somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে ওরা পিতৃত্ব অর্জন করল

২৯ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৯:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেহেতু সোডিয়াম আলোর ঔপনিবেশিক আচরণে অন্ধকার রাজপথ থেকে বিতাড়িত, তাই অনেকটা ক্ষোভে না কি দুঃখে কে জানে উদ্যানের ঘুন্‌চি ঘান্‌ছিতে পলাতক অন্ধকার বেশ একটা আদিম আবহ নিয়ে নেমে আসে; আলো-আঁধারির বিমুগ্ধ কোলাজ যেখানে, সেখানে আদিমতা বেশ প্রগাঢ় মনে হয়; সেই প্রগাঢ়তার নীলাভ-ধূসর রহস্যে ওরা চারজন- অনিন্দ্য, ডেভিড, বাবু এবং হাশিমকে ঘিরে একটা চমৎকার পরিবেশ ফেনিয়ে ওঠে। ওদের মাথার উপর অন্ধকারে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলা লাল-সবুজ কৃষ্ণচূড়া; লাল
আর সবুজের অনস্তিত্বের নিচে ওরা চারজন অস্তিত্বের কিছু জটিল হিসেব মেলাতে ব্যস্ত।
আসলে ব্যস্ততা-ট্যাস্ততা কিছু না, কেবল তাড়না; স্খলনের তাড়না- যা মূলত মূলজ অন্ধকারে গতিশীল...
গতির প্রসঙ্গ ধরেই বলা যায়, কৃষ্ণচূড়া থেকে কদম্বতলা পর্যন্ত একটা রৈখিক গতিবৃত্ত রচিত হয়েছে।
কৃষ্ণচূড়াতলা থেকে কদম্বতলা;
কদম্বতলা থেকে কৃষ্ণচূড়াতলা।
কদম্বতলায় জ্বালানো হয়েছে ভাড়াটে চুল্লি।
প্রথমে অনিন্দ্য গেল- পদার্থবিদ্যার জিনিয়াস ছাত্র হয়েও এই অনিন্দ্য কি না আপাদমস্তক কবি;
তো সে গেল একেবারে বাদশার মত দুলকি চালে এবং ফিরে এল ফকিরের মত
চুপসে, অন্তত বাবুর সেরকমই মনে হল। কিন্তু হাশিমের মনে হল, অনিন্দ্য গিয়েছিল ফকিরের মত
এবং ফিরে এসেছে বাদশার মত। দু’জনের যে কোন একজনের মতবাদই সত্যি হতে পারে; আসলে
আলো-আঁধারির বিমুগ্ধ কোলাজে কোন সত্যই ধ্রুব হতে পারে না।
অনিন্দ্য ফিরে এসে আঙ্গুলে একটি তুড়ি রচনা করে বলল, ওর নাম উদ্ধার করেছি। হার নেম ইজ লক্সমি।
হোয়াট? ডেভিড বিস্ময়াবিষ্ট। লছমি? ও কি ট্রাইব?
আরে বাবা, লছমি নয়। লক্ষ্ণী, ইংরেজী উচ্চারণে বলেছি।
বাবু বলল, ভুয়া নাম। ওরা ঠিক নাম বলে না। ব’লে মেয়েদের মত লম্বা চুল ঝাঁকিয়ে নিল দু’বার।
বাবু চারুকলার ছাত্র, ওর কথা বলার ঢং অনেকটা ছবি আঁকার মত; যেন ক্যানভাসে একটা একটা করে শব্দচিহ্ন বসিয়ে দিচ্ছে।
অনিন্দ্য নাছোরবান্দার মত বলল, ওটা ঠিক নাম, আমি ম্যানেজ করেছি।
হাশিম বলল, কোন নামের মেয়েতে বেশি মজারে অনিন্দ্য? ভুয়া না ঠিক নামের?
ডেভিড বলল, বাহ্‌ হাশিম, এক্কেবারে ছক্কা কষেছিস! কথার চমৎকার সাফল্য দেখিয়েছিস। যা এবার তোর পালা।
হাশিম খুশি না হয়ে পারল না; আসলে ওর ইচ্ছে ছিল সবার প্রথমে যাওয়ার;
অনিন্দ্যটা একগুঁয়ে, ফার্স্ট টেস্ট ও-ই নিয়ে ছাড়ল, তা বন্ধু হিসেবে কী আর করে হাশিম।
এখন সেকেন্ড পজিশনে নাম আসায় খুশি সে।
মিনিট পাঁচেক পর হাশিম- যে কিনা একটি তৃতীয় শ্রেণীর দৈনিকের ইউনিভার্সিটি
কর্‌সপনডেন্ট- বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট করে এর মাঝে নামও করেছে-
ফিরে এসে বলল, আমি বুঝতে পারছি না। আই কান্ট আন্ডারস্ট্যান্ড। ওর গলা হাতাশায় নাজুক।
কী? প্রশ্নটা ডেভিডের।
কেন এমন হল রে? শি কুডন্ট মেক মি ইরেক্টেড।
অনিন্দ্য বলল, তুই শালা নপুংশক হয়ে গেছিসরে...
প্রতিবাদ করল হাশিম, ইমপসিবল। আমার কখনও এমন হয় নি, ভবিষ্যতেও এমন হবে না, কিন্তু কেন যে আজ...
অনিন্দ কিছু বলতে যাচ্ছিল, বাবু তাকে বাঁধা দিয়ে মিউচ্যুয়াল করে দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল, এমনটি হতেই পারে।
এটা অনেকটা ব্লাড ডোনেট করার মত ব্যাপার। গ্রুপ না মিললে হবে না। সব সময় গ্রুপ মিলবে কে
বলতে পারে? ডেভিড, ওহে ঈশ্বরপুত্র, এবার বল তুমি না আমি?
ডেভিড একটু ভেবে বলল, তুই যা। আমি ততক্ষণে মেনটালি প্রিপেয়ার্‌ড হই।
বাবু একটু পর ফিরে এসে বেশ হৈ চৈ এর ভঙ্গিতে ঘোষণা করল, হাশিম ইজ অল রাইট।
চুল্লিটা কম্প্যারেটিভলি কম গরম।
হাশিম সাপোর্ট পেয়ে হৈ হে করে উঠল, টাকাটাই জলে গেল।
ডেভিড বলল, স্টপ ইট। আমি যাচাই করে আসি। এই বলে ডেভিড গেল; সে কবি নয়, শিল্পী নয়,
সাংবাদিক নয়, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, নন-রেসিডেন্সিয়াল, মাঝে মাঝে মাকে ম্যানেজ করে হলে
বন্ধুদের সাথে রাত্রিযাপন করা এবং সেই সূত্রে বেপরোয়া কিছু মিশনে এটেন্ড করার স্পৃহা থাকা
সাধারণ ক্যালিবারের ছেলে। তো ডেভিড ফিরে এসে বলল, এভরিথিং ইজ অলরাইট। এভাবল আই অ্যাম স্যাটিসফাইড।
এই সময় হুইসেল শোনা যায়। ডেভিড বলল, খাঁকি বাবারা এসে গেছে, এবার কেটে পড়া যাক।
মুহূর্তে সকলে সতর্কে টানটান; কৃষ্ণচূড়া এবং কদম্বতলায় একটা আলোড়ন ওঠে; কতিপয় ফিসফিসানি;
মুদ্রা প্রদানের ঝামেলা প্রথম অংকেই সমাধা হয়েছে; অতএব নো মোর ডিলে এন্ড লেটস মুভ...

চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৯:২০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×