somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রমজানে স্বাস্থ্যসম্মত আহার

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার রোজা শুরু ভাদ্র মাসে। সুতরাং আবহাওয়া বেশ উত্তপ্ত থাকবে। ফলে পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন অনেকেই। এ কারণেই রোজার তিন বেলার আহারে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া অন্য খাবারগুলো জলীয় হলেই ভালো হয়।

ইফতার
এই সময় প্রথম উপাদানটি হলো শরবত। এই শরবতের প্রচলন হয়েছে মূলত দেহে পানির ঘাটতি পূরণ করার জন্য। একেকটি বাড়িতে শরবত নিজস্ব স্বাদ ও রুচি অনুযায়ী তৈরি করা হয়। শরবতের উপকরণগুলো হলÑ লেবু, তেঁতুল, ঈসপগুল, তোকমা, স্কোয়াস, যে কোন ফলের রস, দুধ, দই, চিঁড়া ইত্যাদি। এর মধ্যে দেখা যায়, প্রতিটি উপাদানেরই খাদ্যগুণ ভালোমানের রয়েছে। যেমনÑ লেবু ছাড়াও অন্যান্য ফলের রসে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি, খনিজ পদার্থ। আবার ঈসপগুল ও তোকমা অন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো রাখে। ডাবের পানি বেশ উত্তম। এতে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম রয়েছে। যাদের প্রস্রাবে সমস্যা রয়েছে, অর্থাৎ প্রস্রাব কম হয় তাদের জন্য ভাবের পানি খুবই কার্যকর। রমজানে ডাবের ব্যবহার অনেক বেড়ে যায়। শরবতের পর প্রথমেই আসে ছোলার কথা। ছোলা ভাজায় পেঁয়াজ, শুকনো অথবা কাঁচা মরিচ, টমেটো, শসা দিয়ে খেলে সত্যিই অপূর্ব লাগে। ছোলায় যেমন আছে খাদ্যশক্তি, তেমনি রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি। ছোলা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তবে ওজন বেশি থাকলে ছোলা ভাজা বা ভুনা না খেয়ে সেদ্ধ ছোলা খাওয়া উচিত এবং পরিমাণেও কম হওয়া উচিত। ছোলা ছাড়া মটর দিয়ে চটপটি, ঘুঘনিও খাওয়া যেতে পারে। যারা বয়স্ক, চিবাতে অসুবিধা হয় তাদের জন্য ঘুঘনিই সবচেয়ে ভালো।
ছোলার পরেই আসে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, হালিম, তেহারি, চিঁড়া, কলা, নারকেল, দুধ, সেমাই, নরম খিচুড়ি, কাবাব, দইবড়া, জিলাপি ইত্যাদি আরও অনেক ধরনের খাবার। যেহেতু এসব খাবার সবই ক্যালরিবহুল, এ কারণে খাবারের মধ্যে পরিমিত বোধটা অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ দেখা যায়, শুধু ইফতারির প্লেট হিসাব করলেই দেখা যাবে ১০০০-১৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত ইফতারিতে খাওয়া হয়ে যায়।
ইফতারির উপাদানগুলোর মধ্যে ফল রাখাটা স্বাস্থ্যসম্মত। এতে ভিটামিন ও ধাতব লবণের অভাব পূরণ করা যায়। ফল দেহ ত্বক, চোখ, দাঁত, চুল, নখ যেমন ভালো রাখে তেমনি হƒদরোগীদের জন্যও ভালো। দেশী-বিদেশী যে কোন ফলই রাখা যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস ও কিডনির রোগ থাকলে রোগটিকে বিবেচনায় এনে তবে ফল খেতে হবে। অনেকে ইফতারে কাঁচা ছোলা পছন্দ করেন। এটা যেমন রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে, তেমনি পুষ্টিকরও বটে। কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা কুচি, টমেটো কুচি, পেঁয়াজ, পুদিনা পাতা ও লবণ দিয়ে খেলে বেশ উপাদেয় হয়।

রাতের খাবার
অনেকে এত বেশি ইফতার করেন, ফলে রাতের খাবার খেতে চান না। এটা না করে কম করে সব বেলাতেই খাওয়া উচিত। রাতের খাবার হালকা হওয়াই বাঞ্ছনীয়। ইফতারের খাবারে ডাল বেশি থাকে বলে এ সময় ডাল বাদ দেয়া ভালো। মাংসের চেয়ে হালকা মশলার রান্না মাছ, সবজি, শাক, ভর্তা এগুলো থাকতে পারে।

সেহরি বা ভোররাতের খাবার
রমজানে এই খাবারটির গুরুত্ব অনেক। অনেকে মনে করেন, যেহেতু সারাদিন উপবাস থাকতে হবে, সেহেতু এ সময় বেশি বেশি খাওয়া উচিত। অন্যদিকে কেউ কেউ একেবারেই খেতে চান না। দুটোই ক্ষতিকর। অতি ভোজনে পেটে গ্যাস বা ডায়রিয়া হতে পারে, তেমনি আবার না খেয়ে রোজা রাখতে গেলে শরীর ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে। এছাড়া শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়াম কমে ইলেকক্ট্রোলাইটস ইমব্যালান্স হতে পারে। এদিকে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ সুদীর্ঘ উপবাস দেহের বিপাক ক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলে। দেহের গ্লুকোজ ক্ষয় হয় বলে সহজেই ক্লান্তি আসে। এতে দিনের স্বাভাবিক কাজকর্মও করা যাবে না। সেহরির খাবার হবে অন্যান্য দিনে দুপুরে যে পরিমাণ খাবার খাওয়া হয় ততটুকু। এ সময় এক কাপ দুধ খেতে পারলে ভালো হয়। ইফতারিতে তেলের পরিমাণ বেশি থাকে বলে রাতের খাবার ও সেহরিতে কম তেলের রান্না করা খাবার খাওয়া উচিত। সবশেষে বলা যায়, রমজানে অত্যন্ত গুরুপাক ও দামি খাবার নয়, সহজলভ্য, সহজপাচ্য, পুষ্টিকর, রুচিকর ও জলীয় খাবার খেলে ৩০ দিনের রমজান সুন্দর এবং সুস্থভাবে কাটানো সম্ভব।

সোরস: যুগান্তর
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×