somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: নামটা এখনো ঠিক হয়নি -২

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব ১: Click This Link


জাকির সাহেব সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠেন। অফিসে আসেন ৮.৩০ এর মধ্যে। অফিসে একটু দেরীও চলে কিন্তু তিনি সময় মতো চলে আসেন।

বিশ্বস্ত পিয়ন ডাকার আগেই কাগজ আর ধুমায়িত কড়া কফি দিয়ে যায়। ম্যানেজারের জন্য আলাদা কক্ষ। উত্তর দিকে জানালা থাকলেও উঁচু পাচিলের জন্য বাইরেটা পুরো দেখা যায় না। অধিকাংশ অফিসে জানালাই থাকে না। এর চেয়ে এ ঢের ভাল। একটু পরই মিটিং। দেয়ালে ক্যালেন্ডার লাল কালিতে জরুরী তারিখগুলো দাগানো।

তার সন্তানের কথা মনে হল। টেবিলে কলমদানীতে ছোট একটা ছবির ফ্রেম। একমাত্র ছেলে জহিরের ৫ বছরের ছবি। স্টুডিওর আঁকা ব্যাকগ্রাউন্ড। হাতে একটা খেলনা বন্দুক নিয়ে বাচ্চাটা পাখি শিকারের ভান করছে। ছবিটা মজার কিন্তু জাকির সাহেবের একটু অস্বস্থি হয়। বাচ্চাদের বন্দুক নিয়ে খেলতে দেয়া তার অপছন্দ। ছেলেরা নষ্ট হয় বন্দুক হাতে দিলে। ফটোগ্রাফারের পীড়াপিড়িতে রাজী হয়েছিল। লোকটা এমন ভাবে বলছিল! স্যার বন্দুকটা নিয়া একটা ফটু তুলেন, ভালা না হইলে পয়সা দিয়ে না। আর ১০ মিনিটে আপনার বাচ্চা নস্ট হইব না। জাকির সাহেবও রাজি হয়েছিলেন।মানুষ যে কত কিছু নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে করে।

আজকে রাস্তায় কাজ চলছে বলে ট্রাফিক জামটা অস্বাভাবিক। হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন। পিয়ন এসেছে কিনা জানার জন্য বেল বাজালেন। টেবিলে খবরের কাগজ। সুতরাং পিয়ন এসেছে। এমন সময় তার মোবাইলে অনেকগুলো মিসকল চোখে পড়লো। ভয়েস মেসেজ। জহিরের মার মোবাইল নম্বর।

জাকির সাহেব অবাক হলেনা না। তার স্ত্রী বরাবরই বেশী নার্ভাস আর কাঁদুনে। জহির কালকে তার বন্ধুর সঙ্গে শ্রীরামপুর গেছে। সেই নিয়ে রাত জেগেছেন। ছেলে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর কী বাচ্চা থাকে? অফিসে আসার আগেও একই মন খারাপ। একরাশ বিরক্তি নিয়ে কলব্যাক করতেই স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদতে থাকে,
-তুমি আজকের পত্রিকা দেখনাই? আল্লাগো, তুমি কেমন বাপ? ফোন বন্ধ করে আছ!?
-না, তো, কি হয়েছে। দ্রুত পত্রিকা খুললেন। স্ত্রী তখন বলেই চলছিল
-জহিরের ট্রেনে ডাকাতি হয়েছে। আল্লাহ!..

জাকির সাহেব পত্রিকায় হেডলাইন পড়ে চুপ হয়ে যান

দুর্ধর্ষ ট্রেন ডাকাতি। ১ জন নিহত ১০ জন আহত।

গতকাল আন্ত:নগর ট্রেনে শ্রীরামপুর স্টেশনে ১০ মাইল উত্তরে লতিফনগরে যাত্রীবেশে কতিপয় ডাকাত ছোরা এবং চাপাতি নিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করে। প্রত্যক্ষদর্শীর মতানুসারে ক৯ কামরায় এই ঘটনা সংঘটিত হয়। ডাকাতেরা ছোরার মুখে এক মধ্যবয়ষ্ক লোককে জিম্মি রেখে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। জনৈক মনসুর আহমদ এটার প্রতিবাদ করায় তাকে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত করা হয়। এর পর যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে গেলে এলোপাথারী ছুরির আঘাতে ১০ জনকে আহত করে তারা চেন ট্রেনে নেমে যায়।

জাকির সাহেবের বুধটা ধক ধক করতে লাগলো। জহিরের কামরার নম্বর তো জানা নেই। জহির কী সেই কামরাতেই? গতকাল জহির পৌছে দেয়ার জন্য তিনি স্টেশনে যেতেন, অফিসের ঝামেলায় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু অফিসটা কি এতই জরুরী, পুত্রের চেয়েও?

জাকির সাহেবের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছিল। রেলওয়ের পাবলিক রিলেশনে ল্যান্ড লাইনে ফোন করে কিছু জানা গেলনা। বড় সাহেব কে বলে তিনি কমলাপুর স্টেশনে গেলেন। স্টেশনে গিয়েই একটা তালিকা পেলেন এবং জাকিরের নাম সেখানে। সরাসরি না, তবে লেখা অজ্ঞাতপরিচয় ধারী ১৭/১৮ বছর, নীল জামা, কালোপ্যান্ট, শ্রীরামপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জাকিরের সঙ্গে মিলে যায়।

জহিরর ভ্রমনসঙ্গীর বদরুলদের বাসায় ফোন আছে কিন্তু ধরছে না কেউ। এখন বদরুলের বাসার সবাই কি ব্যস্ত? তবে কি ডাকাতিতে এমন কিছু হয়েছে যার জন্য বদরুলের বাসার সবাই ব্যস্ত। হলে তাদের বাসায় কেন জানাবে না? মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠছিল। স্ত্রীর লো প্রেশারের সমস্যা। তাকে ভেঙে পড়তে দেয়া যাবে না।

ফোন করে তাকে একটা মিথ্যে বললেন, আমি রেলওয়েতে কথা বলেছি, সেটা প্রথম শ্রেনীর বগী। বদরুল আর সে প্রথম শ্রেণীতে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বদরুলের বাসায় ফোন বিজি, আবার ফোন করে নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছি।
-হ্যালো, সিদ্দিক সাহেবের বাসা?
-জ্বি, আমি বদরুল, কেমন আছেন আঙ্কেল
-তুমি! তুমি এখানে? জহির তোমার সঙ্গে না?
-জহির? আমি তো মামার অসুখের জন্য শ্রীরামপুরে যাইনি। ওর সঙ্গে আমার দেখাও হয়নি

জাকির সাহেব মনে হয় মাথা ঘুরে যায়। বলে,
-কিন্তু বদরুল, জহির যে তোমার কথা বলে গেল। ও তাহলে গেল কোথায়? আর কোথায় থাকবে? ও কী শ্রীরামপুরে তোমাদের বাসা চেনে?
-ঠিকানা নিয়েছিল কিন্তু ..
-ফোন আছে সেই শ্রীরামপুরে?
-না
-ওখানে আজকে দেখলাম ট্রেন ডাকাতি। যাত্রীরা আহত। তালিকায় ওর বয়সী ওর জামার রঙের সঙ্গে মিল এক অজ্ঞাত যাত্রী।
-দাঁড়ান আঙ্কেল আমি দেখছি।

ফোনটা রেখে জাকির সাহেব ঢক ঢক করে একগ্লাস পানি খেলেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ভেঙে পড়লে সর্বনাশ। জীবনের এমন অদ্ভুত সঙ্কট। একটা বাসের টিকেট কাটতে হবে। ঠিক তখনই শ্রীরামপুর সদর হাসপাতালে রওয়ানা দেয়া ছাড়া উপায় নেই।

যথারীতি বিকেলে শ্রীরামপুরে এলেন। সঙ্গে বদরুল। এসে শুনলেন, খবর খারাপ না। সেই অজ্ঞাত ছেলেটা যাকে জহির বলে ভাবা হচ্ছিল তার তেমন কিছু হয়নি। অনেক আগেই ছাড়া পেয়ে চলে গেছে।

এক দিকে নিস্তার পেলেও জহিরের জন্য দু:শ্চিন্তা কমলো না। জাকির সাহেব কি করবেন ভাবতে পারছিলেন না। পরিচিত সব জায়গায় ফোন করলেন। কেউ জানে না। ছেলেটার দিকে প্রচন্ড বিরক্তি এবং রাগ হলো তার। এত শিখিয়ে শেষ পর্যন্ত কিনা একটা মিথ্যেবাদী সন্তানের বাবা হলেন!

তার কলিগের বুদ্ধিতে দৈনিক পূর্বআলো পত্রিকায় একটা নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিলেন পাসপোর্ট সাইজ ছবি সহ। জহির কোথায় জানাতে পারলে পুরষ্কার নগদ ২০,০০০ টাকা।


নগরকান্দি থানা শহর। ট্রেনের বুড়ো লোকটার সঙ্গে রিকশায় কথা হয়।
-বাড়িটা পুরনো, আমাদের পুর্বপুরুষ জমিদার ছিল। তোমার হয়তো ভাল লাগবে।
-আপনি?
-আমি কলাবাগানের বাড়িতে থাকি। শরীর খারাপ। চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে থাকা সুবিধার।
ছেলেমেয়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন,
-ছেলেপুলে বিদেশে থাকে। সবাই ব্যস্ত। দেশে এলেও গ্রামে যেতে চায়না। একটা কেয়ারটেকার আছে। ক্ষেতে কাজ করার জন্য বিশ্বস্ত কামলা, আর বংশপরম্পরায় থেকে যাওয়া কয়েকজন পুরনো ভৃত্য। তবে পুর্বপুরুষের টান। এখানে থাকলে বাবার কথার মনে হয়। শৈশবের কথা মনে হয়।
-ট্রেনে যে স্টেশনটা চিনলেন না? কম আসেন বোধ হয়
-হ্যা, তুমি তো ভাল ধরেছ! নগরকান্দি ট্রেন স্টেশনটা নতুন। আগে ট্রেনে গেলে ঘুরে যেতে হতো ১৫ মাইল। তাই বাসে চলাফেরা করতাম। তারপর একটু থেমে বললেন, বাড়িটা সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে দিয়ে দেব। কাগজপত্র গোছাচ্ছি।



জমিদার বাড়ি! কথাটা শুনে একটা গা ছম ছম ভাব কাজ করে। লোকটাকে দেখতে জমিদারের মতো লাগছে। আচ্ছা জমিদারের রক্ত কি সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা? আপনি আপনি করছি দেখে লোকটা বললো, আমাকে তুমি দাদু ডাকতে পারে। আমার বড় নাতিটা তোমার বয়স হবে। নাম সুজন। বাবা মার সঙ্গে জাপান থাকে। চশমার আড়ালে তার চোখে পানি। রিক্সা এসে জমিদার বাড়ির সামনে থেমেছে।

পাঁচিল ঘেরা এলাকা। মাটির সড়কের দুপাশে কলাগাছের সারি। ঢুকতেই উঁচু ফটক। সিমেন্টের কারুকাজ করা, একটা তারিখ আছে শ্যাওলায় ঢাকা।

গেটে এসে সালাম দেয় কেয়ারটেকার। রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলার ব্রজেশ্বের মতো। মোটাসোটা, মুখে পাকা গোফ। এসেই বলে, স্যার, পথে কষ্ট হয় নাই তো? গায়ে জ্বর, পেটের ব্যারাম, বিছানায় পড়ে আছি। মতিটাকে পাঠালাম রিক্সা নিয়ে। তা, স্যার, উনি কে?
-ও আমার নাতির মতই। শহরে থাকে। ও দুদিন থাকবে। একটু বেশী যত্ন নিও। একটা ভাল ধোয়া বিছানা দিতে বলো অতিথি কক্ষে। আমার দিকে তাকিয়ে বললো
-জহির, জমিদার বাড়ি বলে ভয় পেওনা। তোমরা নানান গল্প পড়ে থাক এসব বাড়ি নিয়ে। তুমি ভয় পেলে রাতে আমার রূমেই থাকতে পার, না হলে অতিথি রূমটা থাকার জন্য ভাল । ভিতরে ভিতরে সামান্য ভয় পেলেও মুখে বললাম,
-না না, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। ভয় নেই। বাড়িতে একাই থাকি নিজের রূমে। আমার জন্য একদম চিন্তা করবেন না।

কেয়ারটেকার কথা শেষ হতেই বললো, আমার শরীরটা খারাপ যাচ্ছে। বেশীক্ষণ কাজ করতে পারি না। আগুনও সহ্য হয় না। তাই একটা মেয়েকে এনে রেখেছি। জুলেখা নাম। ও খুব ভাল রান্না করে। ঠিক এমন সময় মেয়েটা হাজির হয়ে বললো,আপনাদের কলের পানি তুলে রাখছি। গোসল করে খেতে আসেন।

জমিদার বাড়িটা আয়তাকার স্কুলের মতো। মাঝখানে খোলা। যত্ন করে লাগানো গোলাপের ঝাড়। দেয়ালে নোনা, প্লাস্টার খসে গেছে। দেয়াল এক ফুটের চেয়ে মোটা হবে। ওরা এত পুরু করতো কেন? নিরাপত্তা? প্রজার আক্রমন থেকে রেহাই? পুরনো ধাঁচের দরজার কড়া, ভারী। উপরে লাল নীল রঙের কাচে জ্যামিতির চাঁদার মতো জানালা। সাদা চুনার বারান্দা। লাল রঙ করা থাম।

বাউন্ডারী থেকে মূল বাড়ি সামান্য পথ, বাড়িতে দাঁড়িয়ে বাইরের বাইরের বিস্তির্ণ ক্ষেত চোখে পড়ে। উত্তরে লম্বা বিলের মতো জলাভূমি। সুর্য দেখে দিকটা আন্দাজ করেছি। মূলবাড়ির পশ্চিমদিকে বড় পুকুর, পুকুরটা কি নদীর সঙ্গে সংযুক্ত? বাতাবীলেবু, কাগজী আর সুপারী গাছ। পাকা বাঁধানো ঘাট।

গোসল না করে পুকুরে হাত মুখ ধুয়ে নিলাম। খাওয়ার জন্য আলাদা ঘর। পাশে উচু কড়ই গাছের কারনে আলো কম ঘরটাতে। বিদ্যুত নেই। বাড়িটাতে গরম লাগার কথা কিন্তু লাগছে না।

খাবার ঘরটায় লাস্ট সাপার ছবির মতো লম্বা একটা সেগুনকাঠের টেবিল। মনে হয় জমিদারেরা পরিবারের সবাই মিলে ভোজন করতো। পুকুর থেকে তোলা কাতলা রান্না করা হয়েছে । মুরগীর ঝোল। তাজা ঢেড়স, বেগুন ভাজি আর সাদা ভাতের পোলাও। জুলেখার রান্না সুস্বাদু। লবন যদি একটু বেশী , গোগ্রাসে খেতে থাকি। বুড়ো লোকটা জামা কাপড় বদলে টিশার্ট চাপিয়ে এসেছে। তাকে আর তত বুড়ো লাগছে না। যদিও জমিদারীর সঙ্গে টি-শার্টটা বড্ড বেমানান।

বুড়ো লোকটার পাশের ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। ছিম ছাম ঘর। আসবাবের বাহুল্য নেই। ঘরের মাছে একটা বিশাল পালঙ্ক। জুলেখা ফুলতোলা বিছানার চাদর বিছিয়ে গেছে। দেয়ালে মোমদানীর স্ট্যান্ডটা মনে হয় না ব্যবহার করে কেউ। উপরে কয়েকটা তার ঝুলছে। ঝাড়বাতি ছিল একসময়।

জানালাটা খুলে দিতেই আলোয় ভরে যায়। ভারী দেয়ালে জানালাটা সুড়ঙ্গের মতো। ছোট বেলার মতো সেখানে পা দুলিয়ে বসতে ইচ্ছে হয়। দুরে একটা মন্দিরের মতো ঘর দেখে জুলেখা কে সে জিজ্ঞেস করে ফেললো, আচ্ছা ঐটা কিসের ঘর?
জুলেখা নিস্পৃহভাবে জবাব দেয়, ও - লোহুনদীর পারের ঘর? ঐটা মৃত্যুকুপ। জমিদারেরা খাজনা না দিতে পারলে সেখানে ফেলে দিত। আর পিছনে একটা লোহ নদীটা কচুরী জমে এখন খাল। জুলেখা চলে গেলে, মৃত্যুকুপের দিকে চেয়ে তার মনে হচ্ছিল, এই রুমটা না নিলে কি হতো না? অন্য কোন রুমের কথা বলবে?

সেই হতভাগা নিহত কৃষকদের কথা ভেবে গা শিউরে ওঠে। মানুষ কত নিষ্ঠুর হতে পারে! তাদের আত্মা কি ঘুরে ফেরে? বিষয়টি কি শুধুই সংস্কার?

বুড়ো লোকটা বিশ্রাম করে তার কাছে এসে খোঁজ নেয়, কী, তোমার অসুবিধা হচ্ছে না তো? তোমার বাড়িকে জানিয়ে দাও। আড়াই মাইল দুরে পুরানবাজারে ফোনের দোকান বসেছে। সেখান থেকে তোমার বাসায় ফোন করতে পার। এখানে মোবাইলের লাইন পাওয়া যদিও খুব কষ্ট। আমি বলি, তা হলে তো ভালই হয়। আমার দাঁত মাজার ব্রাশটা ভুলে ফেলে এসেছি। নতুন একটা কিনে নিতে পারি আর টুকটাক খাতা কলম জাতীয় জিনিস কিনতে হবে।

বুড়ো জুলেখাকে ডেকে হেসে বলতে লাগলো, শোনো, ও কিন্তু আমার নাতীর মতো। এবং আমার বন্ধুও! কালসকালে বাড়ির পুরনো লাইব্রেরী আর নদীতে নৌকা ভ্রমনের ব্যবস্থা করো।

লাইব্রেরীতে সে চাইলে পড়তে পারে। বাগান থেকে ফল এনে দিও। তুমি পিঠা বানাতে পার শুনলাম। কাল রাতে আমাদের জন্য পিঠা বানাতে পার। পাটিসাপটা পিঠা হলে সবচেয়ে ভাল হয়। আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তা কি জহির। কী কী খেতে চাও জুলেখাকে বলো।

লোকটা নি:সঙ্গ। কথা বলার সময় নি:সঙ্গেরা বিরতি দিয়ে কথা বলে। পুরনো স্মৃতিগুলো ঢুকে যায় কথার ভেতরে। হাটছিলাম। সে আবারও বললো, তুমি এখানে সময় নিয়ে থাকলে অনেক কিছু দেখানো যেত। আমাদের আরেকটা বাড়ি আছে ১০ মাইল দুরে।তোমার বাবা মা ভাববে। এখানে দু/তিনদিনের বেশী থাকাটা একদম ঠিক হবে না।

একটু পরেই রিক্সা আসলো বাজার নিয়ে যেতে। টিং টিং ঘন্টা বাজছে।

(চলবে)
---------
প্রথম ড্রাফট / বানানের ত্রুটি মার্জনীয়

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৩
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×