মহা বিশ্বে স্রষ্টার সৃষ্টি কূলের সেরা হল মানুষ।রক্তে মাংসে গড়া মানুষ।সেই মহা সৃষ্টিতে স্রষ্টার বিন্দু মাত্র বিভেদ নেই।আর মানুষ কে?সে প্রকৃ্ত মানুষ যে জীবনে সুখ ও দুঃখ সমান ভাবে গ্রহন করেন।কিন্তু সুখকে তারা কখনো বড় করে দেখেন না।তারা নিজের স্বার্থ তুচ্ছ করে মানব কল্যানের চিন্তায় ও কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখে।পার্থিব সুখ বা ধনসম্পদের প্রতি তারা লালায়িত নয়।তারা সল্প তুষ্ট ব্যক্তি।ঊচু-নীচ ভেদে তার পৃ্থিবীর সব মানুষকে আপনজন বলে মনে করেন।একজন মানুষের জীবনে সু্খের পাশাপাশি থাকে দুঃখ,যেমনটা রাতের আধারেও তারকারাজি আকাশে মৃদু আলো বিতরন করে।তাই বলে একজন প্রকৃ্ত মানুষ তার মনুষত্বের বিকৃ্তি করেন না।অতচ এই মহা সৃষ্টি নিজেরাই নিজেদেরকে পার্থক্য করে তুলছে।আমরা কি পারি না এই বিভেদ ভেঙ্গে দিতে?একে অপরের প্রতি সহনশীল হতে।মানব জীবনের মহা মূল্যবান একটা দিক হচ্ছে মনুষত্ব্য।এই মনুষত্ব্যের সঠিক প্রয়োগই হচ্ছে জীবনের বিরাট প্রাপ্তি।একজন অসহায় পথশিশু কিংবা একজন ধনীর দুলাল,একজন ভিক্ষুক কিংবা একজন ধনী ব্যক্তি স্রষ্টার কাছে কিন্তু সবাই একশ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত।অতচ আমাদেরর বাস্তব জীবনে এসবের বিরাট শ্রেণীবিভেদ।
আমি একদিন রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আইচক্রিম খাচ্ছিলাম।হঠাৎ দেখি দূর থেকে এক পথশিশু অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।তার চোখে মুখে কেমন জানি ক্ষুধার্ত ভাব।এমন করুন দৃশ্যপট দেখে আমার হৃদয় হুহু
করে কেঁদে উঠল।পারলাম না নিচ্ছুপ দারিয়ে থাকতে।ছেলেটিকে ডেকে একটা আইচক্রিম হাতে দিয়ে নাম জানতে চাইতেই বলে আমার নাম মনির।আমার বাবা নেই।মা ছেলেটিকে ছেড়ে কোথায় জানি চলে গেছে।কোথায় থাকে জানতে চাইলে বলে সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াই আর রাত্রে এক চাচ্চুর সাথে রাস্তার ধারে ঘুমাই।অসহায় শিশুটির এতসব অসহায়ত্বের কথা শুনতে শুনতে কখন যে চোখে জ্বল চলে এসেছে বুঝতেই পাইনি।
এই ছেলেটির মত আরো অনেক অসহায় পথশিশু আমাদের আশে-পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।ওদের প্রতি যদি আমরা একটু,একটু সহনশীল হই তাহলে ওদের অভাব কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব।আমরা আমাদের অর্থ আর আভিজাত্যের অহংকার ভূলে গিয়ে এসব অসহায় পথশিশুদের পাশে এসে দাড়াই।চেষ্টা করি ওদের মুখে একটু হাসি ফুটানোর।তাহলেই মহা সৃষ্টির শ্রেষ্টত্বের প্রকাশ ঘটানো সম্ভব।আর বুপেন হাজারিকার সেই বিখ্যাত গান "মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য ......." সার্থক করা সম্ভব।
"জীবে প্রেম করে যে জন,সেজন সেবিছে ইশ্বর।" আসুন ছিড়ে ফেলি ভিন্নতার বেড়াজাল,মুক্ত করি আমাদের মনুষত্ব্যকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:৩৮