somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশছোঁয়া বুর্জ খলিফা- সংযুক্ত আরব আমিরাতের গর্ব।

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এ অবস্থিত বুর্জ খলিফা হচ্ছে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম স্থাপনা। এর উচ্চতা ৮২৯.৮০ মিটার কিংবা ২,৭২২ ফুট। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এটি বুর্জ দুবাই নামে পরিচিত ছিল। অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল এই নামে। আরবিতে এটাকে বলা হয় খলিফা টাওয়ার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বুর্জ দুবাই এর নাম পরিবর্তন করে বুর্জ খলিফা রাখা হয়। ২০১০ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও বুর্জ খলিফার বাহ্যিক কাঠামোর কাজ শেষ হয় আরও অনেক আগে, ১ অক্টোবর, ২০০৯ সালে। অনিন্দ সুন্দর এই স্থাপনাটি যার মস্তিস্কপ্রসূত চিন্তার ফসল অর্থাৎ এটির মূল স্থপতি হচ্ছেন আমেরিকার শিকাগো শহরের এ্যাডরিয়ান স্মিথ (অফৎরধহ ঝসরঃয)। আর প্রধান প্রকৌশলী বিল বেকার (ইরষষ ইধশবৎ), তার বাড়িও একই শহরে। দুবাই এর প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র শেখ জায়েদ রোডে পৃথিবী বিখ্যাত এই স্থাপনাটির ঠিকানা। এটি নির্মাণ করতে মোট ব্যয় হয়েছে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।




গত ৫ জুলাই, ২০১৩ তারিখে আমি যখন বুর্জ খলিফা দেখার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিল যেন ইতিহাসের কোন এক মহেন্দ্র ক্ষণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমি। যে ইতিহাসের সাক্ষী হবার জন্য মনের অজান্তেই বোধহয় এতদিন অপেক্ষা করে ছিলাম আমি। কিন্তু শুধু সখের বশে দুবাই এসে বুর্জ খলিফার মুখোমুখি হওয়াটা ছিল আমার জন্য নিতান্তই বিলাসিতা। তাই ডান এন্ড ব্র্যাডস্ট্রীটের আমন্ত্রণ পেয়ে রীতিমতো উৎফুল্ল হয়ে উঠলাম আমি। দুবাই এ বেড়ানোর মুল খরচটা অর্থাৎ ফাইভ স্টার হোটেলে তিনরাত-তিনদিন থাকা-খাওয়ার সমস্ত খরচ ওরাই বহন করবে। এমন সুবর্ণ সুযোগ মানুষের জীবনে কমই আসে। অফিস থেকে নমিনেশন পাবার পর রীতিমতো উৎফুল্ল হয়ে ছিলাম আমি। ওদের সিডিউল অনুযায়ী ৪ জুলাই তারিখে আমিরাত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দুবাই পৌঁছলাম বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৪ জন কর্মকর্তা। মূল প্রগ্রাম সেমিনার এক দিনের, ৫ তারিখে। ঐদিনই বিকেলে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো বুর্জ খলিফা দেখার জন্য। শুধু দেখা নয়, বুর্জ খলিফার সর্বোচ্চ ফ্লোর ১২৪ তলায় উঠার ব্যবস্থাও করা হলো আমাদের জন্য।



সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে আপন গরিমায় অস্ত যেতে ব্যস্ত। সারিবদ্ধভাবে লিফট এ উঠে মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে ১২৪ তলার পর্যবেক্ষণ ডেকে উঠে গেলাম আমরা। সত্যি ইতিহাস যেন আমাদেরকে বরণ করার জন্য অপেক্ষায় ছিল এতদিন। বিকেলের স্নিগ্ধ আলোয় চারপাশে তাকিয়ে আমার অন্তত সেই মুহূর্তে তাই মনে হলো। বুর্জ খলিফার ১২৪ তলায় নিজের পদরেখা এঁকে দিতে পেরে সেই মুহূর্তে আমার নিজকে অত্যন্ত গর্বিত মনে হলো। অসংখ্য পর্যটকের কলতানে মুখরিত তখন বুর্জ খলিফার ১২৪ তলার ডেকটি। সেই সাথে যোগ হয়েছে অনবরত ছবি তোলা আর সবার মুখ থেকে বেরিয়ে আসা আনন্দ বিস্ময়ের ধ্বনি। পুরো দুবাই শহর যেন আমাদের দৃষ্টির ফ্রেমে বন্দী এই মুহূর্তে। সেখানেই আমি মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। আরও দুই জন ভদ্রমহিলাও নামাজ আদায় করলেন আমার পাশে দাঁড়িয়ে।

এই টাওয়ারে ৯০০টি এপার্টমেন্ট রয়েছে। একসাথে ৩৫,০০০ লোকের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে এতে। ৫৭টি লিফট ও ৮টি এসকেলেটর সব সময় ব্যস্ত রয়েছে এই বিপুল সংখ্যক দর্শককে উঠানামা করার জন্য। গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে ১৬০ তলা পর্যন্ত উঠার জন্য এতে রয়েছে ২,৯০৯ টি সিঁড়ি। উল্লেখ্য যে, বুর্জ খলিফার পর্যবেক্ষণ ডেকটি পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্যবেক্ষণ ডেক, যার উচ্চতা ৪৫২ মিটার কিংবা ১,৪৮৩ ফুট। তাছাড়া বুর্জ খলিফার ভূমিতল ২৭ একর জায়গা নিয়ে তৈরী একটি পার্ক দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই পার্কে রয়েছে ছয়টি স্বচ্ছ জলাধার, বাগান, পাম লাইন ওয়াকওয়ে এবং পুষ্পশোভিত গাছ। আর মূল কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে মরু পুষ্পের আদলে তৈরী বুর্জ খলিফা।



২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যারিস্টার সুমন দায়মুক্ত , চু্ন্নু সাহেব কি করবনে ?

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ০৮ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৭


দেশে প্রথম কোন সংসদ সদস্য তার বরাদ্ধের ব্যাপারে Facebook এ পোষ্ট দিয়ে জানিয়ে থাকেন তিনি কি পেলেন এবং কোথায় সে টাকা খরচ করা হবে বা হচ্ছে মানুষ এসব বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×