somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের জঘন্য রাজনীতির জন্য দায়ী জঘন্য শিক্ষকবৃন্দ: আমিই প্রমাণ

২০ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(ধারাবাহিক-প্রথম পর্ব)


আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাএ। আমি যখন প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি তখন তও¦াবধায়ক সরকার ছিল ক্ষমতায়। তার আগে বি এন পি ক্ষমতায় ছিল বিধায় তও¦াবধায়ক আমলেও বি এন পি’র কমিটি+ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়নি । ফলে বি এন পি তখনও ক্ষমতায় ছিল বলা যেতে পারে।

আমি আমার দেখা বেশ কয়েকটি ঘটনা জানানোর চেষ্টা করব।

প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে সবে হলে উঠেছি হলের বড় ভাইরা (রাজনৈতিক) জানিয়ে দিলেন আমাদের জন্য রাজনীতি করাটা বাধ্যতামূলক। তারা আমাদের নিয়ে অনেক রাতে মিটিং করতেন। বিশেষত কিভাবে আমাদের রাজনীতিতে সক্রিয় করা যায় এটাই ছিল মূল লক্ষ। আর এ ক্ষেএে বড় ভাইরা একটা ভাল সুযোগ আমাদের দিয়ে দিলেন,আর সেটা হল যারা সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করবে তারা সাথে সাথেই হলে রুম পেয়ে যাবে। প্রথম বর্ষে এসে আমরা উঠেছিলাম গণরুমে, যেখানে অমানবেতর অবস্থা ছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভাল একটা রুম পাওয়া আমাদের স্বপ্ন ছিল। সুতরাং আমদের মধ্যে অনেকেই রাজনীতি করার জন্য রাজি হয়ে যাই। অল্প সময়ের ভিতর আমরা রুম পেয়ে গেলাম। আর যারা বোকার মত (বস্তুুত তারাই এখন ভাল আছে,তারাই চালাক) রাজনীতি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তারা গণরুমেই কষ্ট করে থাকতে লাগল।আমরা অনেক রাজনৈতিক ফায়দা লোটা শুরু করলাম। রাজনৈতি ফায়দা গুলো ছিল .....

১. আমরা ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে বেড়াতাম যা ইচ্ছা তাই করতাম।
২. ইভটিজিং করতাম বড়ভাইদের সামনেই এমনকি তারাই শুরু করত।
৩. ক্যান্টিন ও হোটেল গুলোতে ফাও খেতাম।
৪. রাজনৈতিক শিক্ষকদের সাথে ওঠাবসা করতে পারতাম।
৫. অরাজনৈতিক বড় ভাইদের হুমকি ধামকি দিতাম এমনকি মারধর ও করতাম।
৬. ডিপার্টমেন্টে যে সংসদ আছে তাতে ডমিনেট করতাম।
৭. ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের কাছে ছিনতাই ও করেছি।
৮. বাস ভাংচুর করতাম ইচ্ছে মত।

এসব ছিল আমাদের নিত্যদিনের কাজ। যদিও বড় ভাইরা মনে করত আমরা তও¦াবধায়ক সরকারের কারণে বেশি কিছু করছিনা।

আমাদের প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট:
ক্লাসের সুবাদে আমরা তখন প্রায় পুরাতন কলা ভবনে গিয়ে আড্ডা দিতাম। একদিন আমাদের এক বড় ভাই ফোন করে ট্রান্সপোর্ট এ ডাকলেন। আমরা তরিঘরি করে ট্রান্সপোর্ট এ চলে গেলাম। মাস্টারস এর একজন ছেলেকে পেটাতে হবে। আমরা অনেক্ষণ ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করলাম । তারপর যখন সে আসল তখন তাঁকে ধাওয়া করলাম। ছেলেটা দৌড়ে পালাতে লাগল। আমরা হাতে লাঠি,রড ইত্যাদি নিয়ে দৌড়াতে লাগলাম তাঁর পিছে। ছেলেটা পুরাতন কলাভবনে গিয়ে একটা প্রভাবশালি শিক্ষকের কাছে আশ্রয় নিল। আমরা নিচে দাড়িয়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। অনেক পরে আমাদের এক বড় ভাই জানালেন যে সেই প্রভাবশালি শিক্ষক আর কেউ নন তিনি আমাদেরই দলের। স্যার নাকি আমাদের বলেছেন একটু দুরে সরে থাকতে , একটু পড়ে যখন ছেলেটাকে স্যার যেতে দিবেন তখন যেন আমরা তাঁকে ধরি। ঠিক সেই মত আমরা দুরে সরে থাকলাম এবং সুযোগ বুঝে ছেলেটাকে ধরে ফেললাম।

তারপর ট্রান্সপোর্ট চত্বরে সেই বড় ভাইকে নিয়ে তার বিচার করা হল। স্যার নাকি মারতে নিষেধ করেছিল তাই ২০/২৫ টা কিল ঘুষি দেওয়া হল এবং ট্রান্সপোর্টের শত শত ছাএ ছাএীর সামনে তাঁকে কানে ধরিয়ে ওঠবস করানো হল।

হয়তোবা আপনাদের জানতে ইচ্ছে করছে কেন আমরা ঐ মাস্টারস এর বড় ভাইকে শাস্তি দিলাম। না বিনা কারনে নয়, আমরা পলিটিকালরা এত খারাপ না যে বিনা কারণে একজন সিনিয়রকে শাস্তি প্রদান করব। আসলে আমরা এর আগেরদিন যখন বাসে করে আসছিলাম তখন ঐ বড় ভাইয়ের সাথে আমাদের প্রথম বর্ষের এক বন্ধুর সীট নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমার বন্ধু ওনাকে সীট ছেড়ে দিতে বলেছিল,কিন্তু উনি তা করেননি। হয়তোবা উনি জানতেন না যে আমরা পলিটিকাল, তাই ওনাকে এই মৃদু শাস্তির মাধ্যমে আমরা আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম।
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×