somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুন্নত অনুসারে ইসলামিক বিয়ে কেমন হওয়া উচিত?

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাত্র কিছুক্ষন আগে ফেইসবুকে এক বড় ভাইয়ের একটা স্ট্যাটাস আপডেট পড়লাম।
তিনি তার ছোট ভাই এর বিয়ের ব্যাপারে লিখেছেন। নিচে তার সেই স্ট্যাটাস টা হুবুহু কপি করলাম। পড়ে অনেকেই মনে করতে পারেন আজকাল কি আর এইসব সম্ভব?
আমরা চাইলেই কিন্তু সম্ভব! আশেপাশে যা কিছু ঘটছে তার বেশিভাগই আমাদের চাওয়ার কারনেই কিন্তু ঘটছে। হতে পারে সেটা চেতন অথবা অবচেতন মনের চাওয়া।

যাই হোক কথা না বাড়িয়ে মূল লেখাটাই শেয়ার করে দিচ্ছি।

"
আলহামদুলিল্লাহ্‌, গেল সপ্তাহে আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেল। একটা সম্পূর্ণ সুন্নতি কায়দায় (আমার মতে) বিয়ের অভিজ্ঞতা হলো। কয়েকটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। কারন অনেকের হয়ত ধারণা যে- এই জামানায় সুন্নতকে পুরোপুরি অনুসরণ সম্ভব নয়।

- প্রস্তাব উঠার পর মেয়ের বাবা আমাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিলেন এবং নিজে বাড়িতে এসে স্বচক্ষে সব দেখে গেলেন। বিশেষ করে মেয়েদের চলাফেরায় পর্দার ব্যবস্থা আছে কিনা। পুরোপুরি না থাকলেও আলহামদুলিল্লাহ্ তারা সন্তুষ্টিমুলক সম্মতি দিল।
- আমরা মেয়ে দেখতে চাইলাম। তারা বলল শুধুমাত্র ছেলে এবং ছেলের মা মেয়েকে দেখতে পারবে। আমাদেরও ইচ্ছা তাই ছিল। মেয়ে দেখতে গেলে একজন মাহরাম এর উপস্থিতিতে ছেলে এবং মেয়েকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া হলো কথা বলার। আলহামদুলিল্লাহ্ তারা দুইজনই সন্তুষ্টিমুলক সম্মতি দিল।
- আমরা মহরানা কত হবে জিজ্ঞেস করলাম, তারা বলল - মহরে ফাতেমি (রাঃ), বর্তমান হিসেবে যা ১লক্ষ ৫০হাজার থেকে ১লক্ষ ৮০হাজার এর মতো। আমরা অভাক হলাম, এই যুগে এটাতো কিছুইনা।
- আমরা জিজ্ঞেস করলাম - মেয়ের সাজানো আর অলঙ্কার বাবদ আপনারা কি কি চান? তারা বলল- এটাতো আপনাদের ব্যপার, আপনারা কীভাবে আপনাদের বৌ-সাজিয়ে নিবেন। আলহামদুলিল্লাহ্।
- এবার জিজ্ঞেস করলাম বিয়ের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে। অর্থাৎ বিয়ের দিন মেয়ের বাড়িতে এবং পরেরদিন ছেলের বাড়িতে কয়জন মেহমান আসবে বা যাবে। তারা বলল মেয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানের কোন নিয়ম নাই (এটা বিদায়াত), আর ছেলের বাড়িতে অনুষ্ঠান করতে চাইলে করা যাবে (যাকে বলা হয় -অলিমা)।

বিষয়টা আমাদের নিকট একটু অন্যরকম লেগেছিল, কেননা মাত্র কয়েকমাস আগের আমার বিয়েতে যেখানে প্রায় ৩০০ বরযাত্রী ছিল, আর আমাদের বাড়িতে হয়েছিল প্রায় ১৩০০ মেহেমানের আয়োজন। যাইহোক, বিধানতো বিধানই। মাত্র ১০জন বরযাত্রীসহ একটা মাইক্রো ও বরের জন্য একটা প্রাইভেট কার নিয়া রওয়ানা দিলাম। দূরত্ব প্রায় ১৮০ কিমিঃ।
সবচেয়ে বিস্মিত হলাম - আমারা যখন প্রায় অর্ধেক পাথ অতিক্রম করলাম তখন মেয়ের মেঝো মামা ফোন দিয়ে আমরা কয়জন আসতেছি জিজ্ঞেস করল এবং আমাদেরকে দুপুরে ডাল-ভাতের জন্য দাওয়াত দিল। বুঝলাম আজ হয়ত না খেয়েই ১৮০ কিঃমিঃ ফেরত আসতে হতো।

যাইহোক, খাওয়া-দাওয়া শেষ হলো, মসজিদে নামাজ শেষে আক্দ (কলেমা) পড়ানো হবে, তার পূর্বে মেয়ের সম্মতি নিয়ে আসা দরকার। জিজ্ঞেস করা হলো- ফোনে সম্মতি নিলে হবে কিনা, উত্তর হলো - না, অবশ্যোই কোন মারহাম ব্যাক্তিকে স্বশরিরে গিয়ে নিজ কানে শুনে আসতে হবে, কেননা ফোন এর শব্দ নকল করা সম্ভব। তাই করা হলো।
অবশেষে আক্দ শেষে খেজুর দেয়া হলো উপস্থিত সবাইকে।

আক্দ শেষে মুনাজাত এর পূর্বে মেয়ের বড়মামা [যিনি আমার ছোট ভাইয়ের উস্তাদ (বড় হুজুর)] দাড়িয়ে কিছু কথা বললেন, আর তখনই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। জানতে পারলাম - ইনি এমন একজন ব্যক্তি যাকে কেউ কখনো কোন সুন্নতের বরখেলাপ করতে দেখেনি। নিজের মেয়ের বিয়েতে বরযাত্রীদের শুধু এককাপ চা খাইয়ে বিদায় দিয়েছিলেন। বড় ভাগ্নির বিয়েতে সামান্য কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল বলে সেখানে অংশগ্রহন করেননি।
উনি ব্যাখ্যা করলেন- ইসলামে মেয়েদের বিয়ে দেয়া কত সহজ, কত অধিকার দেয়া হয়েছে ওদেরকে, সত্যিকার অর্থে বিয়ের পর স্বামী হয়ে যায় স্ত্রীর চাকর এর মতো। অথচ আমাদের সমাজ এই বিয়েকে কত কঠিন করে ফেলেছে। উনি তুলে ধরলেন সমাজের কিছু বাস্তব অবস্থা।
অবশেষে মুনাজাত হলো, সেখানেও অদ্ভুত অভিজ্ঞতা - একটু আগে যে মানুষগুলো এতো হাসাহাসি করছিল মুহূর্তেই কীভাবে প্রভুর কাছে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল, ঝরঝর করে পড়তে লাগল চোখের পানি। কি অদ্ভুত সম্পর্ক প্রভুর সাথে।

সবাইকে আমার এই ভাই ও তার স্ত্রীর জন্য দোয়া করার অনুরোধ করছি। [দোয়াতে আমাকেও রাখবেন প্লিজ ]

বিঃদ্রঃ বিয়ের পর মেয়ের পক্ষ আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে।
"
ওনার প্রফাইল লিংকটা এইখানে

আল্লাহ আমাদের সবাইকে যা কিছু ভাল ও কল্যাণকর তা গ্রহন করার তওফিক দিন। আমীন।
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×