somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি চমৎকার উইকএন্ড

০৭ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল ছিল শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন। ঘুম থেকে উঠেছি ভোর ছয়টায়, সাতটার মধ্যে বাসা থেকে বের হয়ে পড়েছি। লক্ষ্য বিন্দুবাসিনী বালক বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল। উদ্দেশ্য সেখানকার জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। প্রথম আলো আর রবি মিলে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। তার আগের শনিবারে নন্দনে হয়ে যাওয়া ঢাকার অনুষ্ঠানেও গিয়েছিলাম নাজিয়া আর মুনকে নিয়ে। কাল অবশ্য আমি একা ছিলাম।

প্রথম আলোর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানগুলোতে আমি যাওয়ার চেস্টা করি দুটো কারণে। প্রথমত একঝাক বর্ণাঢ্য আলো ঝলমল ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেখা হয়। আ দ্বিতীয়ত দেখি আমার একটি ছোট ধারণা কতোটা পল্লবিত হয়েছে সেটা দেখতে।

১৯৯৯ সালে, তখন প্রথম আলোর বয়স এক বছরও হয়নি। রওশন ভাই তখন বিশাল বাংলার দায়িত্বে। প্রথম আলোতে আমার তার গ্যাজাগ্যাজির ভালই সময় কাটতো। তা তখনো কিন্তু গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হয় নি। মেধা তালিকা ছিল।

দিন মাস মনে নেই।যেদিন এসএসসির রেজাল্ট বেরহলো, তার পরদিন আমরা পত্রিকার পাতা দেখেছি। তখন এখনকার মতো গ্রুপ ছবি ছাপা হতো না। ছাপা হতো, সলো। বাবা-মার সঙ্গে প্রথম দ্বিতীয় যারা হতো তাদের ছবি। হেডিং হতো - অমুক ডাক্তার হতে চায় ...

সেদিন রাতের বেলায় আমার মনে হল আচ্ছা যারা প্লেস করেছে তাদেরকে নিয়ে একটি অনুষ্টান করা যায় না? চিন্তাটা মাথায় আসার একটি কারণ হলো আমাদের সময়ে (আশির দশকে) সরকার প্রধানই কৃতীদের সংবর্ধিত করতেন। কিন্তু নব্বই দশকে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। আমি ভেবেছিলাম- আ হা, আমরা যদি করতে পারতাম!

তো, যেকোন চিন্তা মাথায় আসলে প্রথমে সেটা রওশনভাইকে বলতাম ( ব্যাপারটা ভোরের কাগজ থেকেই ছিল। এমনকী আমার বিয়ের পাত্রী নির্বাচনেও আমি, রওশন ভাই আর তাপসের আলোচনার একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল!) রওশন ভাইকে বলার সঙ্গে সঙ্গে রওশন ভাই বললেন ওতো আলাপের দরকার নাই, সরাসরি মতি ভাইকে বলেন।
ব্যাস রাত ১১ টার সময় মতি ভাইকে (প্রথম আলোর সম্পাদক) ফোন। বললাম - এবারে যারা এসএসসিতে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে তাদেরকে সংবর্ধনা দিতে চাই। মতি ভাই জানতে চাইলেন সেখানে কী হবে? আমি বললাম সেখানে কী করবো এখনো জানি না। আগে আপনি রাজী হোন। আমরা ঠিক করবো। আমি ভেবেছিলাম মতি ভাই হয়তো বলবেন কাল বলবেন। কিন্ত, তিনি রাজী হলেন। বললেন - ঠিক আছে, দাও।

পরদিস থেকে শুরু হলো আমাদের প্রস্তুতি। প্রথমে কাজ ছিল মেধা তালিকা যোগাড় করা। সেটা আমার জন্য সহজ ছিল কারণ এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার গোল্লা পূরণের সিস্টেমের উদ্ভাবনের সঙ্গে আমার সংযুক্তি ছিল। ফলে, বোর্ড কম্পিউটারকেন্দ্রে আমার যোগাযোগ ছিল।
বাজেট হলো, বই-ক্রেস্ট‌-সার্টিফিকেটের কথা হলো। কিন্তু তখনো আমরা জানতাম না আমরা অনুষ্ঠানে কী করবো।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে সুমি আপাকে ভজানো হলো উপস্থাপনার জন্য, আনিস ভাই-এর নেতৃত্বে। সুমি আপাই বললেন কন্ট্রিবিউটরদের দিয়ে গোয়েন্দাগিরি করা হবে। মানে কৃতীরা যখন আসবে, গল্প করবে তখন ফাঁকে ফাঁকে জেনে নেওয়া হবে কার কী পছন্দ, কে কোন গান পারে কী আবৃত্তি করে।
ব্যাস জমে গেল অনুষ্ঠান। সবাইকে চমকে দেওয়া হলো অনুস্ঠানে।

গ্রেডিং সিস্টেমে প্রথম বছর ৭৮ জন ছিল ৫.০। কাজে সমস্যা হয়নি। কিন্তু যখন ৫০০০ ছাড়িয়ে গেল তখন সমসযআ হলো। তারপর স্পন্সর আর নন্দন যোগ হয়ে, এখনকার আয়োজন। এবছরে এ আয়োজনে ম্যালা টাকা খরছ হয়েছে, মোট ৭১টি অনুস্ঠান। কয়েকটি এখনো বাকী।

তা বিন্দুবাসিনী স্কুলে গিয়ে দেখরাম সবাই সাড়িবেঁধে সার্টিফিকেট আর রবির ব্যান্ড নিচ্ছে। সাংস্কৃতিক অনুস্ঠানের আগে ২ মিনিট পর্ব। আমি যখন বলতে উঠেছি ততক্ষনে ওদের একটু উস্কুখুস্কু ভাব। আমি অবশ্য ফর্মাল বক্তৃতা দিতে পারি না। কাজে ওদের সঙ্গে কতক্ষণ হৈ চৈ করে নেমে পড়লাম।
ওদের আনন্দ দেখে খুব হিংসা হয়েছে। ভেবেছিলাম ওদের সঙ্গে কিছুক্ষণ নাচবো।

তা সে সুযোগ হলো না, কারণ মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সভা রয়েছে নামাযের আগে শেষ করতে হবে। আর উইকিপিডিয়ার জন্য ভাসানীর আর জাহ্নবী স্কুলের ছবি তোলা। কাজে যেতে হলো।

ভাসানীতে খুব ভাল একটা মতবিনিময় আর প্রস্তুতি সভা করলাম আমরা। সিদ্ধান্ত হলো একটি দুইদিনের বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি উৎসবের। তার আগে একটি উইকি কর্মশালার।

ঢাকায় ফিরে আরো দুইটি অনুষ্টান ছিল্। নাজিয়ার দেওয়া ভোজসভায় যোগ দিতে পারলেও বাকিটিতে আর যেতে পারি নি!

আজ সকালে গিয়েছি কুমিল্লায়। সেখানে একটি সেমিনারে ‘ তার আগে চাই ব্রডব্যান্ড’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনা করতে হয়েছে। ওখানে বেশ কিছু ডেভেলপমেন্ট আছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য কিছু উদ্যোগ নিবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আশা করি, এটি নিয়ে একটু ডিটেল লেখা যাবে।
সেখান থেকে সরাসরি গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে গোল টেবিল বৈঠকে। শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় সেখানে ছিলেন। আলোচনা হয়েছে গণিত শিক্ষা নিয়ে। এটি নিয়ে বিস্তারিত লেখার দরকার নেই কারণ কালকের পত্রিকায় সারাংশ এবং আগামী হপ্তায় বিস্তারিত জানা যাবে।

কাল সকাল থেকে রুবাই এর স্কুল। মানে আমার ভোর সাড়ে ৬টায় জেগে ওঠার দিন শুরু।

এই তো জীবন!

সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×