somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি পৃথিবী বনাম ২২,৩৮৫ টি পরমাণু বোমা! এই বোমা কী পৃথিবীবাসির জন্য উপকারী?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যযুগে সারা বিশ্বের রাজারা নিজ রাজত্ব ও পরিবারের নিরাপত্তার নামে সম্পদ লুটের জন্য অন্য রাজ্য আক্রমণ, ধবংশ, মানুষ হত্যা করত। যাকে বলতো রাজনীতি। রাজার নীতি মানবিকতার বাইরে ছিল বলে শিল্প বিপ্লবের পর রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাজতন্ত্রের বিকল্প গণতন্ত্রের তত্ত্ব দিলেন। এখন রাজা নেই। তবে রাজনীতি গণতান্ত্রিক পোষাকে বর্তমান বিশ্বকে দাবড়িয়ে চলছে। মধ্যযুগে যুদ্ধে মানুষ মারা যেত ও সম্পদ লুট হত, এতে ব্যক্তি ও পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হত।

বর্তমানে যুদ্ধে অদূরদর্শি অতি বুদ্ধিমান মানুষের আবিষকৃত বিভিন্ন বোমার ব্যবহারে বায়ুদূষণ, পানিদূষণ ও মাটি দূষণসহ পরিবেশ ধবংশ হচ্ছে। ফলে দেখা দিয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তন। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, তুষারপাত, খরা এখন শুধু এশিয়া ও আফ্রিকার অর্থনীতি ধবংশ করছে না। ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার স্থিতিশীল ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে আঘাত করতে শুরু করেছে। পরিণতিতে মানুষের কারণেই সারা বিশ্বে মানুষসহ সকল প্রাণী অতিদ্রুত খাদ্যনিরাপত্তার বাইরে চলে যাচ্ছে। ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ও দরিদ্রতা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১৯০০ সালের পৃথিবীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা আর ২০১০ সালের বাস্তবতা এক নয়। এক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে সারা বিশ্বে তার আঁচ লাগে। এক দেশে আগ্নেয়গিরি দেখা দিলে বহু দেশ তাতে সমস্যায় পতিত হয়। এক দেশে ফসল না হলে সারা পৃথিবীর বাজার মূল্য বৃদ্ধি পায়। একদেশে রোগ দেখা দিলে সারা বিশ্বে তা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যযুগে পৃথিবীর অনেক রাজা ছিলেন বকলম। বর্তমান বিশ্বের প্রযুক্তিতে ও অর্থনীতিতে শক্তিধর রাষ্ট্রের ও সরকার প্রধানগণ সুশিক্ষিত। তাদের সৎচিন্তা করার ক্ষমতা অবশ্যই পূর্বতনদের তুলনায় অনেক বেশি এবং বাস্তবধর্মী।

জানামতে, বিশ্বের ৯টি দেশে বৈধ পরমাণু বোমার সংখ্যা
০১ রাশিয়া ১২,০০০টি ০২ যুক্তরাষ্ট্র ৩,৪০০ টি
০৩ ফ্রান্স ৩০০টি ০৪ চীন ২৪০ টি
০৫ যুক্তরাজ্য ১৮৫ টি ০৬ ইসরাইল ৮০ টি
০৭ পাকিস্তান ৭০-৯০টি ০৮ ভারত ৬০-৮০ টি
০৯ উক্তর কোরিয়া ১০টি সর্বমোট ২২,৩৮৫ টি পরমাণু বোমা

দেশগুলো হাজার ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করে পরমাণু বোমাগুলো লালন-পালন করছে। প্রয়োজনে মানুষ হত্যার জন্য।

অথচ পৃথিবীর ৬৮০ কোটি মানুষের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন নিজের খাদ্য কিনে খেতে না পেরে ক্ষুধার্ত থাকে। ভয়ংকর কথা হচ্ছে এই দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নেই। শিক্ষা, ¯^v¯’¨ ও আবাসন খাত থেকে সরকারী অনুদান প্রত্যাহার করে এবং এসব ক্ষেত্রে কর বসিয়ে ¯^í বা বিনামূল্যে শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ মৌলিক মানবিক সেবা পাওয়ার অধিকার খর্ব করছে। সরকারগুলো জনগণের কাছ থেকে কর নিয়ে তা জনগণের কল্যাণে ব্যয না করে মানব সভ্যতা ধবংসের জন্য পরমাণু বোমা লালন পালনে আসক্ত হয়ে পড়েছে।

১৯৪৫ সালের ৬ আগষ্ট ও ৯ আগষ্ট জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মার্কিন আণবিক বোমা নিক্ষেপের যে সিদ্ধান্ত ডেমোক্র্যাট দলের চার মেয়াদের প্রেসিডেন্ট মি. রুজভেল্ট প্রশাসন নিয়েছিলেন বর্তমান প্রশাসন তার চেয়ে অনেক সুশিক্ষিত ও মানবিক নৈতিক গুন সম্পন্ন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা সরল অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি পারমানবিক বোমামুক্ত বিশ্ব উপহার দেবেন। আমেরিকার শান্তিপ্রিয় জনগণ তাকে এজন্য বিপুল উৎসাহে ভোট দিয়েছেন। সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ দিয়েছেন নৈতিক সমর্থন। এছাড়াও ২০০৯ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তিনি গ্রহণ করেছেন। তাই বিশ্বের স্থায়ী শান্তি রক্ষার দায়বদ্ধতা তিনি পালন করবেন। এটাই সারা পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় মানুষের চাওয়া। গত ১২ এপ্রিল ২০১০ ওয়াশিংটনে বিশ্বের ৪৭ টি দেশের নেতৃবৃন্দের সম্মেলনে বিশ্বব্যাপি অরক্ষিত পরমাণু বোমার নিরাপত্তা নিশ্চিতের যে উদ্যেগ তিনি নিয়েছেন তা তার নিবাচনী সরল ওয়াদার সংস্করন। এটা তার ভোটার ও বিশ্বব্যাপী সমর্থকদের আহত করেছে। আমাদের আশা তিনি তাঁর বর্তমান মেয়াদকালে বিশ্বের সকল পরমাণু বোমা ধবংশ করবেন। ভবিষ্যতে কোনো রাষ্ট্র যেন এই বোমা তৈরী করতে না পারে, জাতি সংঘের আওতায় সকল দেশকে এই আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন।
৯টি দেশের প্রশাসনের কাছে পৃথিবীর ৬৮০ কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা বা পৃথিবীর নিরাপত্তা জিম্মি থাকতে পারে না। প্রয়োজনে জাতি সংঘের মাধ্যমে সারা বিশ্বে গণভোট করে বিশ্ব জনমত নেয়া যেতে পারে। যেহেতু এই পৃথিবী আমাদের সকলের। প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে সকলে মিলে নিবো। কতিপয় যুদ্ধবাজের হাতে পৃথিবী ধবংশ হতে দেয়া যায় না।

পরমাণু বোমা লালন-পালনের অর্থ দিয়ে স্ব স্ব রাষ্ট্র নিজ জনগণ এবং বিশ্বের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের লালন-পালন করবে। মানুষ ও পৃথিবী ধব্ংসকারী বোমা তৈরি ও পালনকারী প্রশাসন নিজ জনগণ তথা বিশ্বের বন্ধু হতে পারে না।

আবু তাহের
বসুরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×