somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মরিচ-বন্দনা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খবরে বেরিয়েছে, অবশেষে মরিচের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী (মাশাআল্লাহ!)। জঙ্গিরা যাতে পালাতে না পারে, সেই লক্ষ্যে তারা ছুঁড়ে মারবে 'মরিচ গ্রেনেড'। এটা বিস্ফোরিত হলে সন্দেভাজনদের চোখ ভীষণ জ্বলবে, ঠিক কাঁদানে গ্যাসের মতো।পালানোর পথ খুঁজে পাবে না তারা।

ওরা মরিচ-গ্রেনেড নিয়ে থাকুক। আমরা মাতি মরিচ-বন্দনায়।

এমন একটি দিনের কথা কল্পনা করা যায়, যেদিন পৃথিবীর কোথাও কেউ মরিচ (কাঁচা অথবা শুকনো) খাবে না! অথচ এশিয়া আর ইউরোপ ৯ হাজার বছর মরিচ ছাড়াই অন্ন গিলেছে:P:P:P

ভারতীয়রা অবশ্য ভাগ্যবান। কারণ তাদের ছিল গোলমরিচ, পিপ্পলী আর আদা। এগুলোর সাহয্যে তারা মরিচরে অভাব মাইনাস করেছে।

ইতিহাস বলছে, মুগল সম্রাট শাহজাহানের আমলে পর্তুগিজ বেনিয়াদের সৌজন্যে ভারতবাসী মরিচের ঝাল প্রথম চাখতে পেরেছে এবং গত চারশো বছর ধরে ভারতবাসী এতো বেশি মরিচ খেয়েছে যে, মরিচের আসল মালিক মেক্সিকানরা (কেই কেউ বলেন বলিভিয়ান) গত ৯ হাজার বছরেও এতো পরিমাণ মরিচ গিলতে পারেনি।মরিচের ভারত-বিজয় কাহিনী মোটামোটি এটাই।

মরিচকে এক সময় 'গাছ-মরিচ' বলা হতো। হরিচরণের বঙ্গীয় শব্দকোষে শব্দটি এখনও রয়েছে। তবে মরিচ শব্দের উৎস কি, তা নিয়ে ভাষাবিদদের রয়েছে নানা মত। হরিচরণের ধারণা, শব্দটি 'মরিশাস' দ্বীপ থেকে এসে থাকতে পারে। মানে তিনি নিজেও নিশ্চিত নন।

মরিচকে আমরা লঙ্কা নামেও চিনি। কিন্তু সংস্কৃতে মরিচ মানে লঙ্কা নয়। শব্দকল্পদ্রুমে লঙ্কা শব্দের একটি অর্থে এক প্রকার ধান নির্দেশিত হলেও মরিচ বোঝায়নি। বাংলা যে একটি গতিশীল ভাষা --তার প্রমাণ হচ্ছে 'লঙ্কা' শব্দটি। এটি ডাহা সংস্কৃত কিন্তু আমরা শব্দটি দিয়ে মরিচ চিনি। অথচ লঙ্কা শব্দে সংস্কৃত ভাষাভাষীরা কখনই মরিচকে চিনবে না। সংস্কৃতে লঙ্কা শব্দের প্রধান অর্থ 'রাক্ষসদের রমণস্থান'।

সংস্কৃতে মরিচের প্রতিশব্দ হচ্ছে 'ঊণণ'। উড়িষ্যাবাসী মরিচকে বলে 'সোপারিয়া'। সাগরপাড়িয়া শব্দের অপভ্রংশ হচ্ছে সোপারিয়া। অর্থাৎ এটা সাগরের ওপার বা বিদেশ থেকে এসেছে।

তবে মরিচের জাতভাই গোলমরিচ ভারতের নিজস্ব সম্পত্তি। ইগিহাসে রয়েছে, যিশু খ্রিস্টের জন্মেরও দুই হাজার বছর আগ থেকে ভারতীয় গোলমরিচ মধ্যপ্রাচ্যে যেতো। ওখান থেকে যেতো মিসরে। মিসরীয়রা মমি তৈরিতে গোলমরিচ ব্যবহার করতো।

ফার্মা ও ভেষজে মরিচের ব্যবহার রয়েছে। ক্যাপসিকামও মরিচ। তবে তাতে মরিচের সেই শিহরিত ঝাল নেই। এটা সবজি প্লাস সালাদের রেঙ্ক পেয়েছে।
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×