somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

পুতুল নাচের পুতুল২

২৬ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবাই মিলে আমেরিকায় আবাসন নিলেও বড় ছেলেটির ডাক্তার হওয়ার আর দু বছর বাকি। ইন্ডিয়াতে পড়ালেখা করছে সে। তাই মাস খানেক পর সে ফিরে গেলো, পড়া লেখা শেষ করে আসবে। মেঝটাও ভর্তি হয়ে ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে ইন্ডিয়াতে প্রথম বর্ষ কিন্তু সে আমেরিকায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। পিছিয়ে গেল ওর পড়ালেখা এক বছর আপগ্রেডিং করতে হবে তাই যেতে হলো কলেজে। ছোটটির বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় কিছু পিছিয়ে গেলো, ক্রেডিড যোগ করার জন্য দিতে হলো। নতুন সব কিছু ,এই বয়সে এসে ভিনদেশে আবার নতুন করে জীবন যাপন শুরু করা খুব সোজা না। বারবার মনে হয় ফিরে যাওয়াই ভালো। সাজানো সব আছে, বাড়ি ঘর,ক্লিনিক, রোগীরা ডাকছে। নিজেদের জন্য আমেরিকায় কষ্ট ছাড়া কিছু নেই।
আমার বন্ধুটি যে মোটামুটি পাটরাণীর জীবন কাটিয়েছে তাকে এখানে ঘর সংসারের সব করতে হচ্ছে একা। যে দেশে যে ব্যবস্থা কিছু দিনের মধ্যে মনে হলো কোথাও যদি কাজ করা যায় মন্দ কি। তাও পাওয়া গেলো। অনভ্যস্থ শরীর মন ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে থাকল চারপাশের বৈরী অপরিচিত অবস্থা আর আবহাওয়ার সাথে। সন্তানের সুখ সুবিধার কথা ভেবে সব কষ্টই মা বাবার কাছে তুচ্ছো হয়ে যায়। তবে ডাক্তার হিসাবে কাজ পাওয়া খুব সহজ না আর এই বয়সে পড়ালেখা করে নিজেকে আপগ্রেড করার ধৈর্য নাই তাই পার্থ দেশে ফিরে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নেয়। মাঝে মাঝে এসে ছেলেদের সাথে কাটাবে আর বৌ, মা তাকে তো সবার দেখ ভাল করতে হবে যেমন স্বামী তেমন সন্তানদের তাই সে থাকবে আসা যাওয়ার মাঝে।
কথা হয় প্রায় নানান বিষয়ে জানার আগ্রহ পার্থর অনেক বেশী,কী ভাবে কি করা যায় । আমি আমার সাধ্য মতন জ্ঞান বিতরণ করি আশার আলো দেখাই। বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার মতন আমরা আছি এখানে এপাড় ওপাড়ে। একটু গুছিয়ে আমার এখানে আসার ইচ্ছা আমার সাদর আমন্ত্রণ যে কোন সময় সুযোগ মতন চলে আসো। পার্থ ভয় পায় প্রায় বলে আমার বন্ধুটি আমার মতন অতটা সাহসী না। ওকে তো সব সাজিয়ে গুছিয়ে সেই এত দিন দিয়ে এসেছে। একা কী সে থাকতে পারবে। আমি বলি যার এমন একজন স্বামী আছে তার তো র্নিভর করা ছাড় আর কিছু করার ছিল না, করা লাগবেও না কখনো। সে সুখ ভোগ করেই যাক।
মাঝে মাঝে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থেকেছে বাস্তবতায় কিন্তু হৃদয়ে কোন মলিনতার দাগ পড়েনি কখনো। যখনই দেখা হয়েছে যোগাযোগ হয়েছে আমরা হৈহৈ করে উঠেছি আগের মতন। এখনের মতন যোগাযোগ ব্যবস্থা তো তখন ছিল না আঙ্গুলের ছোঁয়ায় পৃথিবী হাতের মুঠোয় । চিঠি আর টেলিফোন ছিল যোগাযোগের মাধ্যম তাও যদি ঠিকানা বা নাম্বার জানা থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিন গুলোতে অনেক ঘুড়ে বেড়িয়েছি আমরা একসাথে। র্দূগা পূঁজায় আগৈলঝরার সেই ঝরে পরা কুয়াশা মাখানো দিন। চাঁদনিতে খোলা প্রান্তরে বসে গল্পের ঝাপি মেলে আমরা হারিয়ে যেতাম। ভাট ফুরের গন্ধ মাখানো মাঠের মাঝে। মাটি থেকে কুয়াশার কুন্ডলি উঠে যেতো মাথার উপর। শীত শীত সাদা কুয়াশার পর্দা ভেদ করে মাঝ রাতে হাঁটতাম বাড়ির পথে। গ্রামের জীবনের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। নিকানো উঠানে রোদের উজ্জ্বলতা। মাসিমার চাল ধূয়া হাত। মায়াবী ভালবাসার নিরামিষ। শ্যাওলা সবুজ শীতল জলে সাঁতার । পুঁজা মন্ডপে গ্রামীন যাত্রার টানটান আয়োজন আর আগ্রহ। বিজয়ার দিন এবাড়ি ওবাড়ি বন্ধুকে পরিচয় করানো মুড়ি মুড়কি, নাড়ু সন্দেশের আন্তরিক আপ্যায়ন স্মৃতির পাতায় বড় বড় হরফে লিখা হয়ে আছে। পাড়াতুতো দাদা উদাত্ত কন্ঠে গান গেয়ে চলে যেত আমরা তাকে ডেকে গান শুনতাম। খোলা প্রান্তরে শিশির ঝরা শব্দের সাথে মিশে যেত নজরুল গীতি...আজো মধুর বাঁশরি বাজে ...সে সুর সে আনন্দ সে উপলব্ধি আজো বাঁশি বাজায় হৃদয়ে।
চলবে..
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৫৪
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×