somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষাক্ষেত্রে দূর্নীতিঃ একজন শিক্ষকের বিশ্লেষণ...

১৭ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের বিবেক বলে পরিচিত শিক্ষক সম্প্রদায়ের দ্বারা সংগঠিত কিছু দূর্নীতির পরিচয় সবার সামনে উম্মোচন করার অভিপ্রায় নিয়ে লিখছি...

Click This Link

আজ দ্বিতীয় অংশ~~~

প্রথমেই আমাদের বুঝতে হবে... দূর্নীতি কি... আভিধানিক অর্থে... দূর্নীতি হলো মানুষের এমন কিছু কর্মকান্ড যা-র দ্বারা সে অন্যের প্রাপ‌্য অধিকার হরণ করে কিংবা কোনো-না-কোনো ভাবে সে নিজে লাভবান হয় বা হওয়ার প্রচেষ্টায়-রত থাকে যা স্বাভাবিক নিয়মানুসারে বা রীতি-নীতি অনুসারে তার জন্য নির্ধারিত নয়...

এই সংজ্ঞানুসারে... কোনো ব্যক্তি যদি... সামাজিক, রাজনৈতিক বা মানসিক... / ... ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত... / ... অর্থের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বা অর্থের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া... অর্থাৎ যে-কোনো ভাবে-ই হোক না কেন... যদি কোনো ব্যক্তি-কে ঐ ব্যক্তির জন্য প্রাপ্তব্য সুযোগ-সুবিধা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চিত করা হয় বা প্রচেষ্টা নেয়া হয় তবে তা-কে-ই আমরা দূর্নীতি বলতে পারি...

কাজেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে... দূর্নীতি-র দুটি রূপ আছে... একটি হচ্ছেঃ অর্থের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট... এবং অপরটি হচ্ছেঃ অর্থের সাথে সংশ্লিষ্টতা ছাড়া...

আজ আমরা অর্থের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকার দূর্নীতি-র দিকে দৃষ্টিপাত করবো...

প্রথমেই আমরা আসি বেতন নির্ধারণ করা নিয়ে...

আমাদের দেশে দু-ধরণের চাকুরী-জীবি রয়েছেন... সরকারী এবং বেসরকারী...

সরকারী চাকুরী-জীবিদের ক্ষেত্রে... বেতন নির্ধারণ করা হয় মোট চারটি খাত-কে অন্তর্ভূক্ত করে...
১. মূল বেতন (স্কেল-এর ধাপ)
২. বাড়ী ভাড়া ভাতা (প্রাপ্ত মূল বেতন স্কেল-এর জন্য নির্ধারিত শতকরা একটি অংশ)
৩. চিকিৎসা ভাতা (প্রাপ্ত মূল বেতন স্কেল-এর জন্য নির্ধারিত শতকরা একটি অংশ)
৪. শিক্ষা ভাতা (প্রাপ্ত মূল বেতন স্কেল-এর জন্য নির্ধারিত শতকরা একটি অংশ)...
... এবং এটি প্রতি-বছর একটি নির্ধারিত হারে বর্ধিত হয়...।
... কাজেই যে-কোনো সরকারী কর্মচারীর প্রাপ্ত সাকুল্যে বেতন একটি নির্ধারিত অংকে আসার কথা... কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে-ই তা কি হয় বলে আপনার ধারণা???... না হয় না...

কারণ...
অসংখ্য সরকারী কর্মচারী তাদের জন্য নির্ধারিত মূল বেতন ও চিকিৎসা ভাতা সঠিক হারে উত্তোলন করলে-ও বাড়ী ভাড়া ভাতা এবং শিক্ষা ভাতা নিচ্ছেন দূর্নীতি-র মাধ্যমে.. উদাহরণ স্বরূপ...
১. অনেকে-ই সরকারী বাড়ী ব্যবহার করলে-ও বেতন উত্তোলনের সময় দেখাচ্ছেন যে তিনি তা করছেন না...
২. অনেকে-ই সরকারী বাড়ীটি ব্যবহারের অনুপযোগী করে তা পরিত্যক্ত হিসেবে দেখিয়ে বাড়ী ভাড়া ভাতা উত্তোলন করছেন... যেমনঃ যদি কোনো কর্মকর্তা নিজ এলাকায় চাকুরী করেণ এবং তার জন্য একটি নির্ধারিত বাড়ী থাকে অথচ যদি তার নিজের-ই বাড়ি থাকে তাহলে তিনি এই ধরণের কাজ করে থাকেন...
৩. অনেকে-ই সরকারী বাড়ী ব্যবহার করে বেতন থেকে নির্ধারিত অংশের চেয়ে কম অর্থ কর্তন করেণ...
৪. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে একদল কর্মচারী সঙ্গবদ্ধভাবে সরকারী বাড়ী ব্যবহার করলে-ও বেতন থেকে কেবল একজন কর্মকর্তা বাড়ী ভাড়ার অংশ কর্তন করছেন...
৫. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে একদল কর্মচারী সঙ্গবদ্ধভাবে সরকারী বাড়ী ব্যবহার না করে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করছে বাড়ী ভাড়ার অংশ প্রদান করতে...
৬. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে কোনো কোনো কর্মচারী সরকারী বাড়ী বরাদ্দ নিয়ে তা অন্যের নিকট ব্যবহারের জন্য ভাড়া দিচ্ছেন এবং প্রাপ্ত অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজে-ই পকেটস্থ করছেন...
৭. অনেকে-ই অন্যত্র বদলি বা অবসর-গ্রহণের পর-ও সরকারী বাড়ী ব্যবহার করছেন এবং এ-ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে-ই তিনি বাড়ী ভাড়া প্রদান করেন না...

আবার বে-সরকারী চাকুরী-জীবিদের ক্ষেত্রে... বেতন নির্ধারণ করা হয় দুই-ভাবে...
১. সাকুল্যে বেতন (প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত)
২. সরকারী কর্মচারীদের ন্যায় বিভিন্ন খাত মিলিয়ে (মূল বেতন স্কেল এবং এর সাথে নির্ধারিত বিভিন্ন ভাতার শতকরা অংশ)
... এক্ষেত্রে-ও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি...

কারণ...
অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে-ই কর্মচারীদের বেতন নিয়োগ-কর্তা তার ব্যক্তিগত পছন্দ অনুসারে নির্ধারন করেন... এবং প্রতি-বছর কর্তার খেয়াল-খুশি মতো যে-কোনো হারে বর্ধিত হয়ে থাকে...।

ফলে দেখা যায় যে... একই সঙ্গে একই পদে একই বেতনে নিয়োগ লাভ করার পর-ও বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে বেতনের বৈষম্য হচ্ছে... যা তাদের কর্ম-স্পৃহা-ই কেবল নষ্ট করে দিচ্ছে না বরং নীতি বিসর্জন দিয়ে অর্থ লাভের প্রতি লোভী করে তুলছে... অর্থাৎ দূর্নীতি-র প্রতি অগ্রসর হতে প্রলুব্ধ করছে...

.....................................................................................................

ধন্যবাদ সবাইকে (চলবে...)...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×