Sur (The South) 1988 - Fernando E. Solanas
সোলানাসের সাথে আমার পরিচয় ঘটে, ১৯৬৮ সালে তাঁর নির্মিত ডকুমেন্টরি, “দি আওয়ার অব দ্য ফারনাসেস” এর মাধ্যমে, এবং সেটা দেখে মুগ্ধ হয়েই শুরু করেছিলাম তার ছবি সংগ্রহ করতে। এটি তার তৃতীয় ছবি, এবং তিনি খুব ভালভাবেই পেরেছেন আমাদের সামনে নিজের সৃষ্টিশীল মননের পরিচয় তুলে ধরতে। যদি আমি ছবিটিকে চারটি মূল অংশে ভাগ করি, যেমন, চিত্রনাট্য, পরিচালনা, সঙ্গীত ও অভিনয়, তবে নিশ্চিতভাবেই প্রতিটি অংশই দাবী রাখে তাদের স্ব স্ব সৃষ্টিশীল অনন্যতার জন্য উচ্চাশ্বাস। বিশেষ করে এর চিত্রনাট্যটাই ছবিটিকে দিয়েছে এমন এক মাত্রা যে, যারা এটা দেখবে, তারা ষোলআনাই টের পাবে, কীভাবে একটি চিত্রনাট্য বার বার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে, এবং আপনা আপনিই জুড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ একটি কাহিনীর অনবদ্য অবয়ব গড়ে তুলছে এতটুকু অসুবিধা ছাড়াই। বস্তুত এর কাহিনী, একের ভেতরে অসংখ্য মানুষের গল্প, যা পর্যায়ক্রমে রূপ নিয়েছে একটি সমাজ, তথা জাতি, তথা দেশ, এমনকী মানবজীবনের প্রকৃত বাস্তব গল্প হিসেবে।
ছবিটির শুরু হয় একসন্ধ্যায়, রবার্টো নামের একজন মধ্যবয়স্ক পুরুষের জেল থেকে প্রত্যাবর্তনের মধ্যে দিয়ে, যেখানে সে সাজা শেষ করে ফিরে আসে নিজ মহল্লায়, এবং নিজের পরিচিত অবস্থানে ফিরে এসে এক এক করে স্মরণ করতে থাকে সেইসব উজ্জ্বল দিন, সঙ্গী-সাথী অথবা প্রিয়মানুষদের, যা আজ আর নেই। সে আবেগতাড়িত হয়, এবং নিজের ঘরে ফিরে না গিয়ে, ঘুরতে থাকে মহল্লার রাস্তায় রাস্তায় আর খোঁজ করতে থাকে তাদের, যারা একসময় ছিল খুব কাছের, এবং প্রিয়। পুরোনো সব স্মৃতি তাকে দুমড়ে-মুচড়ে দিতে থাকে বার বার আর সে হাঁটতে থাকে উদ্ভ্রান্তের মতো। অতীতের প্রিয়-অপ্রিয় সমস্ত ঘটনাই মনে পড়তে থাকে এক এক করে আর সেইসব ঘটনায় সাথে জড়িত ব্যক্তিরা ফিরে আসতে থাকে তার সামনে, বাস্তবরূপে। নায়কের এই নির্মম স্মৃতিচারণের মধ্যে দিয়েই চিত্রনাট্যের বিস্তার ঘটতে থাকে ক্রমশঃ, যা কিনা পর্যায়ক্রমে তুলে আনে সামরিক অত্যাচার, বিপ্লব, নিপীড়ন, হত্যা, প্রেম, প্রতারণা, হতাশা, ঘৃণা ইত্যাদি, এবং শেষ হয় নতুন আশার মধ্যে দিয়ে। এক সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত একটিমাত্র রাতের পটভূমিতে আমাদের সামনে আঁকা হয় সেই বিশাল ক্যানভাস, যাতে ফুটে ওঠে জীবন ও বাস্তবতার বহুবিধ রঙ, যেখানে জীবিত বা মৃত উভয়ই এসে জড়ো হয়েছে আর কথা বলে গেছে একে অপরের সাথে, এমনকী, হয়ত, অলক্ষ্যে আমাদের সাথেও।
সবগুলো দিক থেকেই সোলানাস ছবিটিকে অনবদ্য করে তোলার প্রয়াস চালিয়েছেন। সঙ্গীত, আলোকসম্পাত, বিশেষ করে যারা ট্যাংগো ভালবাসেন তারা অবশ্যই মুগ্ধ হবেন প্রায় পুরো ছবিজুড়েই এ্যাস্টর পিজোলা ও বরার্টো গোয়েনচের মত খ্যাতিমান ট্যাংগো শিল্পীদের অনবদ্য সঙ্গীত শুনে। এছাড়া ছবিটির স্মৃতিচারণ বা আত্নকথন বর্ণনাকে, যেখানে মৃত ব্যক্তিরাও ফিরে আসছে, এবং বাস্তব চরিত্রের মত নায়কের সাথে কথপোকথনে বলে যাচ্ছে নিজেদের করুণ ও মর্মান্তিক পরিণতির কথা, তাকে মায়াবী কুহুকতা দিতে সোলানাস, ধোয়া, নীলরং, পরিমিত আলো, অসংখ্য টুকরো টুকরো কাগজ আর বাতাস যেভাবে ব্যবহার করেছেন, তাতে ছবিটি সত্যি-সত্যিই হয়ে উঠেছে স্মৃতির সেই মর্মান্তিক কবরস্থান, যেখানে আমাদের দর্শক সারিতে বসিয়ে রেখে, সোলানাস কমিউনিকেট করাচ্ছেন সেইসব আত্নার সাথে, যারা কোনো না কোনোভাবে হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনেরও অংশ।
সবমিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ছবি এটি, যেখানে রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে নিপুণ দক্ষতায় বোনা হয়েছে জীবন বাস্তবতা ও প্রেমকে। মানুষের সামজিক জীবন ও নির্মম বাস্তবতাকে প্রায় সবকোণ থেকেই সোলানাস দেখিয়েছেন এই ছবিতে, সৃজনশীলতার চরম উৎকর্ষতা সহকারেই।
অরণ্য
চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
**অপূরণীয় যোগাযোগ*
তাদের সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল ৬ বছর আগে, হঠাৎ করেই। প্রথমে ছিল শুধু বন্ধুত্ব, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা গভীর হয়ে উঠেছিল। সে ডিভোর্সি ছিল, এবং তার জীবনের অনেক কষ্ট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন
গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
তুমি অজ্ঞ
ভাবতে পারো
৮০ টুকরো হতে হয়;
ভাবতে পারো
জ্বলে পুড়ে মরতে হয়!
ভাবতে পারো
কতটুকু লোভ লালসা
থাকলে পরে
এমন হবে বলো দেখি;
ভাবতে পারো
কেমন জন্ম মৃত্যুর খেলা;
জানি আমি
তুমি কিছু ভাবতে পারবে না
কারণ তুমি অজ্ঞ
মৃত্যুর পরে একা... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা
এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম
জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন