নিজেকে define করা মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি।মানুষ মাঝে মাঝে নিজেই বুঝতে পারে না কোথায় নিজের সুখ আর কোথায় কষ্ট।আমিও তার ব্যতিক্রম নই।মাঝে মাঝে এমন কিছু কষ্ট থাকে যা কাওকেই বলা যায় না।কিন্তু সুখগুলো এমন না।সুখগুলো সুন্দর ও পবিত্র হয় এবং তা সবার সাথেই share করা যায়।কিন্তু কষ্টগুলো মাঝে মাঝে এমন হয় যে কাওকেই বলা যায় না।একান্ত যে আপন তাকেও না।আমার কাছে মনে হয় মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় আপন মানুষগুলোর অপ্রত্যাশিত ব্যবহার এ।হোক না সে বাবা,মা,ভাই,বোন,কাছের কোন বন্ধু কিংবা ভালবাসার মানুষটি ই। সেইসব কষ্ট যেহেতু কাওকে বলা যায় না তাই যখন খুব কষ্ট হয় তখন সুখের স্মৃতি তো মনে করাই যায়।
আমার জীবনে সবচেয়ে সুখের যেই অধ্যায় টা তা হল আমার ছোট্ট সেই শহর টাতে বেড়ে উঠা।আমি যে আমার এই শহরটার কাছে কতটুকু ঋনী তা বলে বুঝানো সম্ভব না।।
ছোট্ট শহরটাতে রোদ,বৃষ্টি,ঝড় সবই অপলক সৌন্দর্যে মোড়ানো।ওখানে বাসা থেকে বের হলে কোথাও যাওয়ার জন্য চিন্তা করতে হয়না।নেই যানজট, কোলাহল, বরং আছে বিশুদ্ধ বাতাস।ছোট্ট শহর টাতে মনে হয় সবাই সবাই কে চেনে।সবার সাথে সবার যে আন্তরিকতা তা বোধ হয় ঢাকা নামের এই যান্ত্রিক শহরটাতে নেই।
আমি ছোট্ট একটা উদাহরন দেই, যখন আমাদের ওখানে electricity থাকত না রাতে,তখন পুরা বাড়ির সবাই বাসার সামনে খালি জাযগায বসে আড্ডা মারত।এক বাসায় যদি ভাল কিছু রান্না হত পাশের বাসায় তা পাঠানো হত। এবং এখনো এই রীতিগুলো চালু আছে।কারও সাথে কারও কয়েকদিন দেখা না হলেই তার খোজ খবর করা, কেউ অসুস্থ থাকলে তাকে দেখতে যাওয়া-এগুলোই ঐ ছোট্ট শহরটার সংস্কৃতি।
জীবনে সবচেয়ে বর্নীল ছিল জিলা স্কুল এর সময়টা।কিছু প্রিয় স্যার,কিছু প্রিয় বন্ধু আর কিছু সুন্দর মূ্হুর্ত। মনে পরে,খলিল স্যারের “স্যারে তোমারে নাচনা শিখাইব বলেরে”ঃ),শামসুল হক স্যারের কিছু ইন্সপিরেশন,রহিম স্যারের বাসায় সকালে পরতে যাওয়া মানে নোট লিখার পাশাপাশি চরম একটা তাজা আড্ডা দেয়া(মনে পড়ে,প্রসেঞ্জিত আর দেবাসিশ এর স্যারদের মুখাভিনয় করে দেখানো),বাইট্টা হুজূর,সায়ীদ স্যার,পারভিন আপা,চমনারা আপা,আস্মা আপা……সব স্যার,ম্যাডামদের।।এসব ভুলা সম্ভব না। গংগা কোচিং সেন্টারের প্রিয় পিযুষ স্যার(পিযুষ স্যার র সেই ফ্রেঞ্ছকাট দাড়ি, বেত্তেরিং আর অথর্ব)আর বিদু্ৎ স্যার(ইলেক্টিসিটি থাকবে না,খুব গরম পরবে আর সেদিন আমার বার্থডে থাকতে হবে;তাইলে খাওয়াব।ঃ))।সেই সব মানুষ, যারা আমাদের প্রতি এতটুকু contribute করেছে তাদেরকে অঢেল সম্মান জানাচ্ছি(সব স্যার,ম্যাডামদের কথাই মনে পড়ছে)।
এবার আসি স্কুল পালানোর ঘটনায়।।স্কুল পালিয়ে কত যে ক্রিকেট খেলা, ধর্মসাগর পাড় আর ইয়াম ইয়াম এ গেছি তার কোন ইয়ত্তা নেই।।মনে আছে ক্লাস ১০ এ আমরা টানা ২ মাস স্কুল এ যাইনি,তখন মনে হয় ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপ চলছিল।।হুমায়ুন কবির স্যারকে অনেক বুঝাইতে হইছিল পরীক্ষা দিতে দেয়ার জন্য।।খুব মিস করছি সেই সব দিনের বন্ধুদের।
কিছু বন্ধুকে কিছু বিশেষ কিছুর জন্য ধন্যবাদ না দিলেই নয়।।ক্লাস ৭ থেকে বই পরার অভ্যাস টা হল।।কিশোর ক্লাসিক(তিন গোয়েন্দা) এর বই দিয়ে শুরু।।তারপর অনেক বই পড়া।অভ্যাস এবং বই দুইটাই ধার করা চয়ন এর কাছ থেকে।।বই তো ওকে সব ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু অভ্যাসটা দেয়া হয়নি।এখনও সময় পেলে পড়ি কিন্তু আগের মত আর হয় না।
বাঁধন(তোর কথা খুব মনে পড়ে,মনে হয় সব কিছু আগের মতই আছে,তুইও আছিস…তোকে ছাড়া ঈদ এর দিনটা এখন র জমে না),সজীব, ইমন,কারিব,জাইফ,শুভ,সুজন,আদন তোদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ for being so accompanied to me….
সব বন্ধুদের কথা মনে পরছে…
মারুফ,নিলয়,হাসান,উচ্ছাস,রাহাত,আদনান,আকরাম উল্লাহ(চরম ঘাড়কাটা),রবিন(পোলাপাইন),তুষার,কামাল,রাব্বি,ইব্রাহিম(তোমার নাম লিখার কাহিনি আজীবন মনে থাকবে),সাগর, মারুফ(শোয়েব আখতার),সানি,বাপ্পি(বউ),সাইফুল(জামাই),সাইফুল(লম্বু),সায়েম(ইমতিয়াজ),সানি(মাম বিউটি পারলার),রবিউল(আমাদের মহিবুল),দেবাশিস,প্রসেঞ্জিত,রিফাত,এনায়েত,শান্ত,শাওন,সোলাইমান মেহেদি(বল মাঠের এই পাশ থেকে ঐ পাশে নিত),ইমন(ইস্ট-ওয়েস্ট)……সব সব বন্ধুদের কথা…যাদের নাম লিখলাম না তারা ও…তোদের ভুলা সম্ভব না।
আমার এই লিখাটা আমার স্কুলের বন্ধুদের উৎসর্গ করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১:৫৩