অ্যাপোলো-১১ নভোযানের মই বেয়ে নীল আর্মস্ট্রং তখন চাঁদে অবতরণের মাহেন্দ্রক্ষণে! মানুষের প্রথম চাঁদে পা ফেলার ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অস্ট্রেলিয়া থেকেও রেকর্ড করা হয়েছিল অবিস্মরণীয় সেই দৃশ্যের। যুক্তরাষ্ট্রে নাসার করা রেকর্ডের চেয়ে অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল অস্ট্রেলিয়ার ফুটেজ। অথচ এই ফিল্ম-ফুটেজটির দীর্ঘদিন ধরে হদিস পাওয়া যাচ্ছিল ছিল না।
ফুটেজটি মাত্র কয়েক মিনিটের হলেও এটি চন্দ্রাভিযানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সম্প্রতি খুব বাজেভাবে নষ্ট অবস্থায় এই ঐতিহাসিক ফুটেজটি আর্কাইভ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই অ্যাপোলো-১১ চাঁদে যাত্রা করে। এই অভিযানে অংশ নেন দলপতি নীল আর্মস্ট্রং, কমান্ড মডিউল চালক মাইকেল কলিন্স, এবং চাঁদে অবতরণযানের চালক এডউইন অলড্রিন। ২০ জুলাই আর্মস্ট্রং চাঁদের পিঠে পা ফেলেন।
নভোযানের মই বেয়ে আর্মস্ট্রংয়ের এই চাঁদে অবতরণের দৃশ্যটি সে সময় অস্ট্রেলিয়া থেকেও রেকর্ড করা হয়েছিল। অথচ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঠিক সে মুহূর্তে রেকর্ড করার জন্য পরিষ্কার সিগন্যাল খুঁজে পাচ্ছিল না নাসা। ফলে এখন পর্যন্ত মানুষের চাঁদে অবতরণের প্রথম যে চিত্রটি বিশ্বজুড়ে প্রদর্শন করা হয়, তার তুলনায় অস্ট্রেলিয়া থেকে ধারণ করা ফুটেজের ছবি অনেক বেশি পরিষ্কার। অ্যাপোলো ১১ মিশনে রিমোট নিয়ন্ত্রিত টেলিস্কোপের সাহায্যে অস্ট্রেলিয়া টেলিভিশন সিগন্যাল ধরাণ করাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আর্মস্ট্রং যে সময় (গ্রিনিচ মান সময় ১২-৩৬) চাঁদের মাটিতে হাঁটা শুরু করলেন, সে সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাঁদের অবস্থান ছিল দিগন্ত রেখার সামান্য নিচে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নাসা আর্মস্ট্রংয়ের চন্দ্রপিঠে হাঁটাহাঁটির প্রাথমিক দৃশ্য পরিষ্কারভাবে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়।
অস্ট্রেলীয় অংশ থেকে এই চন্দ্রাভিযানের দৃশ্য ধারণের দায়িত্বপ্রাপ্ত নভোচারী ও ইতিহাসবিদ সারকিশান বলেন, নাসা সে সময় ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ডস্টোন স্টেশন সিগন্যাল ব্যবহার করেছিল। পারিপাশ্বিক অবস্থার ভুল অবস্থানের কারণেও সেই সিগন্যাল যথার্থ ছিল না। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার স্টেশন থেকে এসব সিগনাল যথার্থভাবে ধরা দেয়। ফলে সেই ফিল্ম ফুটেজে আর্মস্ট্রংকে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এ ফুটেজটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র : এএফপি।
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৩