ঈদের শপিং করতে গেছি
সাথে আমার বউ,
বুক ফুলিয়ে বলি,
ওগো, কি কি লাগবে কও’?
বউটা আমার ভীষন পটু
আনছে টালিখাতা,
অনেক কিছু লেখা দেখলাম,
অনেকগুলো পাতা।
সংসার আমার খুবই ছোট-
এক মেয়ে, এক ছেলে,
শপিং করার লিস্টি দেখি
মাইক্রোসফট এক্সেলে!
বোনাস পেলাম মনে সাহস
বল রেখেছি বুকে,
আসতে দেরী-বউটা জিনিস
দেখছে ঝুঁকে ঝুঁকে।
বেলুন, পিঁড়ি, তাওয়া থেকে
মুড়ি রাখার টিন,
টুথপিক, কটনবাড,
কাইতন, সেফটিপিন।
তারপর শুরু হল
জামা-কাপড়-জুতা,
শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট,
ফলস, সেলাইয়ের সুতা।
স্নো, পাউডার, আলতা, কিলিপ,
আলগা খোঁপা- তাও,
‘আলগা নখ আর আলগা পাঁপড়ি
কিনবা? ওকে যাও’!
আইলাইনার, লিপলাইনার,
লিপস্টিক, চুড়ি,
মানিব্যাগে টাকাগুলা
দিতেছে সুড়সুড়ি।
ফেসপাউডার, মেকাপবক্স,
লোশান এবং তেল,
সাবান, শ্যাম্পু, পারফিউম,
আতর, হেয়ার জেল।
আল্লাহ জানে কি হইবো
এত্ত কিছু দিয়া,
এই বাজারে করতে পারতাম
আরও দুইখান বিয়া!
এরপরে বাহির হইলো
আত্মীয়দের লিস্টি,
মনে মনে কিলাইতাছি
বৌয়ের চৌদ্দগুষ্টি।
খালু শ্বশুর, মামা শ্বশুর,
তাদের মাওউ-তালই,
হায় মাবুদ রক্ষা কর
ফাইসা গেছি ভালই!
শালা-শালী, আন্ডাবাচ্চা,
তাদের প্রতিবেশী,
কাকু, জ্যাঠু, পরিচিত
দুরাত্মীয় পিসি।
বললাম আমি, ‘চল,
আমি যাব একটা কাজে’,
বউ বলে, ‘ তোমার কিচ্ছু
কেনা হল না যে’!
আমি বলি, ‘বাদ দাও এবার
টাকা পয়সা ফিনিস’,
উনি বলে, ‘কেনার বাকি
আছে কত্ত জিনিস!
সব সময় এমন কর
আমি তোমায় চিনি,
ওকে চলো তোমার জন্য
সেন্ডোগেন্জি কিনি’।
আমি বলি, ‘বাদ দাওনা
গেন্জি কিনলে পরে-
রিক্সা ভাড়া দিয়ে
ফেরা যাবেনা আর ঘরে।
দুইটা পুরান গেন্জী থুইয়া
খামাখা কেন নিমু?
ঐ দুইটাই ধুইয়া মুইছা
ইছতারিতে দিমু’।
মনে মনে বলি, ‘তোমায়
বিয়া কইরা মরছি,
কোন দু:খে এমন আকাম
জাইন্না শুইন্না করছি’!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩০