somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলুন--সাফল্য আপনারই হবেঃ ((একটি আঁতেলমার্কা পোষ্ট)

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরল স্বীকারোক্তি: এই লিখাটির আইডিয়া, বেশ কিছু উদাহরণ ও তথ্য Shiv Khera-র লিখা You Can Win বই থেকে নেয়া।


এক বেলুনওয়ালার কাছে এসে এক শিশু জিজ্ঞেস করল যে কালো রঙ এর বেলুন আকাশে উড়বে কিনা, জবাবে বেলুনওয়ালা বলল ভাই বেলুন তো রঙের জন্য উড়ে না, ওড়ে এর ভিতরের গ্যাসের জন্য। ঠিক তেমনি মানুষ উপরে ওঠে তার ইতিবাচক মনোভাবের জন্য। শতকরা ৮৫ ভাগ ক্ষেত্রে প্রার্থীরা চাকরি পায় তাদের মানসিকতার জন্য, বাকি ১৫ ভাগ শিক্ষা-ডিগ্রীর জন্য।

একটি গ্লাসে অর্ধেক পানি থাকলে কেউ বলবে গ্লাস টি অর্ধেক ভর্তি, আবার কেউ হয়তবা বলবেন গ্লাসের অর্ধেক খালি। কিম্বা ডেভিড-গোলিয়াথ এর সেই গল্প। গোলিয়াথ নামের বিরাটকায় দৈত্যের অত্যাচারে গ্রামের ছেলেরা বাইরে বেরুনো বন্ধ করে দিলে ডেভিড নামের একজন বলল তোমরা এর সাথে যুদ্ধ করছ না কেন? জবাবের গ্রামের ছেলেরা বলল ওর সাথে যুদ্ধ করা সম্ভব নাকি কি বিরাট তার চেহারা? ডেভিড বলল চেহারা বিরাট বলেই তো যুদ্ধ করা সহজ, কারন কোন তীর ফস্কানোর সম্ভবনা কম। এবং তার নেতৃত্বে ছেলেরা যুদ্ধ করে গোলিয়াথ কে পরাজিত করল। কিম্বা ধরুন জুতা কোম্পানীর সেই দুজন বিক্রয় প্রতিনিধির কথা।যাদের আলাদা ভাবে পাঠানো হয়েছিল এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জুতার সম্ভাব্য বাজার নির্ধারন করতে। একজন এসে রিপোর্ট করল যে ওখানে জুতার কোন বাজার নেই। যদিও দশ হাজার লোক বাস করে কিন্তু কেউ জুতা পায়ে দেয় না। অন্য জন রিপোর্ট করল যে ওখানে জুতার বাজারের বিপুল সম্ভবনা কারন দশ হাজার লোকের কেউই জুতা পায়ে দেন না। এভাবেই ইতিবাচক মনোভাবের মানুষেরা অন্যদের চেয়ে আলাদা হয়ে যায়, সাফল্য তাদের ঘরে এসে ধরা যায়।

কিভাবে গড়ে তুলবেন ইতিবাচক মানসিকতাঃ

ইতিবাচক গুনের খোঁজ করুনঃ ধরা যাক, এক বিঘা জমির কোন এক জায়গায় কিছু সোনা লুকানো আছে আর সেই সোনা আপনি খুজছেন। আপনি অনেক ট্রাকের পর ট্রাক মাটি কাটছেন কিন্তু আসলে আপনি কি মাটি খুজছেন? অবশ্যই নয়। অনেক মাটিই আপনি কাটছেন ও সরাচ্ছেন, তাই বলে আপনি কিন্তু মাটি খুজছেন না, আসলে সোনা খুজছেন। প্রতিনিয়ত আমাদের মানুষের সাথে কাজ করতে হয়, অনেক কিছুই হয়তো আপনার পছন্দসই হবে না, কিন্তু মাটি সরিয়ে সোনা খোজার মত মানুষের খারাপ দিকগুলি সরিয়ে ফেলুন এবং তার মধ্যের ভাল গূণ গুলি খুজে বের করুন, ঠিক মাটি কেটে সোনা খোজার মত। প্রত্যেক ব্যাক্তির মধ্যে কিম্বা প্রতিটি অবস্থার (Situation) মধ্যে ভাল দিক রয়েছে। সেই লোকটির উদাহরণ নিন, যার মাথায় একবার পাখি বিষ্ঠা ত্যাগ করলে তিনি স্রষ্টা কে এজন্য ধন্যবাদ জানালেন যে গরু আকাশে ওড়ে না। কারন গরু যে পরিমান বিষ্ঠা ত্যাগ করে তা মাথায় পড়লে অবস্থা আরো খারাপ হতে পারত।

কৃতজ্ঞতা বোধ তৈরি করুনঃ
জীবনের প্রাপ্তি কেই বড় করে দেখুন, দুঃখ-কষ্ট কে নয়। সেই বিখ্যাত কবিতার লাইন চারটি আমাদের সবার মনে থাকারই কথা-

নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস
ওপারেতে সর্বসুখ আমারো বিশ্বাস
নদীর ওপার বসে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
কহে যাহা সুখ কিছু সকলই ওপারে।

কিম্বা সেই লোকের কথা, যে জুতা নাই বলে মসজিদে যেতে সংকোচ করছিল। তবে মসজিদে গিয়ে যখন দেখল একজনের একটি পা নেই তখন তার সব দুঃখ চলে গেল।

ছোটকালে শিখা এই জিনিশগুল আমরা বড় হয়ে ভুলে যাই। আমরা নিজের যা কিছু আছে তাতে সন্তোষ্ট হতে চাই না, আমার চেয়ে নীচে যে আছে তার দিকে দেখিনা। শুধু আমার চেয়ে উপরে যে আছে তার দিকে তাকাই আর আমার কেন সেটা নাই তা নিয়ে আফসোস করি। আমাকে যখন রিক্সাতে যেতে হয়, আমি আফসোস করে কেন আমার গাড়ি নেই, কিন্তু আমাকে যে রিক্সাওয়ালা হতে হয়নি তা ভেবে আমি কৃতজ্ঞ হইনা।

যে কাজ করতে হবে সেই কাজ কে ভালোবাসতে শিখুনঃ

আপনি হয়তো মন মত কাজ পান নি, এমন কাজ করছেন যা আপনার পছন্দ নয়। যেহেতু জীবিকার তাকিদে কাজ টি আপনি করছেন তাকে ভালোবাসুন। আপনি যদি অপছন্দ নিয়ে কাজ টি করেন তাহলে কাজটি করতে আপনার কষ্ট হবে, আপনি হতাশায় ভুগবেন, বড় সাফল্য পাবেন না। এখানে অথবা এই অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে অন্যখানে ক্যারিয়ার উন্নতির সুযোগ তৈরী হবে না।
ইন্টারনেটে পাওয়া এই কৌতুক হয়ত অনেকের জানা। এক লোক মাইক্রোসফটে অফিস বয়ের চাকরি পেয়েছিল কিন্তু তার ই-মেইল এডড্রেস না থাকায় তার জয়েন করা হয়নি। সে হতাশ হয়ে তার কাছে থাকা দশ ডলার দিয়ে সুপার মার্কেট থেকে টমেটো কিনে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করা শুরু করল। এই ব্যাবসায় উন্নতি করে এক সময় সে হলো দেশের সেরা চেইন ফুড শপের মালিক। এমন সময় কেউ একজন তার ই-মেইল ঠিকানা চাইলে উনি বিনীত ভাবে বললেন যে তার কোন ই-মেইল ঠিকানা নেই। ওই ব্যাক্তি তখন বিস্ময় প্রকাশ করে বলল আপনার ই-মেইল ঠিকানা না থেকেই এত বড় ব্যাবসা, ই-মেইল ঠিকানা থাকলে না জানি কি করতেন। উনি স্মিত হেসে বললের, আমি জানি ই-মেইল ঠিকানা থাকলে আমি মাইক্রোসফটের অফিস বয় হতাম।
কৌতুক তো গেল এবার আসি এক বাস্তব উদাহরণে। আমি এক বড় ভাই কে জানি যিনি বুয়েট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ ভালো চাকরি না পেয়ে হাতাশ হয়েই এক বায়িং হাউসে ঢুকেন মাত্র তিন হাজার টাকা বেতনে (৯৫-৯৬ সালের ঘটনা)। যদিও তিনি তখন টিউশনী করে এর দ্বিগুন টাকা কামাতেন। তিনি ক্যারিয়ারের স্বার্থে কাজটিকে ভাল বাসলেন এবং সাফল্য পেলেন। সময়ের সাথে কয়েক টি চাকরি বদল করে এখন একটি নামকরা প্রতিসঠানে উঁচু পদে কর্মরত। তেমনি অন্য ভাইকে দেখেছি একটি সরকারি চাকরির আশায় কয়েক বছর বসে থেকে নষ্ট করেছেন, তারপর ৩ বছর পর ঠিকই কোন বেসরকারি জায়গায় ঢুকেছেন। কিন্তু ততদিনে তিন বছর নষ্টের মনোকষ্ট, ভাল চাকরি না পাবার আফসোস সব মিলিয়ে সেখানে মন দিতে পারলেন না, চাকরি তে তেমন উন্নতি করতে পারলেন না। অবশেষে আরো পাচ বছর বছর নষ্ট করে ইমিগ্রেশন নিয়ে বিদেশ গমন। তারপরের খবর আর রাখিনা।
তাই মোদ্দা কথা হলো কাজ কে ভালবাসুন, সেটি আপনাকে উপরে নিয়ে যাবে।

মুলত আমাদের পরিবেশ, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা আমাদের মনোভাব তৈরীতে ভুমিকা পালন করে থাকে। সুতরাং আপনার পরিবেশ থেকে ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহন করুন, ইতিবাচক মানুষের সাথে মিশুন, ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে দিন শুরু করুন। আপনার লক্ষ্য নির্ধারন করুন এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়ে সে লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যান। দেখবেন সাফল্য আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে।


এতক্ষন যদি পড়েই থাকেন , তাহলে ইতিমধ্যে আপনার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরী হয়ে গেছে, তাই তাড়াতাড়ি প্লাস দিন আর ভাল ভাল মন্তব্য করুন।B-):D;)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৩০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×