somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতার ঘোষক কে???

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ,অপারেশন সার্চলাইট শুরু হবার পরের দিন,পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পৈশাচিক গনহত্যা যখন দেশবাসীকে অন্ধকার ও নৈরাশ্যে নিমজ্জিত করে,জাতির এমন সংকট মূহুর্তে রেডিওতে একটি কন্ঠস্বর থেকে শোনা যায় “স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বলছি”।সেই রেডিও সম্প্রচার হতবিহ্ববল দেশবাসীকে তাদের আত্মবিশ্বাস,আস্থা ও আশা ফিরিয়ে দিয়েছিলো।এটা সম্ভব হয়েছিলো ১০জন তরুনের ১০কিলোওয়াটের একটি রেডিও ট্রান্সমিটার দখল করার কারনে।তারা ছিলেন বেলাল মাহমুদ,সৈয়দ আব্দুস শাকের,মোস্তফা আনোয়ার,আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক,আবুল কাশেম সন্দীপ,আমিনুর রহমান,রাশেদুল হুসেন,এ এম সরফুজ্জামান,কাজি হাবিব উদ্দিন মনি এবং রেযাউল করিম চৌধুরী।জাতি তাদের এই অংশগ্রহন কোনোদিনই ভুলবেনা।সেই তখন থেকেই শুরু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের যাত্রা যা কিনা পরবর্তীতে একটি সু-সংঘঠিত মুক্তিযোদ্ধা দলের মত কাজ করে গেছে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত।এখান থেকে প্রচারিত দেশাত্ববোধক গান পাকিস্তানিদের বিপক্ষে কঠিন যুদ্ধে লিপ্ত হতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রানিত করত ।

স্বাধীনতার ঘোষণা বহনকারী শেখ মুজিবুর রহমানের একটি টেলিগ্রাম ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রের হাতে এসে পৌছায়।এই টেলিগ্রামটি বাংলায় অনুবাদ করেন ডঃ মঞ্জুলা আনোয়ার।সেই ছাত্ররা কালুরঘাট ব্রীজ পার হয়ে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নিয়ন্ত্রাধীণ একটি এলাকায় পৌছায় যাদের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান।বাঙ্গালী সৈনিকদের পাহারায় একজন ইঞ্জিনিয়ার ট্রান্সমিশনের প্রস্তুতি নেয়।১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ সময় ১৯:৪৫এ মেজর জিয়াউর রহমান,শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।ঘোষণাটি ছিলো এই রকমঃ
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে,শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে,আমি মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করছি।তার নির্দেশনা মতো আমি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অস্থায়ী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহন করেছি।শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আমি সকল বাঙ্গালীকে পশ্চিম পাকিস্তানীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।আমরা আমৃত্যু দেশকে স্বাধীন করার জন্যে লড়বো।আল্লাহের কৃপায় জয় আমাদেরই হবে।জয় বাংলা।
সুত্রঃAudio of Zia's announcement (interview - Belal Mohammed)
কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিশন ক্ষমতা সীমিত ছিল।এই মেসেজটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি জাপানী জাহাজ রিসিভ করে।তারপর সেখান থেকে পুনরায় ট্রান্সমিট করা হয় রেডিও অষ্ট্রেলিয়া ও পরে বিবিসিতে।কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে এই রেডিও ট্রান্সমিশন পরবর্তী ৫দিন চলতে থাকে পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর বোমা হামলায় এটি ৩০শে মার্চ ধ্বংস হবার আগ পর্যন্ত।৩ এপ্রিল থেকে আবারো সম্প্রচার করা হয় ত্রিপুরার বাগাপা থেকে এবং পরবর্তীতে তা আগরতলায় স্থানান্তর করা হয়।“স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” পরিবর্তীত হয়ে “বাংলাদেশ বেতার” হয় ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেবার পর।১৯৭১ সালের ২২শে ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ বেতার স্বাধীন দেশে কার্যক্রম শুরু করে ।
এম এ হান্নান,চট্টগ্রামের একজন আওয়ামীলীগ নেতা ২৬ শে মার্চ, প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার কথা বলেছেন(সুত্রঃVirtual Bangladesh)। বিএনপি সুত্র বলে থাকে এটি ২৬ শে মার্চ এবং পাকিস্তান থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজ আসেনি।।আবার পাকিস্তানী সুত্র,মেজর জেনারেল হাকিম এ.কোরেশী তার বই”১৯৭১ পাক-ভারত যুদ্ধ—একজন যোদ্ধার পর্যালোচনা”তে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার কথা লিখেছেন ২৭ শে মার্চ,১৯৭১।তাই এখানে একটি দ্বিমত আছে,আসলে কখন জিয়াউর রহমা্ন,শেখ মুজিবুর রহমানের নামে‌ ঘোষণা পাঠ করেছিলেন,২৬শেমার্চ নাকি ২৭শে মার্চ।
সুত্রঃ১৯৭১ পাক-ভারত যুদ্ধ—একজন যোদ্ধার পর্যালোচন।
Click This Link
http://www.genocidebangladesh.org/?page_id=57
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৩৫
২৭টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×