পুকুরসহ বিভিন্ন বদ্ধ জলাশয়ে বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ চাষ করার স্বপ্ন এবার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বলে আশা করছেন গবেষকরা।
Published : 15 May 2013, 05:48 AM
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষকরা জানান, তিন বছর মেয়াদী ‘পুকুরে ইলিশ চাষের’ পরীক্ষামূলক প্রকল্প আগামী জুনে শেষ হচ্ছে। এরপর বিভিন্ন পুকুরে করা এসব ইলিশ উত্তোলন করে পরীক্ষানিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাঁদপুরের নদী কেন্দ্রের গবেষণাগারে ১৯৯৮ সালে পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়।
এরপর বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগিতা পরীক্ষায় ২০১০ সালে ইনস্টিটিউটের নিজস্ব তিনটি পুকুরে ইলিশ চাষ শুরু হয়।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান বিডিনিউজি টোয়েন্টেফোর ডটকমকে বলেন, পুকুরের মিঠা পানিতে ১৯৮৮ সাল থেকে ইলিশ চাষ করা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর গবেষণার পর চাঁদপুর মাৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষকরা সফলতা পান।
ইনস্টিটিউটের তিনটি পুকুরে ২০১০ সালের জুলাই মাসে বাণিজ্যিকভিত্তিতে তিন বছর মেয়াদী ইলিশ চাষ শুরু হয়।
আগামী জুন মাসে এই মেয়াদ শেষ হবে। তখন চাষের এই ইলিশ আহরণ করে গবেষণার চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, মাঝে মাঝে পানি কমে যাওয়া ও অন্যান্য প্রাকৃতিক কিছু কারণে চাষের কিছু ইলিশ মরে গেছে।
আনিছুর রহমান জানান, পুকুরে ইলিশ চাষে সফলতা পেলে আপাতত নদী থেকে ইলিশের পোনা (জাটকা) সংগ্রহ করে চাষাবাদ করা যাবে। কারণ, মার্চ-এপ্রিল দুমাস শুধু চাঁদপুরের নদ-নদীতে কোটি কোটি জাটকা পাওয়া যায়।
এখন প্রতিবছর কারেন্ট জাল দিয়ে নিধন করা হয় গড়ে ১৪ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন জাটকা। এই জাটকার শতকরা ২০ ভাগও রক্ষা করা গেলে বছরে এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত ইলিশ উৎপাদিত হয়।
ড. আনিছ বলেন, পৃথিবীতে পাঁচ প্রকার ইলিশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে বার্ষিক ইলিশের আহরণ মাত্রা সারাবিশ্বে প্রায় পাঁচ লাখ টন, যার ৫০-৬০ শতাংশ পাওয়া যায় বাংলাদেশে। ২০-২৫ ভাগ মায়ানমারে, ১৫-২০ ভাগ ভারতে এবং ৫-১০ ভাগ পাওয়া যায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, ভিয়েতনাম ও শ্রীলংকায়।