somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশি-বিদেশীদের চক্রান্ত চলছেই গার্মেন্টস শিল্পকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার ষোলকলা পূর্ণ হতে যাচ্ছে?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে গার্মেন্টস শিল্পকে ঘিরে নানা ধরনের চক্রান্ত চলছেই। এই শিল্পকে বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দেয়া বা বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার ষোলকলা পূর্ণ করতে চাইছে চক্রান্তকারীরা। শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া ইস্যুতে চক্রান্তকারীরা উস্কানী দিয়ে চালাচ্ছে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ। কিন্তু রাজনৈতিক দল, এনজিও, কথিত শ্রমিক সংগঠন, শিল্পে কর্মরত বিদেশী-দালাল চক্র গোটা গার্মেন্টস সেক্টরকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
এ দেশে গার্মেন্টস শিল্পের ভবিষ্যৎ কি? এ প্রশ্ন পর্যবেক্ষক মহলের। কেন এই অস্থিরতা, কারা এর পেছনে ইন্ধন দিচ্ছেন? এসব প্রশ্ন সচেতন নাগরিক সমাজের। বেতন-ভাতা, কাজের পরিবেশ, শ্রমিকের মৃত্যু বা আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে শিল্পে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ, লুটপাট চলে। ২০০৬ থেকে এ পর্যন্ত কয়েক শত গার্মেন্টস শিল্প হামলার শিকার হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, গার্মেন্টস শিল্পের অগ্রযাত্রা এরই মধ্যে থেমে গেছে। এখন পিছিয়ে যাচ্ছে। শিল্প রুগ্ন বা বন্ধ হচ্ছে, কিনে নিচ্ছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। অনেকে আবার শিল্প বন্ধ করে বসে আছেন।
গার্মেন্টস শিল্পে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কথা উঠে এসেছে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন এই শিল্পতে চলছে নানা চক্রান্ত। আর কিছু লোকের রোজগারের পথ সৃষ্টি হয়েছে।
গার্মেন্টস শিল্পকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ৪০/৫০টির মত সংগঠন। এই ৪০/৫০ সংগঠনের নেতা-নেত্রী মাত্র কয়েক জন। একজন একাধিক সংগঠনের নেতা বা নেত্রী। আর তাদের ওপরে আছেন কয়েকজন বাম রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী। এই শিল্পকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়া কিছু সংগঠন হচ্ছে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোট, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা সমন্বয় কমিটি ইত্যাদি। গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার নামে যারা আন্দোলন ও সরকার-মালিক পক্ষের সাথে দেন-দরবার করছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন বাম নেতা সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, আবদুস সালাম, শহীদুল্লাহ, মঞ্জুরুল আহসান, কমরেড খালেকুজ্জামান, রাজেকুজ্জামান, রতন প্রমুখ। কথিত শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আছেন মন্টু ঘোষ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি শিরিন আখতার, সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক জোটের সভাপতি রোকেয়া সুলতানা আঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক এসএম মাসুদ রানা, দফতর সম্পাদক আশরাফুল হক ঝন্টু, জনমুক্তি পার্টির সভাপতি আলম খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা সমন্বয় কমিটির নেতা আমিরুল হক আমিন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাইফুল হক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মিস শাফিয়া পারভিন, কেন্দ্রীয় নেতা মিস নুরুন নাহার, মো. ফারুক খান, মিসেস সুলতানা আক্তার, মিসেস আরজুয়ারা, মিসেস আরিফা আক্তার, মিসেস রাশিদা আখতার বানু প্রমুখ।
সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে উল্লেখিত যেসব নেতৃবৃন্দ সরকার ও মালিক পক্ষের সাথে বৈঠক করেন, তাদের সাথে মাঠ পর্যায়ের শ্রমিকদের তেমন কোনো সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি কাজী সিদ্দিকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, যারা নেতা তাদের সাথে প্রকৃত শ্রমিকদের কোনো সম্পর্ক নেই। বেশ কিছু গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা তাদের নেতাকে চিনে না। কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমরা টিভিতে নেতাদের চেহারা দেখি, তারা কাদের নেতা, কিসের নেতা তা আমরা জানি না।
এদিকে গার্মেন্টস শিল্পকে ঘিরে যেসব সংগঠন রাতারাতি জন্ম নিয়েছে অনেক সংগঠন যেগুলোর সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন থেকে শুরু করে এমন অনেক সংগঠন রয়েছে। কয়েকজন মিলে এক একটি সংগঠন দাঁড় করায় এবং দালালি ব্যবসা শুরু করে। এই শিল্পকে ঘিরে শুধু যে কিছু বামপন্থী রাজনৈতিক দল সুবিধা নিচ্ছে তা নয়, বহু নামে-বেনামে, বৈধ-অবৈধ সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাবি আদায়ের নামে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে এনজিও নামধারি কিছু সংগঠন তো আছেই। বিদেশী অর্থে পরিচালিত এনজিওগুলো দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাতকে ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত।
গার্মেন্টস শিল্প-মালিক আর শ্রমিকের মাঝখানে আছে কিছু দালাল। তারা মালিকের কর্মচারীও বটে। প্রোডাকশন ম্যানেজার, সুপারভাইজার নানা পদের এসব লোক মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করে রেখেছে। সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ-এরা নাকি তাদের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করে। হাজিরা দিতে ৫ মিনিট দেরি হলে একদিনের হাজিরা কেটে দেয়। ওভারটাইমের টাকা কেটে নেয়, বড়ধরনের কোনো সমস্যা হলেও ফ্যাক্টরী থেকে বাইরে যেতে দেয়া হয় না। আর শ্রমিকদের কোনো সমস্যা মালিক পর্যন্ত পৌঁছাতে দেয় না। এতে শ্রমিকরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্যাতিত হয়। অনেকেই মনে করেন মালিক-শ্রমিকের মাঝখানে যারা আছে তাদের বেশির ভাগই দালাল। এরা শিল্পের বড় ধরনের ক্ষতি করছে।
টেকনিশিয়ান বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বিদেশী (ভারত-শ্রীলঙ্কার) এ দেশের পোশাক শিল্পে কাজ করছে। তাদের কর্মকান্ড বা ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠে। প্রায় ৫ হাজার বিদেশী নাগরিক আছেন যাদের কর্মকান্ড নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ নিয়ে ইতোপূর্বে মালিক পক্ষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হলে মালিক পক্ষ জানান, দেশে টেকনিশিয়ানের অভাব আছে। তাই বাইরে থেকে লোক আনতে হয়।
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজার নষ্ট করতে এ দেশের কতক এনজিও সরাসরি চক্রান্তে জড়িত। তারা উস্কানি দিয়ে শিল্পে হামলা-ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করায়। আর ভিডিও করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচার করা হয়। ফলে ক্রেতা দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিচ্ছে। ক্রেতা চলে যাচ্ছে ভারত, ভিয়েতনাম, চীনসহ অন্যান্য দেশে। ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে ধস নামছে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×