somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালয়েশিয়া বো'লে ! ....১৩

১৯ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ-আরো কয়েক ছত্র

বর্জ্য থেকে বিদ্যুতের ধারণা যেহেতু নতুন সেহেতু উৎপাদনের পরিমান এখনো বেশী নয়। আসলে জীবাশ্ম জ্বালানী (Fosil fuel) (ডিজেল/ফার্নেস অয়েল/গ্যাস/কয়লা ইত্যাদি) নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি নিয়ে আমাদের সকল মনোযোগ ছিলো বলে ওখানে মানুষের সফলতার মাত্রা বেশী। ওই জ্বালানী এবং তার প্রযুক্তির দক্ষতাও বেশী। জীবাশ্ম জ্বালানী ফুরিয়ে যাচ্ছে দেখেই সবার টনক নড়েছে। তাছাড়া তেল/ কয়লা তুলনামূলক ভাবে কম পরিবেশবান্ধব।

ফলে বিকল্প জ্বালানী হিসাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর দিকে চোখ পড়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানী বলতে সাধারনত এমন জ্বালানীকে বোঝায় যা শেষ হবে না। সব সময় এ উৎস থেকে জ্বালানী মিলবে। এই দলে আছে জলবিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস, বর্জ্য বিদ্যুৎ ইত্যাদি। নদীর স্রোত চলে গেলেও তার পেছন পেছন নতুন স্রোত আসে। সন্ধ্যায় সূর্য ডুবলেও পরদিন নতুন করে সূর্য ওঠে। বায়ু বয়ে যাবার পেছন দিয়ে নতুন বায়ুপ্রবাহ হাজির হয়। পালিত পশুর বর্জ্য নিয়ে আসার পর ওরা নতুন বর্জ্য হাজির করে। নগরের বর্জ্য আনার পরদিন নগরবাসী নতুন বর্জ্য সরবরাহ করে। এই উৎসগুলো নিত্য নবায়িত হয়, কখনো ফুরায় না। এগুলো প্রধানত: পরিবেশবান্ধবও বটে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানীর মধ্যে সবচেয়ে দক্ষ জলবিদ্যুৎ। এর ব্যবহার অনেকদিন ধরেই। বিশ্বজুড়ে বহু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। বাংলাদেশেও কাপ্তাইতে একখানা আছে সেই ষাটের দশক থেকে। প্রতিবেশী নেপাল এবং ভূটান জল বিদ্যুতের স্বর্ণখনি বিশেষ। গত বছর গুয়াহাটিতে ( গৌহাটি) এক সম্মেলনে ভারতের খনিজ মন্ত্রনালয়ের সচিব শ্রীমতি সামান্থা শীলা নায়ার ভূটানীদের সম্পর্কে দুর্দান্ত এক মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর ভাষায় "এই বুদ্ধিমান জাতি (ভূটানী) তাদের নদীর পানিকে তেলে পরিণত করেছে।'' অনেক দেশ তেল বেচে যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে ভূটান জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র দিয়ে পানিকেও দামী বানিয়ে ফেলেছে। তারা বিদ্যুৎ (ভারতে) রপ্তানীকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যমে ( আয়ের প্রায় ৬০% এর বেশী) পরিণত করেছে।

বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য বাংলাদেশে কর্নফুলী ছাড়া এ রকম আর কোন তৈলাক্ত নদী নেই। মালয়েশিয়ায় এই খাতেও ভালো সম্ভাবনাময়। পাহাড়ী, সাগরঘেরা দেশ বলে সুযোগটা বেশী। পেনিনসুলার মালয়েশিয়া বা বোর্নিও দ্বীপের সাবাহ ও সারাওয়াক রাজ্য সবখানেই আছে সম্ভাবনাময় তৈলাক্ত নদী।

অন্যান্য উৎসের দক্ষ ব্যবহারের তরিকা মানুষ এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাই সৌর বা বায়ু বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ এখনো অনেক বেশী। ফলে জনপ্রিয় করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে কিছু চেষ্টা চলছে। তবে সম্ভাবনা বেশী নেই। মৌসুমীবায়ু অঞ্চলের দেশ বলে সারা বছর নির্দিষ্ট গতির বাতাস থাকে না। তবু কুতুবদিয়া আর সেন্ট মার্টিনে কিছু উইন্ডমিল বসানো হয়েছে। ফেনীতে বসানোর কাজ চলছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আমাদের সমস্যা প্রায় সাংবাৎসরিক ঘূর্নিঝড়। উইন্ডমিলকে কখন যে উড়িয়ে নিয়ে উড়ির চরে ফেলবে তার ঠিক নেই। অথচ মালয়েশিয়ার সেই ভয় নেই। ওদের সাগরপারের উইন্ডমিলের প্ল্যান দেখে ঝড়ের কথা তুলেছিলাম। ওরা জানালো ওদের ঝড়ের ভয় নেই। ওসব ওখানে আঘাত হানে না।

তবে বাংলাদেশ সৌর বিদ্যুতের জন্য স্বর্ণ খনি। বছরে ৩০০ দিনের বেশী সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। বাংলাদেশে সূর্যের তাপবিকিরণ মাত্রা ৪ থেকে ৬.৫ কিলোয়াটঘন্টা/বর্গমিটার। যা বেশ ভালো। কিন্তু ফটোভোল্টাইক প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন এখনো ব্যয়বহুল।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশের মতোই তাপবিকিরনের সুবিধা পায়।তবে সেটা ৩৬৫ দিনই।

বায়োগ্যাসের অবস্থাও এখনো উৎসাহ ব্যঞ্জক নয়।

বর্জ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জনবহুল বলে মালয়েশিয়ার চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। এখানে বিদ্যুৎ কম হলেও বাই-প্রোডাক্ট থেকে আয়ের সুযোগ আছে। যেমন- পানি শোধনের মাধ্যমে পানি ব্যবহারযোগ্য করা যায়। কী পানি কী হয় তা দেখুন পরের দুই ছবিতে-




এ ছাড়া লোহা আর প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কারখানায় বেচা যায়। (আগের পর্বে ছবি আছে বলে আবার ছবি দিলাম না)

পলিথিন থেকে প্লাস্টিক গুটি বানিয়ে সেটা প্লাস্টিক কারখানায় বেচা যায়। (এ ছবিও আগের পর্বে আছে)

তবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্ল্যান্টের ছবি দেখা যেতে পারে-





(চলবে)


সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×