somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুমনুসংলাপ-৪৮(ঈদের ছুটিতে, ওরা...)

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

( -ছেলে = মেয়ে)

- কেমন কাটালে ঈদের দিন?
= ঝাক্কাছ! তোমার কেমন কাটল?
- আক্কাছ!
= মানে?
- এদেশের সলিমুদ্দি, কসিমুদ্দি, আক্কাছ প্রভৃতি লোকের যেমন কাটে... কিংবা হয়ত ওদের চেয়েও খারাপ!
= কেন? তুমি কী ভাত, কাপড়, সেমাই-পোলাও পাও নি!
- না তা পেয়েছি... কিন্তু ভাত-কাপড় আমাকে টানে না... পোলাও তো আরো না! আই ইট টু লিভ... নট লিভ টু ইট!
= তাহলে ঈদের দিন বসে বসে করলেটা কী?
- ভেবেছি...
= বিরাট ভাবুক দেখছি! ঈদের দিনও বাদ যায় না! তা কী ভাবলে?
- আমি ভাবি অনাহারী মানুষ, সহায় সম্বলহীন মানুষ তারা কীভাবে ঈদ করছে... তারপর ধর মঙ্গাকবলিত এলাকার মানুষ... তারা কীভাবে ঈদ করছে?
= ভেবে আর কী করবে? পারলে ওদের জন্য কিছু একটা করে ফেল না?
- সাধ আছে মোর ষোল আনা/সাধ্য আছে বলো কই?/কর্ম করেও বেকার দশা/চোখ থাকিতে অন্ধ রই!
= এই সর্বনাশ! আজকের দিনে কোন কবিতা চলবে না! আজ শুধু খুশি, খুশি এবং খুশি... বেদনাগাঁথা কাব্যের দিন সামনে অনেক পড়ে আছে!
- তোমার খুশির কথা তো ঐ একটাই... ঠিক আছে সে প্রসঙ্গেই যাওয়া যাক! মোট কত টাকা সালামী পেলে?
= দশহাজার চারশ’ তেত্রিশ টাকা!
- সালামীর মধ্যে খুচরা তেত্রিশ টাকা আসলো কীভাবে?
= মুন্নাভাই দি গ্রেট!
- ও সেই মুন্নাভাই এমবিবিএস! তো উনি বুঝি তেত্রিশ টাকাই সালামী দিলেন? (সুমনুসংলাপ-৪৭ দ্রষ্টব্য)
= আরে না! তেত্রিশ টাকা দেয় নি... দিয়েছে একহাজার চারশ তেত্রিশ টাকা।
- এটা আবার কেমন অংক?
= উনি প্রতিবারের মত একহাজার টাকাই দিয়েছিলেন। টাকাটা নিয়ে আমি বললাম ভাইয়া আপনার মানিব্যাগে মোট কত টাকা আছে? উনি দেখে বললেন,‘একহাজার চারশ’ তেত্রিশ টাকা... আমি বললাম পুরো টাকাটাই আমাকে দেন। তারপর বিনাবাক্যব্যয়ে উনি দিয়ে দিলেন! দেখলে তো দেখিয়ে দিলাম!
- কী দেখিয়ে দিলে?
= তুমি ছাড়াও ১০০% সেলামী দেয়ার লোক আছে! এবং বি.দ্র. এ ১০০% মানে কখনোই ১০০ টাকা না... মিনিমাম ১০০০ টাকা!
- হা হা হা হা হা...
= হাবার মত হাসছ কেন?
- উনি কী প্রথমে নিজ থেকে সবটাকা দিয়েছেন? দেননি! তোমাকে চেয়ে নিতে হয়েছে! আর আমি নিজ থেকেই আমার ১০০% মানে ১০০ টাকা দিতে চেয়েছি... এবং এরপরও তুমি আমাকে পা ছুঁয়ে সালাম দূরে থাক্ মুখেও সালাম দাও নি! তোমার কাছে “সবার উপরে টাকা সত্য তাহার উপরে নাই!”
= এ প্রসঙ্গে আর কোন কথা বললে আমি চলে যাব!
- ঠিক আছে ঠিক আছে এ প্রসঙ্গ বাদ! কথায় বলে না... ‘অর্থই অনর্থের মূল!’ এবার তাহলে কী প্রসঙ্গে আসা যায়?
= তুমি হলা আইডিয়াবাজ... তুমিই বের কর।
- ঈদ মাত্র শেষ হল। এখন যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা সবচে’ যুক্তিযুক্ত তা হল খাবার-দাবার। যদিও এ বিষয়ে কথা বলা আমার মোটেও পছন্দ নয়...
= খাবারের সঙ্গে খরচের যোগ আছে সেজন্যই...!
- তোমার কথা কিঞ্চিৎ সত্য! কারণ যে কেউ স্বীকার করবে ঢাকার অভিজাত রেস্টেুরেন্টগুলো মরা মুরগি ও পঁচা মাছের দাম একটু বেশিই রাখে!
= আমি আর তুমি যেগুলোতে গিয়েছি সেগুলোতে খাবারের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই।
- আছে! একটা জোক শোন... এক লোক ঢাকার এক রেস্টুরেন্টে গিয়ে চিকেন ফ্রাই এর অর্ডার দিল। কিছুক্ষণ পর ওয়েটারকে বলল,‘আচ্ছা এই যে চিকেন ফ্রাইয়ের মুরগীটা এটা কী জীবিত ছিল না মৃত? ওয়েটার হেসে বলে,‘স্যার যে কী বলেন? জীবিত মুরগীর আবার চিকেন ফ্রাই হয় না কী!... হা হা হা হা
= ওরে আমার জোক রে! হেসেই কুল পাচ্ছে না... এটা জোক না এটা তোমার বানানো জোঁক!
- আচ্ছা ঠিকাছে জোঁক থেকে এবার গরুতে আসা যাক্... গরুর মাংস তো তোমার ফেভারিট। এতই ফেভারিট যে...
= বাক্য টা শেষ কর...
- তোমার এক বান্ধবী... সঙ্গত কারণেই নাম বলতে চাচ্ছি না... আমাকে জানিয়েছে আমি না কী কিছুটা গরু মার্কা বলেই তুমি আমাকে এত পছন্দ কর!
= কথা কিঞ্চিৎ নহে পুরোপুরিই সত্য! আমি চাই গরু এবার দুই পায়ে দাঁড়াক!
- মানে?
= তোমাকে দাঁড়াতে বলছি...
(ছেলেটা দাঁড়াল। ‘ঐ দেখ আকাশে একটা চিল...মুরগী খুঁজছে বোধহয়!’ ছেলেটা তাকাল। এই ফাঁকে মেয়েটা পৃথিবীর দ্রুততম পা ছোঁয়া সালাম সম্পন্ন করল।)
= তুমি যে আসলেই একটা গরু সেটা এখনই প্রমাণ হবে। দেখি কত টাকা তুমি সালামী দিতে পার?
- এখনই প্রমাণ হল যে আমি গরু না। গরুর পা ছুঁতে গেলে গরু পা দিয়ে লাথি দেয়... আর আমি তোমাকে মানিব্যাগ দিচ্ছি। ১০০% সালামী তোমার জন্য...
= তোমার মানিব্যাগে আর কতই বা থাকবে?
- গুণেই দেখ...
= ওয়াও! একহাজার পাঁচশ সাতষট্টি টাকা! সবটাই আমার?
- হ্যাঁ সবটাই তোমার... তা নইলে ১০০% সালামী হবে কীভাবে? মূল বিষয়টা হল আমি মুন্নাভাই এর চাইতে অন্তত দুটো দিক দিয়ে এগিয়ে থাকতে চাই...
= কোন দুদিক?
- ১/ সালাম পাওয়া ২/ সালামী দেয়া!
= তুমি আসলে গরু হলেও ভাল গরু! এ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত নও!
- আমি তো গরুর মাংস খাইনা। আমার এ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তুমি যেহেতু গরুর মাংস খাও তোমার বেশ ভালো সম্ভাবনা আছে! এই ঈদে মোট ১২০০০ টাকা সালামী পেলে... বেশ কিছু টাকা দান করে দিও গরীব-দুঃখীদের মাঝে।
= ঠিক আছে।
- দান অবশ্য এখনি শুরু করতে পার!
= কই গরীব দুঃখী কাউকে আশে-পাশে দেখছি নাতো?
- আমাকেই ১০ টাকা দাও। বাসায় যেতে বাস ভাড়া তো লাগবে!


-------------------------

৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×