সরকার দলীয় প্রার্থী নিয়োগের দাবিতে ছাত্রলীগের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাবনার জেলা প্রশাসক অফিসে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল নয়টায় এ পরীক্ষা শুরু হয়। পরে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে এ ব্যাপারে একটি মামলা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

জেলা প্রশাসক এ এফ এম মনজুর কাদির টেলিফোনে আমাকে জানান, সরকার দলীয় পাবনা-৫ আসনের এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্সের নির্দেশে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুইপের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের ছাত্রলীগ -যুবলীগ কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা হামলা করে ৪টি সরকারি গাড়ী ভাংচুর করেছে এবং সরকারী কর্মকর্তাদের মারধর করেছে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ ও সরকারী কর্মকর্তাদের গালিগালাজ ও ব্যাপক মারধর করেছে এবং তারা উচ্চস্বরে বলেছে এমপিকে চিনিশনা,এমপির সুপারিশ শুনিস না তোদের দেখে নেবো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইমামউদ্দিন কবির জানান, সকাল নয়টার দিকে পাবনা জেলা স্কুল ও পাবনা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়। ১৭টি পদের জন্য এতে অংশ নেন এক হাজার ২৬৫ জন প্রার্থী। পরীক্ষা শুরুর ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে সুইপের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা নিজ দলের প্রার্থী নিয়োগের দাবিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ সময় তাঁরা চেয়ার-টেবিলসহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার অফিসের পরিচালকের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
মনির হোসেন জানান, এ ঘটনার পর পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা হলে ঢুকে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পুড়িয়ে দেয় এবং তাঁদের কাছ থেকে মোবাইলফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়।

এসময় তারা এডিসি এবং ইউএনওসহ সংশ্ল্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিতও করেছে। সরকারী দলের কতিপয় নেতা ও ছাত্রলীগের পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা অনুসরণ না করায় তারা এ হামলা চালায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারী দলের এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ছাত্রলীগের কতিপয় নেতার নিয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ এবং তাদের পচ্ছন্দের তালিকা অনুসরণ না করায় এই হামলা চালানো হয়েছে।