একটি অসমাপ্ত সংকলন: বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
একটি অসমাপ্ত সংকলন: বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা
সরসিজ আলীম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আমরা গণমানুষের নেতা হিসেবে জানি। আমাদের জাতীয় জীবনের বিভিন্ন স্তরের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পুরোধা পুরুষ ব’লে জানি। আমাদের জাতীয় জনযুদ্ধের, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি হিসেব জানি। আমাদের ইতিহাসের পৃষ্ঠাব্যাপী ট্রাজেডির মহানায়ক হিসেবে জানি। আমাদের বন্ধু হিসেবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে জানি। আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থায় সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একজন অসফল নেতৃত্ব ব’লে জানি। অবশ্যই আমরা জাতির জনক হিসেবে জানি।
প্রচলিত ধারার সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের ভেতরে ব’সে অনেকটাই অপ্রস্তুত একটা পার্টি ও পার্টি কর্মীদের নেতৃত্বে আসীন থেকে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠার বৈপ্লবীক ঘোষণা ও পদক্ষেপ গ্রহন করাকে প্রতিবিপ্লবী আগাছা ও পরগাছা শক্তিকে সংগঠিত করতেই কেবল উৎসাহিত করেছে। তাইতো দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক চক্রান্তই কেবল বারবার সফল হয়েছে। প্রতিবিপ্লবী শক্তি, গণমানুষের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও প্রতিষ্ঠা পেতে চেয়েছে। আমরা হয়েছি বিস্মিত, ক্ষুব্ধ, মর্মাহত, নিগৃহীত। ঘোর অন্ধকারের ভেতরে আমরা এবজন মহান দরদী মানুষকে স্মরণ করি। বঙ্গবন্ধুর সকল অস্তিত্বের মাঝেই আমরা আমাদের প্রাণের স্পন্দন খুঁজে ফিরি।
মহান কার্ল মার্কস-এঙ্গেলসের বৈজ্ঞানিক দর্শন ও পথ নির্দেশনা নিয়ে আমরা যুগে যুগে দেশে দেশে মুক্তির লড়াই ক’রে চলি। কমরেড লেনিন, মাও জে দঙের বিপ্লবী নির্দেশনাকে সাথে নিয়ে নিজ নিজ দেশে দেশে নতুন বিপ্লব সংগঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আর বঙ্গবন্ধুকে আমাদের নব নব প্রেরণায় জাগ্রত রেখেছি। বিশ্বাস রেখেছি।
আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা-দীক্ষার বাইরে থাকা বিশাল একটা জনগোষ্ঠিকে আমাদের রাজনৈতিক ভোজবাজিতে বোকা বানিয়ে রাখতে চাইছি বারবার। এই বোকা মানুষদের চোখের সামনেই এই দেশটাকে টেনে-ছিড়ে খেয়ে যাচ্ছি কত সহজেই! তাইতো আমাদের জাতির মহান মানুষদেরকে আমাদের স্বার্থেই হয় তাঁকে হেয় ক’রে দেখছি, অথবা অতিরঞ্জিত ক’রে দেখছি। এই সময়তে আমাদের জাতির গর্বিত সন্তানকে আবেগহীন থেকে, নির্মোহ থেকে মূল্যায়নের প্রয়াস চালাতে হচ্ছে। সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল সম্পাদিত স্বল্প পরিসরের সংকলন ‘ বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা’ এর একটি সূচনা প্রয়াস মাত্র। একজন মুক্তবুদ্ধির মানুষ হিসেবে, এই স্বাধীন বাংলার মানুষ হিসেবে, একজন সৎ উত্তরাধিকার হিসেব, একজন লেখকের এটা একটা দায়।
এই সংকলনে স্থান পেয়েছে আরবী ভাষার কবিতা। মূল: মওলানা শেখ আবদুল হালিম। ভাবানুবাদ: নির্মলেন্দু গুণ। জাপানী ভাষার কবিতাটা মাৎসুঅ শুকুইয়া নিজেই ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। উর্দু ভাষার কবিতা, মূল: নওশাদ নূরী। অনুবাদ: আসাদ চৌধুরী। উর্দু কবিতা, মূল: সৈয়দ আসিফ শাহাকার। অনুবাদ: মোহাম্মদ সাদিক। উর্দু কবিতা, মূল: আহমেদ সালিম। ভাষান্তর: সোহরাব হাসান। ইংরেজি কবিতা, মূল: লোরি এ্যান ওয়ালশ। ভাবানুবাদ: টিপু ভাট্রা। মনিপুরী কবিতা, মূল: এলাংবম নীলকান্ত সিংহ। অনুবাদ: এ.কে. শেরাম। মনিপুরী কবিতা, মূল: এলাংবম নীলকান্ত। অনুবাদ: এ.কে. শেরাম। এ.কে. শেরামের মনিপুরী কবিতাটি নিজেই অনুবাদ করেছেন। বিঞ্চুপ্রিয়া ভাষার কবিতা, মূল: নন্দেশ্বর সিংহ। অনুবাদ: রণজিত সিংহ। ইভিকা পাইশেক্কির বসনিয়া কবিতা। সুইডিশ কবিতা, লিয়াকত হোসেন নিজেই অনুবাদ করেছেন। জার্মানি কবিতা, মূল: গিয়ার্ড লুইপকে। অনুবাদ: সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল।
সম্পাদকের ভূমিকাটি বেশ তথ্য সমৃদ্ধ। কবিতা পড়ার আগে ভূমিকাটা পাঠ করা জরুরি। একটা জাতির শোককে দেশ-কাল ছাপিয়ে মুক্তবুদ্ধির সব মানুষকেই আহত করে, দেশে দেশে কালে কালে কবিদের রচনা থেকে জানা যায়। এ সংকলন থেকে আমরা সেটাই বুঝতে পারি। অলংকরণ মনমূগ্ধকর। শিল্পীদের তালিকাও দীর্ঘ। শিল্পীরা সবাই স্বনামে খ্যাত। এ স্বল্প পরিসরের সংকলন আমাদের পাঠক মনকে পরিতৃপ্ত করে না। করতে পারে না। এটি একটি আধা-খেচড়া সংকলন। ভবিষ্যতে বিশাল পরিব্যাপ্তি নিয়ে একটা সমৃদ্ধ সংকলন আমরা আশা করতে পারি। প্রতীক্ষায় থাকবো।
বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা। সম্পাদনা: সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। প্রচ্ছদ: কাইয়ুম চৌধুরী। অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী. হাশেম খান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, রফিকুন নবী, সৈয়দ এনায়েত হোসেন, মামুন কায়সার, জালাল আহমেদ, নাজিব তারেক। প্রকাশক: স্বরব্যঞ্জন। মূল্য: ৫০ টাকা।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন