রেবা ক্রসিং নেই বললেই চলে, অথচ একসময় এই পদ্ধতিতেই রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা ছিল।

নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে মূলত প্রাইভেট গাড়ি চলাচলকে প্রাধান্য দিতেই পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার মত অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। হেঁটে চলা মানুষের অধিকার, অথচ এ ধরনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যাদের শারীরিকভাবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাদের হাঁটার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের সমান অধিকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত।

বক্তারা আরো বলেন, ঢাকা শহরে বিভিন্নভাবে পথচারীদের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। রাস্তার মাঝখানে লোহার গ্রীল, প্রাইভেট গাড়ী পার্কিং করে ফুটপাত দখল, স্থাপনার জিনিসপত্র ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা, ফুটপাত সংকুচিত করা, বাড়ী ও দোকানে গাড়ি ঢোকাতে ফুটপাতে কিছুক্ষণ পরপর কেটে নিচু করাসহ বিভিন্নভাবে মানুষ হেঁটে চলাচলে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছে। অথচ হাটার জন্য কম জায়গা দরকার, দূষণ হয় না, জ্বালানী ব্যয় নাই।

সবচেয়ে বড় কথা হেঁটে চলাচলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এ সকল বিবেচনায় সারা বিশ্বজুড়ে শহরে পথচারীদের প্রাধান্য দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরো সুসংহত করছে। অথচ ঢাকা শহরে সকল সিদ্ধান্ত, আইন-নীতিমালা, প্রকল্প সবকিছুতেই পথচারীদের উপেক্ষা করা হচ্ছে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকায় মাত্র প্রাইভেট গাড়ী ব্যবহারকারী ২% মানুষের সুবিধা নিশ্চিত করতে গিয়ে শহরের ৯৮% মানুষের সুবিধাকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। ঢাকা শহরের ফুটপাতগুলো আজ দখল হয়ে গেছে প্রাইভেট গাড়ীর পার্কিং-এ। উশৃঙ্খল প্রাইভেট গাড়ী চালকদের উচ্চগতি, শব্দদূষণের কারণে অনেক রাস্তায় মানুষের চলাচল দায়। যানজট, দূষণ, জ্বালানী ব্যয় বৃদ্ধির জন্যও দায়ী প্রাইভেট গাড়ি।

ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে জনগনকে বাধ্য করতে ২৪ ঘন্টার জেল দেয়ার বিষয়ে যোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, এ ধরনের কর্মকান্ড সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করবে। যে সকল ব্যক্তিরা মন্ত্রীকে এ ধরনের পরামর্শ দেয় তাদের থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।

কোন ব্যক্তিগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা বিষয়ক পরামর্শ গ্রহণ মন্ত্রীর জন্য বাঞ্চনীয় নয়। বরং জনস্বার্থ রক্ষা ও জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রীর কার্যক্রম সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জল করবে। এজন্য অবিলম্বে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা প্রয়োজন। বক্তারা দূর্ঘটনা হ্রাসে শহরে গাড়ি চলাচলের গতি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেন। পাশাপাশি ঢাকার সর্বত্র জেব্রাক্রসিং ফিরিয়ে এনে তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার উপর জোরারোপ করেন।

কর্মসূচিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন লোকসঙ্গীত বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বয়াতী, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, সিরাক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত, নগরবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাজী আনসার আলী, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার মারুফ রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন এর সদস্য ডাঃ নুর উদ্দিন প্রমুখ। কর্মসূচি পরিচালনা করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সহ: সম্পাদক তৌফিকুর রহমান সেন্টু।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৮
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×