somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

পুতুল নাচের পুতুল

২৫ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চাঁদের আলোয় আজ ভেসে যাচ্ছে পৃথিবী এমন অদ্ভুত সময়ে যদি কাউকে ছেড়ে যেতে হয় এই সুন্দর ভুবন কেমন লাগে, কেমন লাগে তার ? বড় জানতে ইচ্ছা করে...
আজ থেকে ঠিক দশ দিন আগে এই লেখাটা শুরু করে ছিলাম। অনেক স্মৃত্মির ভীড়ে হারাতে হারাতে লেখাটা শেষ হলোনা । এরমাঝে আমার র্দূঘটনা ঘটে গেলো নানান কিছুর ঝামেলায় আর লেখাটায় হাত দেয় হয়নি আজ সন্ধ্যায় তাকে আবারো একা করে সে চলে গেলো...
প্রিয় বন্ধুর স্বামী চলে গেলো অপূর্ব জোছনা ভরারাতে ...শান্তিপাক তাঁর আত্মা এই প্রার্থনা

প্রায় ভাবি কেন এই অনুক্ষণ ছুটে চলা উদাস্ত পরিশ্রম। স্বপ্ন সুন্দরের জাল বুনা। রূপালী মরিচীকার মায়া পেরিয়ে ক'জন ধরতে পারে সোনার হরিণ। আকাশে উড়াল দিবে পাখি যে কোন মূহুর্তে যার কোন নিশ্চয়তা নেই কেউ জানেনা সীমারেখা। অথচ চিরদিনের বাঞ্ছা বুকে ধারণ করে ছোটায় রেসের ঘোড়া।
কালরাতে ফেসবুকের পাতা খুলে অনেক মন খারাপ হলো অদৃশ্য ভাবনার সূতায় বাঁধা পরছি বারবার। আশার আলোটুকু যখন কারো চোখে থেমে যায় কেমন লাগে তার? আমরা সবাই জানি এই শেষ পরিনতির কথা তবু কীসের এত আশা বুকে ছুটে বেড়াই?
হয়তো আপন মনে একটা সীমারেখা টেনে নেই হয়তো ভাবি তখন আর কিছু করার থাকবে না তখন নতুন যাত্রার কাল গুনবো স্বপ্ন দেখব।

"মেমসাব আজ দেড়মাস হাসপাতালে তোমার পার্থদার অবস্থা ভালোনা" এ'কটি কথা আমাকে দারুণ ভাবে খোঁচায় । অসহায় পুতুল নাচের পুতুল হয়ে থাকি। ভাষা হারায় মুখে, অন্তরে ঝরে জল কিছু তো বদলাতে পারি না জানি শেষ পরিণতি। কী বলব?
কেন এমন হয় আর কটাদিন কী বেশী দেয়া যেতো না তাদের জীবনটা উপভোগ করার। ভালোবাসায় এক হয়ে আনন্দে হাত ধরে থাকার? শুরু থেকে এক টানাপুরেণেই তো কাটল সময়। যখন স্থিত হয়ে বসার সময় হলো চোখ মেলে দুজনে দুজনাকে দেখার সময় হলো তখনই কেন অন্য জীবন শুরু হয়ে গেলো?
কে যাবে ক্যান্টনমেন্টের দিকে.... যাবে... যাবে একসাথে শেয়ারে? হাঁকটা ভীড়ের ভীতর থেকে আসছিল। ছোট্টখাট দেহ চোখে পড়ছিল না কিন্তু শব্দ ঠিক কর্ণকুহরে। খুঁজে খুঁজে কাছে যেয়ে বললাম, আমি যাবো। সেই থেকে এক সাথে যাত্রা শুরু।
আমার বন্ধু যাকে চিনি সেই কলেজের জীবন থেকে। কত জল্পনা কল্পনার ডানা উড়িয়ে দিতাম দুজনে মিলে। ভাবনায় চিন্তায় মিলেমিশে একাকার হয়ে কাটিয়েছি কত সময়। শূধু বদরুন্নেসা থেকে কন্টেনমেন্ট না আমারা ঘুরতে লাগলাম ঢাকা শহর, ওর বাড়ি পূজায় আমার বাড়ি ঈদে আর কল্পনায় চলে যেতাম দেশ পাড়ি দিয়ে বিদেশে। আমরা দুজনে খুব ভাবতাম একদিন দুজনে এক সাথে কলকাতা যাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অর্নাসের আগেই বিয়ে হলো তার । যাকে মনে মনে পছন্দ ছিল অনেক অথচ বলা হয়নি কখনো তারই আগ্রহ দেখে রাজী হয়ে গেলো। সদ্য পাস করা ডাক্তার আলজেরীয়ায় পোস্টিং তখন। বিয়ের পরে সেও চলে গেলো স্বামীর সাথে অজানা দেশে। অজানা ভাষা অচেনা মানুষ শিল্প সংস্কৃতির বিস্তর ব্যাবধান। ব্যাস্ত স্বামী সারাদিন কাজে আর একা একা উদাস আকাশ দেখে দূর সবুজদেশে প্রিয়জনের কথা ভাবা। ভালোবাসার জীবনের মাঝে কোথায় যেন ফাঁকা। ডাক্তার স্বামীর চোখ এড়াল না নতুন বৌ এর একাকীত্ব। বলল, তুমি চলে যাওয় দেশে পরীক্ষাটা দাও নিশ্চিন্তে আমিও দেশে ফিরে আসার ব্যবস্তা করে ফেলি এর মধ্যে। ফিরে এসে পড়ালেখা ব্যাস্ততা প্রিয় জনের মাঝে আবার সেই উদাসী বাঁশি বুকের মাঝে কষ্টের কামড়। প্রতিদিন আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ফিরে আসা হচ্ছিল না একদিন পণ করে বসল যতদিন তুমি আসবে না এই আমি শাড়ি উল্টো করে পরব। ডানে আঁচল ফেলে শুরু হলো শাড়ি পরা। অবাক চোখে দেখে দেখে এক সময় অনেকেই জেনে গেলো মেয়েটির গোপণ পণের কথা। ভালোবাসার অপেক্ষার কথা।
ফিরে এলো ভালোবাসা ঘুরে গেলো শাড়ী। সুখের স্থায়ীত্ব হাতে গোনা সময়। একে একে তিন ছেলে তাদের মানুষ করতে, নতুন করে গুছিয়ে বসতে বেশ খানিকটা সময় তো গেলো। বাড়িঘর বানিয়ে সাজিয়ে বসার আগেই ছেলেদের ভর্তি করা হলো নৈনিতাল। দুজনের শরীরের একটা অংশ যেন চলে গেলো ওপারে। সে অংশের পরিচর্যা করে তাদের শুভ সুন্দরের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতে মাকে ঠেলে দেয় হলো ওদের কাছে। ইন্ডিয়াতে মা বাংলাদেশে বাবা মাঝে মাঝে আসা যাওয়া। এভাবেই কেটে গেলো জীবনের স্বর্নযুগ।
স্কুল শেষে ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছালে হঠাৎ খুলে গেলো আমেরিকায় আসার দরজা। একটা বছর এসে কিছুই চেনা জানার আগে ফিরে যেতে হলো ফেলে আসা ব্যবসা বানিজ্য গুছিয়ে রেখে আসতে। ফিরে এসে নতুন দেশে নতুন করে সুখের সন্ধানে নেমে পড়া। দুই জায়গায় বাড়ি আবার শুরু হলো সুখের টানাটানি। নিউ ইয়র্কে আসার পর আবার নতুন করে সিদ্ধান্ত হলো না সবাই এখানে থাকবে আর পার্থ ফিরে যাবে দেশে মাঝে মধ্যে আসবে।
ছেলেরা বড় হয়েছে আর ক‌টা দিন ছেলেদের পড়ালেখা শেষ হলে তখন শুধু দুজনের সময়। তো বাড়ি যাওয়ার আগে একবার চেকাপ করাতে গিয়ে ধরা পরল তিনখানা এটমবোম শরীরে।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৪৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×