আমি অনেক নাটক আর জঞ্জাল পেরিয়ে চীন এসেছি গত ২৯ মার্চ। হয়তোবা দেশ থেকে আশাভঙ্গের বেদনা নিয়ে আসা, নতুন আশার ভেলাতে জীবনকে ভাসাতে আসা। এখানে থাকতে হবে আরও অনেকগুলো বছর।
এই লেখাটি ধারাবাহিক। অনেকটা ভ্রমণ কাহিনির আদলে আমার প্রাত্যহিক জীবনের হালচাল, চীনের ভাষা, ইতিহাস, কৃষ্টি, সভ্যতা সহ যত বেশি তথ্যবহুল পোষ্ট দিতে পারি তার চেষ্টা থাকবে নিরন্তর।
আমার একান্ত ইচ্ছে হল, যতদিন চীনে আছি এই ধারাবাহিকটি চালিয়ে যাওয়া, জানি না পারব কি না- তবে চেষ্টা করে দেখা যাক না কতটুকু সফল হতে পারি।
আজ তবে শুরু করি-
আমার ফ্লাইট ছিল ২৯ মার্চ, বেলা ১২ টায়- হজরত শাহ জালাল থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনের টিকিত কেটেছিলাম ২৮ তারিখ বিকেলের। কিন্তু বিধিবাম- আমার সাথে চীনে আসা আরেক বন্ধুর নানি মারা যায় সেদিন। অগত্যা ২৮ তারিখ রাতে বাসে করেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম। তার আগের দুদিন ছিল হরতাল। রাত বাড়তে থাকে কিন্তু গাড়ী এগোয় না। চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে রাত বাড়তে থাকে, একেকটি মিনিট যেন ঘণ্টার মতন। ফেনি পর্যন্ত জ্যাম থাকলেও তার পরে রাস্থা ক্লিয়ারই ছিল। কিন্তু ঢাকায় প্রবেশের আগেই শুরু জ্যাম। এই জ্যাম শেষ হবার নয়।চলছে গাড়ী যাত্রাবাড়ী- আর এতটুকুও নড়ে না। আর না পেরে সকাল ৮ টার দিকে বাস থেকে নেমে শুরু করলাম হাঁটা। অনেকটা অর্থহীনের অদ্ভুদ সেই ছেলেটির মতন, আমরা চারজন আজব মানুষ নামক প্রাণী চারটে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে শুরু করলাম দৌড়াদৌড়ি। এই দৌড়ের কথা হয়তোবা আমি কোনোদিন ভুলতে পারব না। যখনই আমি পেছনে ফিরে তাকাবো তখনই আমার চোখে ভেসে উঠবে সেই স্মৃতি। আধা ঘণ্টা পর সোনার হরিণ নামক ট্যাক্সি পাওয়া গেল। সাড়ে দশটার দিকে এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম। পরিচিত এক পাবলিক ছিল বলে ইমিগ্রেসনে তেমন ঝামেলা হয় নি। তারপর ওয়েটিং রুমে বসে সবার সাথে ফোনালাপ- এক সময় আমি বিমানে উঠি। জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ। এক দিকে উত্তেজনা আবার অন্যদিকে প্রিয়জনদের ছেড়ে আসার কষ্ট- এই মিশ্রানুভুতি নিয়ে ছুটে চলে বিমান... নতুন এক পথের বাঁকে। [চলবে]