somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশ তো লুঙ্গি গেঞ্জি পরে না

০৯ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের তো বেহেশত দোজখ নাই। তাই দেশের ধরম বা রাষ্ট্র ধরম থাকতে পারে না। যুক্তিযুক্ত কথা।
যুক্তিটা হচ্ছে রেজাল্ট বেইজড। প্র্যাক্টিস বেইজড না।
ছোট বেলায় কেউ কেউ ছিলো অঙ্ক মুখস্ত করতো। কিছু কমন সরল অঙ্কের আনসার জানাই থাকতো ০ বা ১।
সরল অঙ্কের আন্সার ০ বা ১ না হইলে মনে খটকা থাকতো মনে হতো কোথাও ভুল হইছে।
তারা পিছন দিক দিয়ে অঙ্ক শুরু করতো মানে আন্সার থেকে প্রশ্নের দিকে আসা।
দেশের ধরম বা রাষ্ট্র ধরম থাকতে পারে না এই কথাটা মনে হয় কথার মাইর প্যাচ ছারা কিছু না।
মানে কথা সত্য মতলব সন্দেহজনক।
আর প্র্যাক্টিস বেইজড একটা কথা হচ্ছে দেশ তো নামাজ রোজা পালন করে না।
এখন যারা এই যুক্তির প্রচলন করতেছে তাদের যদি বলি দেশ তো লুঙ্গি গেঞ্জি পরে না।
তাইলে বাংলাদেশের জাতীয় পোশাক থাকতে পারেনা।
দেশ তো মাছ ভাত খায় না তাই দেশের জাতীয় খাবার থাকতে পারে না।
এসব কথা বললে হায় জালা জালা জালা এই অন্তরে গান মনে পরে যাবে।
দেশের বা রাষ্টের সাথে এইসব কথা (ধরম বা খাবার বা পোশাক) জড়ানোর মানে হচ্ছে দেশের বেশিরভাগ মানুষের বইশিষ্ট্য প্রকাশ করা।
ধরম মানে জীবন বিধান বা কে কিভাবে চলে তার নিয়ম বা বইশিষ্ট্য। আর এর রেজাল্ট কি হবে সেইটা এক এক ধরমের মানুষের কাছে এক এক রকম।
এইটা এখানেই শেষ করা উচিত। বেশি কচলাইলে লেবু তিতা হয়ে যাইতে পারে। কারন এই পর্যন্ত কোন রাজনীতি নাই।

ধরম ব্যাবহার করে রাজনীতি করা আমি অপছন্দ করি।ধরমের কথা বলে মানুষ্কে নিরযাতন করা আমি ঘ্রিনা করি।
এটা কি এমন নয় যে দেশের বেশির ভাগ মানুষ ভাত খায় তারা কিছু মানুষকে দেখতে পারে না যারা রুটি খায়।
অথবা কোকরানো চুল ওয়ালা মানুষেরা সোজা চুল ওয়ালা মানুষ্কে দেখতে পারে না।
আমাদের মনে অসুখ আছে। আমরা সবসময় প্রতিপক্ষ চিন্তা করে রাখি।
বিএনপি হলে আওয়ামিলিগের প্রতিপক্ষ।
আবাহনি হলে মোহামেডানের প্রতিপক্ষ।
এরকম আরও আছে।
হিন্দু বা ইহুদি হলে মুসলমানের শত্রু হবে বা তাদের প্রতি বিদ্দেষ পোষন করতে হবে এইটা অন্যায় কথা।
সেভাবে মুসলমান হলে হিন্দু বা ইহুদিদের শত্রু হবে বা তাদের প্রতি বিদ্দেষ পোষন করতে হবে এইটাও অন্যায় কথা।

দেশের রাষ্ট্র ধরম কোথাও লেখা থাকুক বা না থাকুক আমরা নিজেরা না বদলালে এইগুলা (সংখ্যালঘুদের উপর নিরযাতন করা) বদলাবে না। আর আমরা যদি কোনো দলকে সাপোরট করি আর তাদেরকে যদি দেখি ধরম নিয়ে মানে ধরম ব্যাবহার করে রাজনীতি করতেছে সে ক্ষেত্রে আমাদের উচিত তার প্রতিবাদ করা।
আর দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে ধরমের দরকার আছে কি নাই এক্ষেত্রে আমি বলব অবশ্যই দরকার আছে। ইসলাম হচ্ছে পরিপুরন জীবনবিধান। রাস্তায় কিভাবে হাটতে হবে এই নিয়ম থেকে শুরু করে রাষ্ট পরিচালনা সবকিছুই সুন্দরভাবে আছে এতে। আমরা এটা মানতে না পারি বা এভাবে চলতে না পারা এক জিনিস আর এটাকে প্রাচীন ধরম, এখন চলে না এইটা বলা আরেক ব্যাপার।
আমরা জামাত ইসলামি এর বিরোধিতা করতে যেয়ে ওরা যা বলে তার সব কিছুর ই উলটা বলা অভ্যাস করে ফেলছি।
ধরি দেশে জামাত নামে কোনো দল নাই এখন চিন্তা করি যে আমাদের দেশ কোন নিয়মে চলা উচিত।
এখনকার মিডিয়া ইসলামকে এমনভাবে রিপ্রেজেন্ট করতেছে যে মনে হয় ইসলাম মানে সন্ত্রাসী আর তথাকথিত ফতোয়াবাজদের ধরম।
কিন্তু ইসলামে অন্য ধরমের মানুষের সারথের কথা যেভাবে বলা আছে অন্য কোন সমাজ ব্যাবস্থায় তেমন নাই বলে আমার মনে হয়।
যাই হোক আমরা ইসলাম বলতে ইদানিং যা দেখি তার সাথে নবীর সময়ের ইসলামের কিছু তুলনা করা যাতে পারে বা আসল ইসলামের কিছু ঘটনা বলা যেতে পারে -
(যতটুকু শুনছি বা মনে আছে তা থেকে লিখছি, ঘটনা কম বেশি হওয়া সাভাবিক আর মোটামূটি এরকম, ভুল আল্লাহ ক্ষ্মা করুক)
মুহাম্মাদ(সাঃ) এবং তার সাহাবি বা সাথিদেরকে ইসলাম পালন করার অপরাধে মক্কার কাফের রা অকথ্য অত্তাচার করতো।
বেলাল(রাঃ) কে উত্তপ্ত বালুর মধ্যে ফেলে চাবুক দিয়ে পিটাইতো, খাব্বাব(রাঃ) কে জলন্ত কয়লার উপর দিয়ে টেনে নিয়ে গেছে, এরকম অনেক নিরযাতন করার পরে সবাই নিজ জন্মভুমী ছেড়ে মদিনা শরিফে হিজরত বা মাইগ্রেট করে।
এরপরে বেশ কয়েকটা যুদ্ধ হইছে অনেক হতাহত হয়েছে উভয় পক্ষে।
পরে মুসল্মানেরা যেদিন মক্কা শরিফ বিজয় করে সেদিন সবাই আনন্দ করছে আর এক সাহাবী নবীজীকে বলছেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আজকে প্রতিশোধের দিন। নবীজী(সাঃ) উত্তর দিলেন অনেকটা এরকম যে, না আজকে ক্ষমার দিন।
এইদিন রাতের বেলায় সবাই যখন ক্লান্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে তখন নবীজী মক্কা শরিফের রাস্তায় বের হলেন সবার অবস্থা দেখার জন্য। দেখলেন যে এক ব্রিদ্ধা তার জিনিসপত্র নিয়ে মক্কা শরিফ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। নবীজী তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কোথায় যাচ্ছেন? উনি উত্তর দিলেন তুমি জানো না আব্দুল্লাহর ছেলে মুহাম্মাদ মক্কা দখল করে নিছে, এখন আর এই শহরে নিজের বাপ দাদার ধরম নিয়ে বাস করা যাবে না তাই এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
নবীজী বললেন ঠিক আছে আপনার তো কষ্ট হচ্ছে, আপনার জিনিসপত্র আমাকে দেন আমি বয়ে নিয়ে দিয়ে আসি, এই বলে তার জিনিসপত্র নবীজী নিয়ে বহন করে তার গন্তব্যে পৌছে দিলেন। এরপরে ব্রিদ্ধা নবীজীকে বললেন দাড়াও তোমাকে কিছু পারিশ্রমিক দেই। নবীজী(সাঃ) বললেন আপনি মুরুব্বী মানুষ তাই আপনার লাগেজ বহন করেছি, পারিশ্রমিক লাগবে না।
তখন ব্রিদ্ধা জিজ্ঞাসা করলেন তোমাকে তো খুব সচ্চরিত্রবান আর ভাল লোক মনে হচ্ছে, তুমি কে?
নবীজী উত্তর দিলেন যেই মুহাম্মাদের ভয়ে আপনি মক্কা শরিফ ছেড়ে আসছেন আমি সেই মুহাম্মাদ।
ওই সময়ে ইহুদিরা যখন বাইরের দেশে ব্যাবসা করতে যেতো তাদের মেয়েদেরকে মুসলমানদের বাড়িতে রেখে যেতো এই ভরসায় যে এখানে তাদের কোনোরুপ ক্ষতি হবে না।
আর আজকের আমাদের অবস্থা একটু চিন্তা করে দেখি।আমি চাই আমাদের দেশ ও দেশের মানুষ ওইরকম সমাজের মতো হোক।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:১২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×