সেই গ্রন্দোনাকেই এর পর থেকে বদলে যেতে দেখলেন ম্যারাডোনা, ‘আর্জেন্টিনায় আমরা ফিরে আসার পর থেকে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে শুরু করল। গত সোমবার আমি গ্রন্দোনার সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বললেন, তিনি চান, আমি কাজটা চালিয়ে চাই। কিন্তু আমার সাতজন টেকনিক্যাল স্টাফকে পাল্টাতে হবে। এ কথা বলার মানেই তো তিনি চান না আমি কাজটা চালিয়ে যাই।’
ম্যারাডোনার কথায় যুক্তি আছে অবশ্যই। ফুটবলে কোচই সর্বেসর্বা। সহকারী কে হবেন না হবেন, এটা বেছে নেওয়ার কর্তৃত্ব কোচের একারই থাকে। পছন্দের সহকারীদের নিয়ে কাজ করেন বিশ্বের সব পেশাদার কোচই। সেখানে সাতজন সহকারী সরিয়ে দেওয়া মানে একজন কোচকে পঙ্গু করে ফেলা। ‘তিনি ভালো করেই জানেন, এই সহকারীদের ছাড়া আমার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়’—গ্রন্দোনার ওপর ম্যারাডোনার রাগটা এ কারণেই।
এরপর বিলার্দোর দিকে আঙুল তুলেছেন ম্যারাডোনা। গত বিশ্বকাপে প্রায় ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে থাকা বিলার্দো নাকি তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন, ‘আমরা যখন সবাই (পরাজয়ের পর) শোকে আচ্ছন্ন, বিলার্দো তখন আড়ালে বসে কলকাঠি নাড়ছিলেন কীভাবে আমাকে ছাঁটাই করা যায় সেই পথ খুঁজতে।’
কোচ হিসেবে তাঁর সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। তবে ম্যারাডোনা দাবি করছেন, শতভাগ নিংড়ে দিয়েছেন এই দলটার জন্য। এমন এক সময় দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা ছিল সংকটে। সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন তিনিই, ‘যখন দায়িত্ব নিলাম, দলটা ছিল অন্তর্গত সমস্যায় জর্জরিত, বিচ্ছিন্ন আর বিভক্ত। তারা আমাকে বলল এই দলটাকে জাগিয়ে তুলতে। আমরা সেটাই করলাম। আমি সবকিছু উজাড় করে দিলাম।’
সবশেষে তাঁর অভিযোগটা আরও গুরুতর, ‘রাজনীতির ছলাকলা আসলে সব জায়গাতেই আছে। এমন অনেকেই আছে যারা আর্জেন্টিনার ফুটবলের ভালো চায় না। তারা শুধু নিজেদের ভালোটা নিয়েই মগ্ন।’
এই বিস্ফোরক মন্তব্য হয়তো গ্রন্দোনার রাজত্বে ম্যারাডোনাকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা (অবাঞ্ছিত)’ করে তুলল! (এএফপি ও রয়টার্স )