somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজাকার প্রজন্ম যেভাবে ত্রিশ লক্ষ শহীদ সংখ্যা বিকৃত করতে চাইছে

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নতুন ব্লগ চালু হলেই এর প্রচার শুরু হয় জোরেশোরে । তেমনি একটি
ব্লগের ইমেইল পেলাম। আগ্রহ নিয়ে দেখলাম, পড়লাম । দেখলাম
সামুর ও বেশ কিছু ছাগু প্রজন্ম ঐ ব্লগটিতে ছড়ি ঘুরাবার চেষ্টা করছে।
তা তারা করতেই পারে। কারণ সময় টা তাদের ভালো যাচ্ছে না। তাদের প্রধান চার রাজাকার নেতা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ।

এদের একটি অংশ বাংলাদেশের মহান শহীদদের সংখ্যা পাল্টে দিতে
বেশ আগে থেকেই তৎপর।
আমিনূল মোহায়মেন নামের একজন রাজাকার প্রজন্মের লেখক একটি লেখা লিখেছে। তাদের ধৃষ্টতা কেমন তা দেখার জন্য ,
বুঝার জন্য লেখাটি লিংক সহ এখানে দিয়ে রাখলাম ।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদগণের ডেটাবেজঃ একটি প্রকল্প প্রস্তাব
আমিনূল মোহায়মেন


মুক্তিযুদ্ধের মত গৌরবময় ঘটনা শুধু বাংলাদেশী নয় পুরো বাঙ্গালী জাতির জন্য আর ঘটেনি। তেমনি মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, দেশের প্রতি তাঁদের অবদানেরও কোন তুলনা হতে পারে না। তারা এ মাটির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু দেশের সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নামগুলো পর্যন্ত দেশবাসী জানে না। দেশ স্বাধীন হবার পর তিন যুগ পার হয়ে গেল; অথচ, আজ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের কোন তালিকা প্রণয়ণ করা হয় নি। এ বিষয়ে সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে কোন উদ্যোগও নেয়া নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা ছোট ছিল কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশে যাদের জন্ম হয়েছে, তাদের অনেকেই জানে না, তাদের নিজ গ্রামে বা মহল্লায় কে কে জাতির জন্য চরম আত্মত্যাগটি করেছিলেন। তার পরের প্রজন্মের কথা তো বলাই বাহুল্য। একাত্তরে যাদের বয়স বিশ থেকে ত্রিশের মধ্যে ছিল, তারা এখন ষাটের কোঠায়। এই প্রজন্ম মারা গেলে আমাদের মহান শহীদদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরীর কোন পথই আর অবশিষ্ট থাকবে না।

তাই এখনই মুক্তিযুদ্ধে শহীদগণের একটি ডেটাবেজ তৈরী করে সেটি ইন্টারনেটে প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বর্তমান নিবন্ধে এ উদ্দেশ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পেশ করা হলো।

প্রকল্পেটির কাজ ছয়টি ধাপে সম্পন্ন করা যেতে পারেঃ

১· প্রথম মাসে একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার নিয়োগ, তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ ইত্যাদির পাশাপাশি শহীদগণের তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি ফরম তৈরী করতে হবে। নিম্নলিখিত তথ্যাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য বিবেচিত হতে পারেঃ

ক· শহীদের নাম
খ· পিতার নাম
গ· স্থায়ী ঠিকানা (জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন সহ বিস্তারিত ঠিকানা)
ঘ· মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স
ঙ· ধর্ম
চ· শাহাদাতের তারিখ
ছ· শাহাদাতের স্থান

ফরমটি যেন সহজ ও বাহুল্যবর্জিত হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ফরম তৈরী হয়ে গেলে তা ছাপানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ৬৫ হাজার গ্রামের জন্য এক লক্ষ ফরম ছাপাতে খরচ হবে ··।

একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার ছাড়া প্রকল্পের নিজস্ব আর কোন জনবল প্রয়োজন হবে না। এক বছরের জন্য তার বেতন , অফিস ভাড়া ইত্যাদি বাবদ দশ লাখ টাকা খরচ হবে।

২· ফরম ছাপানোর পাশাপাশি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত একটি ডেটাবেজ তৈরী করতে হবে। ডেটাবেজটি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকলে একদিকে যেমন তথ্য সংগ্রহকারীরা যে কোন সাইবার ক্যাফেতে বসে সরাসরি ডেটাবেজে তথ্য এন্ট্রি করতে পারবে, তেমনি এন্টির সাথে সাথে খসড়া তালিকাও ইন্টারনেটে প্রকাশ করা যাবে।

ডেটাবেজটি তৈরী করতে একজন সফটওয়্যার ডেভেলপারের দুই সপ্তাহের বেশী লাগবে না। সে ক্ষেত্রে বড় জোর ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে, এ ধরণের একটি মহৎ কাজ বিনা পারিশ্রমিকে আগ্রহভরে করে দেবার জন্য সফটওয়্যার ডেভেলপারের অভাব বাংলাদেশে হবে না। ওয়েবসাইটটি আগামী পাঁচ বছর ধরে হোস্টিং এর জন্য খরচ পড়বে ··।

৩· নির্ধারিত ফরমে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি উপজেলার জন্য যদি একজন করে তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দেয়া হয় এবং একজন তথ্য সংগ্রহকারী যদি দিনে গড়ে একটি গ্রাম/মহল্লার শহীদগণের তালিকা সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে ছয় মাসে তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রতিটি গ্রামের তালিকা প্রস্তুতের জন্য এক শত টাকা হারে সম্মানী দেয়া হলে এ কাজের জন্য খরচ হবে ৬৫ লক্ষ টাকা।

৪· সংগৃহীত তথ্য ডেটাবেজে এন্ট্রি করা হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তথ্য সংগ্রহকারী নিজে অথবা পৃথক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর স্থানীয় সাইবার ক্যাফেতে বসে ডেটা এন্ট্রি করতে পারবেন। প্রতিটি গ্রামের ডেটা এন্ট্রির জন্য গড়ে ৩০ টাকা দেয়া হলে প্রয়োজন হবে ২০ লক্ষ টাকা।

৫· শহীদগণের তথ্য ডেটাবেজে এন্ট্রি করার পর খসড়াটি প্রকাশ করে তা যাচাই বাছাই করতে হবে। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা প্রয়োজন হবে। প্রতিটি উপজেলার তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে টাঙ্গিয়ে দেয়া যেতে পারে। এ কাজে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংগঠনের সহায়তা নেয়া যেতে পারে। যাচাই-বাছাই এর জন্য জনগণ, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই এগিয়ে আসবে।

৬· যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হবে। এর জন্য আলাদা কোন কাজ করতে হবে না।

বাজেট দাড়াবে মোটামুটি নিম্নরূপঃ

প্রজেক্ট ম্যানেজারের বেতন, অফিস ভাড়া ও আনুসাঙ্গিক ব্যয় ১০ লক্ষ
ফরম ছাপানো
ডেটাবেজ তৈরী ও ওয়েবসাইট হোস্টিং ১
তথ্য সংগ্রহকারীরদে সম্মানী ৬৫
ডেটা এন্ট্রি ২০
মোট

দেখা যাচ্ছে, মাত্র এক কোটি টাকা, যা সরকারের চলতি বছরের বাজেটের এক লক্ষ ভাগের একভাগ, তাই দিয়ে এই অতি প্রয়োজনীয় কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব। সরকার এগিয়ে না আসলেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠানের মাসিক বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ এর থেকে অনেক বেশী। এগিয়ে আসতে পারেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারগণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংগঠন। প্রবাসীরা যদি উদ্যোগ নেন, তাহলে অতি সহজেই অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব।

যারা তাঁদের জীবনের বিনিময়ে আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেলেন তাঁদের প্রতি উপেক্ষার মত অকৃতজ্ঞতা আর হতে পারে না। এর জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদেরকে ক্ষমা করবে না। তাছাড়া বিষয়টিকে সত্যের প্রতি অনীহা হিসাবেও দেখা হবে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদগণের ডেটাবেজ তৈরী হলে তা যেমন আমাদের বিবেকের দংশন থেকে রক্ষা করবে ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করবে, তেমনি ইতিহাস গবেষণার জন্য তা হয়ে থাকবে একটি মহামূল্যবান সম্পদ।




Click This Link
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×