somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতে ভাঙনের সুর

০২ রা আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তবিরোধ তীব্র হয়েছে। দলের ১৬ সদস্যের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের পাঁচ শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর একজন আত্মগোপনে আছেন এবং মতবিরোধের কারণে আরো তিনজন নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। জামায়াতের রাজনীতির চরম দুঃসময়ে এই মতবিরোধ ভাঙনে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তবে জামায়াতের কেউই মতবিরোধ বা ভাঙনের আশঙ্কার কথা স্বীকার করতে নারাজ। দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন, 'সেই এরশাদ আমল থেকে শুনে আসছি জামায়াতে সাঈদী গ্রুপ-গোলাম আযম গ্রুপ, ভাঙন আসন্ন ইত্যাদি। এখন তো কবরে যাওয়ার সময় হয়েছে। মনে হয় জামায়াতের ভাঙন আর দেখে যেতে পারব না।'
তবে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার ও যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে জামায়াতের ভেতরকার পুরনো অনেক দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের দুই প্রভাবশালী নেতা মীর কাসেম আলী ও আবু নাছের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের দলকে এড়িয়ে চলছেন। এ দুই নেতাকে জামায়াতের আর্থিক উৎসের খুঁটি হিসেবে দেখা হয়। আরেক নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আইনগত বিষয় ছাড়া দলের নীতিনির্ধারণী কোনো বিষয়ে নিজেকে জড়াচ্ছেন না।
সূত্রের দাবি, একাধিক বিষয়ে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দূরত্ব বেড়েছে। গত বছর তিনি দলের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে 'পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন' শিরোনামে জামায়াতের রাজনীতির খোলনলচে পাল্টে উদারনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে পল্টনে একটি গোপন বৈঠক করেন। এর পর থেকে তিনি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সন্দেহে পড়েন।
সূত্র জানায়, আবু নাছের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের জামায়াতের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব নির্বাচনে চরম অসন্তুষ্ট হন। তিনি এর প্রতিবাদ করেন এবং দলের নির্বাহী কমিটির কোনো বৈঠকে তাঁকে আর না ডাকতেও বলে আসেন। আবদুজ জাহের ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান। জানা গেছে, একসময় তিনি দলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সম্পর্কবিষয়ক দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে এ দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদকে। এ নিয়েও ক্ষোভ আছে আবদুজ জাহেরের। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন পর গত শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের বৈঠকে বিশেষ অনুরোধে উপস্থিত হন।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে মতবিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, 'মতপার্থক্য কোন দলে নেই? ঘরে স্বামী-স্ত্রীতেও মতবিরোধ হয়। তাই বলে কেউ কথায় কথায় বউ তালাক দেয় না।'
শিষ্টাচার লঙ্ঘনে জামায়াতে ক্ষোভ : সংবিধান সংশোধনে বিশেষ কমিটি গঠন বিষয়ে গত ২১ জুলাই চারদলীয় ঐক্যজোটের শরিকসহ সমমনা দলগুলোকে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় যে বৈঠক হয়, সেখানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সৌজন্যবিধি লঙ্ঘন হয়েছে অভিযোগে একটি পক্ষ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ডানে প্রথমে বসেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম, এরপর বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যরা। খালেদা জিয়ার বাঁ পাশের সারিতে প্রথমে বসেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী, এরপর বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান, তারপর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ। জামায়াতের নেতা-কর্মীরা দলের অবস্থান ও নেতৃত্বের ক্রম অনুযায়ী মকবুল আহমদের আসন মুফতি আমিনী অথবা এ টি এম আজহারের জায়গায় হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করে। এই 'শিষ্টাচার লঙ্ঘনের' জন্য দলের ওই অংশটি এ টি এম আজহারকে দোষারোপ করছেন।
শিবিরের অসন্তোষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে : গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল, তা নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করেও নেতারা ব্যর্থ হন। বিষয়টির সুরাহা করতে তাঁরা দলের আমিরকে লিখিতভাবে অনুরোধও করেন। নিজামী ও মুজাহিদ শিবিরের সংকট সৃষ্টির জন্য সংগঠনের বিদায়ী সেক্রেটারি জেনারেল শিশির মোহাম্মদ মনিরকে পরোক্ষভাবে দায়ী করেন। শেষে শিবিরের অসন্তোষ সৃষ্টির কারণ উদঘাটনে অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদকে প্রধান করে যে তদন্ত কমিটি করা হয়, নিজামী তা স্থগিত করে দেন। এতে জামায়াত নেতৃত্বের ওপর তাঁরা বিরক্ত হন বলে জানা যায়।
এদিকে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আইন পেশায় তাঁর জুনিয়র হিসেবে শিশির মনিরকে চেম্বারে অন্তর্ভুক্ত করেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের আরো সন্দেহপ্রবণ করে। যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে এসব অন্তর্দ্বন্দ্ব চাপা পড়ে গেলেও রেশ এখনো কাটেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। ছাত্রশিবিরের অসন্তোষও এখনো কাটেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংগঠনের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি জামায়াতের নেতাদের 'বিপদকালে'ও নিষ্ক্রিয় রয়েছে। বিদ্রোহীরা ধানমণ্ডি এলাকায় শিবিরের নামে কেনা দুটি বাড়ি এখনো নিজেদের দখলে রেখেছে বলে জানা গেছে।
মুজাহিদ-মীর কাসেম দ্বন্দ্ব : মীর কাসেমের প্রভাব কমানোর জন্য কয়েক বছর আগে সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ তাঁকে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন। এরপর সাংস্কৃতিক বিভাগের দায়িত্ব থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দিয়ে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে স্থলাভিষিক্ত করেন। এ নিয়ে দলের আমির নিজামীর সঙ্গে মীর কাসেমের বাদানুবাদ হয়। জানা যায়, মুজাহিদের মতের একচ্ছত্র প্রাধান্য দেন নিজামী_এ অভিযোগ তুলে দলের মূলধারার কাজ থেকে নিজেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেন মীর কাসেম। নিজের ব্যবসার প্রসার এবং দলের তরুণ ও বুদ্ধিবৃত্তিক অংশকে অর্থ ও বিত্তের বলে আয়ত্তে আনার কৌশল নেন তিনি। পাশাপাশি ব্যাংক, হাসপাতাল, পর্যটন, গণমাধ্যম, আবাসনসহ বড় বড় শিল্পে মীর কাসেমের প্রভাব দলে তাঁর অবস্থান সংহত করে।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে 'দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই' বলে মুজাহিদ যে বক্তব্য দেন, তার বিরোধিতা করেছিলেন মীর কাসেমসহ অনেকে। তারা মনে করেন, মুজাহিদ অহেতুক বিষয়টি জাগিয়ে তুলে দলকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলেন।
একাধিক সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে, সংস্কারবাদী হিসেবে কথিত মীর কাসেম আলী যে বিতর্কিত 'পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন' নিয়ে বেকায়দায় পড়েছিলেন, বর্তমানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রেক্ষাপটে তাঁর সে কৌশল আবার জেগে উঠছে। দলের পরামর্শক ও মাঠপর্যায়ের কর্মীদের একটি বড় অংশ এ মুহূর্তে তাঁর সে উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে মনে করছেন।
এ অবস্থায় জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ে যাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে, তাঁদের বাদ দিয়ে সামনে চলার যে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে দলে এত দিন চাপা আলোচনা ছিল, তাও এখন সামনে চলে আসছে।
গোপন বৈঠকে উপস্থিতরা : মীর কাসেম নেপথ্যে থেকে যে 'পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন' করেন, তাতে দলের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী ও শিবিরের সাবেক সভাপতিদের উল্লেখযোগ্য অংশ যোগ দেয়। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে ছাত্রশিবির তাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। জানা যায়, একজন সাবেক সচিবের উপস্থাপনায় ওই প্রেজেন্টেশনে দলের নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ, নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক সালাহউদ্দিন মো. বাবর, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, শিবিরের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, অধ্যাপক তাসনীম আলম, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, মতিউর রহমান আকন্দ, মজিবুর রহমান মনজুু, মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদের অনেকেই সে কথা স্বীকারও করেন। কামারুজ্জামান সে সময় এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, 'ওটা কোনো মিটিং ছিল না। একাডেমিক পেপার প্রেজেন্টেশন ছিল। দলকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা কোনো চিন্তা করলে সেটা তো দোষের কিছু না।' ড. শফিকুল ইসলামও জানান, তিনি ওই বৈঠকে ছিলেন।
কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিলে পরে সবাই মীর কাসেমের পক্ষ ত্যাগ করেন। এ ইস্যুতে মুজাহিদসহ নির্বাহী কমিটির কয়েকজন সদস্য মীর কাসেমকে দল থেকে বহিষ্কারে উদ্যোগী হন। বিভক্তি এড়াতে সে সময় নিজামী মীর কাসেমকে শুধু সতর্ক করে ক্ষান্ত দেন।
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে যা ছিল : বৈঠকে একটি বিশ্লেষণপত্র উপস্থাপন করে জামায়াতের কর্মকৌশলে ব্যাপক সংস্কার আনাসহ পাঁচ দফা প্রস্তাব করা হয়। বৈঠকে প্রচলিত পুরনো ধাঁচের ইসলামী দলের চেয়ে আধুনিক সমাজকল্যাণ, সুশাসন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক দল তুরস্কের একে পার্টি, মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড ও মালয়েশিয়ার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির সাফল্য উল্লেখ করে জামায়াতের নাম বদলের জন্য একটি ধারণাপত্রও উপস্থাপন করা হয়। তাতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইসলামী দলগুলোর নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করে বলা হয়, এশিয়ার কোনো মুসলিম দেশে নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে ইসলামী এজেন্ডা গোপন রাখতে হবে।
জামায়াতের সীমাবদ্ধতার ৯টি কারণ উল্লেখ করে ধারণাপত্রে বিকল্প রাজনীতির দল গঠনে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী কিন্তু মধ্যপন্থী, প্রয়োজনে বিএনপির সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতা-কর্মীদেরও দলে যোগদানের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়।
বিশ্লেষণপত্রে বলা হয়, দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর জামায়াত বাংলাদেশের মাটিতে ব্যাপক সাংগঠনিক ভিত্তি অর্জন করলেও ভোটারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমর্থন তৈরি করতে পারেনি। এটা কর্মী বাহিনীর মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
দলের সংস্কার প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মীর কাসেম আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জামায়াতের মতো নিয়মতান্ত্রিক দলে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সময়ের দাবিকে সামনে রেখে যেকোনো সময় প্রয়োজনীয় সংস্কার হতে পারে।'
ওই সময় এ বিষয়ে এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদ বলেছিলেন, 'জামায়াত ক্রমাগত সংস্কারের মধ্যে আছে। ১৪ বার গঠনতন্ত্র সংশোধন হয়েছে। দলীয় ফোরামের বাইরে কোনো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই।'
দৃষ্টি মীর কাসেমের দিকে : নিজামী সম্প্রতি রিমান্ডে থাকাকালে তাঁর নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে দলকে বিভক্ত করার ব্যাপারে মীর কাসেমের তৎপরতা সম্পর্কে কিছু তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে নিজামী দলের নেতাদের যে বার্তা পাঠিয়েছেন, তাতেও দল ভাঙতে মীর কাসেমের তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকার এবং যেকোনো মূল্যে ঐক্য বজায় রাখার নির্দেশনা ছিল।
নিজামীর আস্থাভাজন একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'মীর কাসেম দলে বিভক্তি আনার এবং দলকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে শীর্ষ নেতৃত্ব সতর্ক আছেন।'
ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক এবং আদর্শিক সংগঠন। যত বেশি জনপ্রিয়ই হোক, দলের বাইরে গিয়ে কেউ একজন কর্মীকেও নিতে পারবে না।' তাঁর মন্তব্য, 'কেউ এমন (ভাঙনের) চিন্তা করলে তা হবে কাঁচা খেলা।'
সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকজন কূটনীতিকের সঙ্গে মীর কাসেমের সখ্য রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাঁরা তাঁকে কিছুটা 'লো প্রোফাইলে' চলার উপদেশ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ চলমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় মীর কাসেমকে সম্পৃক্ত করতে চাইলেও তিনি সাড়া দেননি বলে সূত্র জানায়।
এ অবস্থায় মীর কাসেমের নেতৃত্বে জামায়াতে ভাঙনের আশঙ্কার গুঞ্জন রয়েছে দলের ভেতরে ও বাইরে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে মীর কাসেম আলী গুঞ্জনটিকে 'সম্পূর্ণ অবান্তর' মন্তব্য করে বলেন, 'জামায়াত একটি আদর্শিক দল। পার্থিব লোভ-লালসার জন্য যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরাই কেবল দলে ভাঙনের চিন্তা করতে পারেন।'
ভাঙনের পরিণতি সম্পর্কে জামায়াতের ঢাকা মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, 'মাওলানা আবদুর রহিমের মতো আধ্যাত্দিক ও রাজনীতিক নেতা এ দেশে আর কয়জন ছিলেন? জামায়াত থেকে বের হয়ে তিনি কী করতে পেরেছিলেন?'
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×